খাগড়াছড়ি: ৮ বছর পর মায়ের কাছে ফিরলো খাগড়াছড়ি জেলা সদরের শালবন এলাকার নুরুল ইসলাম (১৫)। সাত বছর বয়সে সে হারিয়ে যায়।
২০০৮ সালের কথা। কোনোভাবে চলছিল না খাগড়াছড়ির শালবন এলাকার বাসিন্দা সরবত আলীর অভাবী সংসার। নিজে রিকশা চালিয়ে যা পান তা দিয়ে চালাতেন সংসার। তাই তিন সন্তানকে দেন বিভিন্ন দোকানে। এরমধ্যে ৭ বছর বয়সী মেজ ছেলে নুরুল ইসলামকে দেন শহরের পুলিশ লাইন্স গেটের একটি চায়ের দোকানে।
একদিন সেখান থেকে হারিয়ে যায় নুরুল। অনেক খোঁজাখুঁজি করে না পেয়ে ছেলেকে খুঁজে পাওয়ার আশা মা-বাবা ছেড়ে দেন।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, চলতি বছরের জুলাইয়ের শেষ দিকে দিল্লীতে বেশ কয়েকজন শিশুর সঙ্গে নুরুল ইসলামকে উদ্ধার করে ভারতীয় পুলিশ। নুরুল ইসলামের কাছ থেকে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে বাংলাদেশ হাইকমিশনকে জানানো হয়। পরে বাংলাদেশ হাইকমিশনের মাধ্যমেই তাকে ফিরিয়ে আনার উদ্যোগ নেয় প্রশাসন।
শেষে শুক্রবার রাতে যশোরের বেনাপোল সীমান্তের চেকপোস্ট থেকে ছেলেকে বুকে নেয় বাবা-মা। তবে, শিশু বয়সে কিভাবে সে ভারত গিয়েছিলো সে ব্যাপারে স্পষ্ট করে কিছু বলতে না পারলেও পরিবারকে ফিরে পেয়ে খুশি নুরুল ইসলাম। এদিকে, হারিয়ে যাওয়া সন্তানকে ফিরে পেয়ে আনন্দের বন্যা বইছে পরিবারে। নুরুল ইসলামকে ছুটে আসছেন এলাকাবাসীসহ আত্মীয় স্বজন।
নুরুল ইসলামের না ফাতেমা বেগম বাংলানিউজকে বলেন, ছেলেকে ফিরে পেতে অনেক খোঁজাখুঁজি করেছি। অনেক টাকা পয়সা খরচ করেও ব্যর্থ হয়ে ফিরে পাওয়া আশা ছেড়ে দেই। এক পর্যায়ে ছেলে মারা গেছে এমন ধারনা হয়েছিল। কিন্তু আমার বুকের ধন আবার আমার কাছে ফিরে এসেছে। এই জীবনে আমার আর চাওয়ার কিছু নাই।
নুরুল ইসলাম বাংলানিউজকে জানায়, ‘আমি স্বপ্নেও ভাবিনি যে আবার আমি মা-বাবার কাছে ফিরে আসতে পারবো। কিন্তু ফিরে আসতে পেরেছি। আমাকে মা-বাবার কাছে ফিরিয়ে দিতে যারা সহযোগিতা করেছে তাদের ধন্যবাদ।
খাগড়াছড়ির পুলিশ সুপার মো. মজিদ আলী বাংলানিউজকে বলেন, আমরা দিল্লীর বাংলাদেশ হাইকমিশনে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র পাঠানোর পর নানা প্রক্রিয়া অনুসরণ করে নুরুলকে ফেরত আনা হয়েছে।
বাংলাদেশ সময়: ১৮২৫ ঘণ্টা, অক্টোবর ২৪, ২০১৬
পিসি/