ঢাকা, শনিবার, ১১ মাঘ ১৪৩১, ২৫ জানুয়ারি ২০২৫, ২৪ রজব ১৪৪৬

জাতীয়

শেরপুরে বন্যহাতির আবাসস্থল সংরক্ষণের দাবি

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭৫৩ ঘণ্টা, অক্টোবর ২৫, ২০১৬
শেরপুরে বন্যহাতির আবাসস্থল সংরক্ষণের দাবি

শেরপুর: ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তবর্তী জেলা শেরপুরের ঝিনাইগাতী, শ্রীবরদী ও নালিতাবাড়ী উপজেলার বনাঞ্চলে বন্যহাতির আবাস। এই আবাসস্থল সংরক্ষণের দাবিতে শেরপুরে মানববন্ধন হয়েছে।

জনউদ্যোগ নামে একটি নাগরিক সংগঠনের উদ্যোগে ‘হাতি বাঁচাও, মানুষ বাঁচাও’ স্লোগান নিয়ে মঙ্গলবার (২৫ অক্টোবর) দুপুর ১২টা থেকে ১টা পর্যন্ত শেরপুরের কালেক্টরেট চত্বরে এ মানববন্ধন হয়।

মানববন্ধনে একাত্মতা প্রকাশ করে বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার শতাধিক মানুষ ছাড়াও সোশ্যাল ডেভলপমেন্ট অর্গানাইজেশন (এসডিও), উদীচী, ইনস্টিটিউট ফর এনভায়রনমেন্ট অ্যান্ড ডেভলপমেন্ট (আইইডি), হিউম্যান রাইটস ডিফেন্ডারস ফোরাম, শেরপুর ডিবেটিং ক্লাব ও জেলা মহিলা পরিষদ সদস্যরা অংশগ্রহণ করেন।

মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন- সদর উপজেলা পরিষদের মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান শামীম আরা শামীমা, প্রেসক্লাব সভাপতি অ্যাডভোকেট রফিকুল ইসলাম আঁধার, অধ্যাপক শিব শংকর কারুয়া শিবু, মহিলা পরিষদ নেত্রী নাসরিন বেগম ফাতেমা, আঞ্জুমান আরা যুথী, সাংবাদিক সঞ্জিব চন্দ বিল্টু, জেলা আ’লীগের মহিলা বিষয়ক সম্পাদিকা কহিনুর বেগম বিদ্যুৎ, আঞ্জুমান আলম লিপি, সদর উপজেলা কমিউনিস্ট পার্টির সভাপতি সোলায়মান আহম্মেদ, আওয়ামী লীগ নেতা আমিরুজ্জামান লেবু, জনউদ্যোগের আহ্বায়ক শিক্ষক আবুল কালাম আজাদ, মানবাধিকার কর্মী শামীম হোসেন, কার্টুনিস্ট সাইফুল ইসলাম শাহীন, উদীচী সভাপতি তপন সারোয়ার, ডিবেটিং ক্লাবের শুভংকর সাহা প্রমুখ।

এসময় বক্তারা বলেন, শেরপুর সীমান্তে সম্প্রতি হাতি ও মানুষের মধ্যে দ্বন্দ্ব প্রকট আকার ধারণ করেছে। বনভূমি দখল করে পাহাড়ে মানববসতি স্থাপন, বন ধ্বংস হওয়ায় বনে হাতির খাবার ও বিচরণস্থল নষ্ট হয়েছে। এতে বন্যহাতির দল প্রায়ই পাহাড় থেকে লোকালয়ে নেমে আসছে। হাতি তাড়াতে সাধারণ মানুষও আগ্রাসী আচরণ করছে। এতে বন্যহাতির আক্রমণে একদিকে মানুষের জান-মালের ক্ষয়ক্ষতি যেমন হচ্ছে; তেমনি মানুষের পাতা ফাঁদে বন্যহাতিও মারা যাচ্ছে। মানুষের জান-মাল এবং বন্যহাতি রক্ষায় সরকারকে দ্রুত কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে।

মানববন্ধন শেষে জনউদ্যোগ শেরপুর জেলা কমিটির পক্ষ থেকে জেলা প্রশাসক বরাবর পাহাড়ি জনপদে হাতি-মানুষের দ্বন্দ্ব নিরসন ও বন্যহাতির আবাসস্থল সংরক্ষণসহ চার দফা দাবি সম্বলিত স্মারকলিপি দেওয়া হয়। অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মো. জিয়াউল ইসলাম স্মারকলিপিটি গ্রহণ করেন।

স্মারকলিপিতে লোকালয়ে মানুষের জান-মালের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা, বনভূমি দখলকারীদের অবিলম্বে উচ্ছেদ করা ও যেসব বনাঞ্চলে হাতি চলাচল করে সেখানে বসবাসকারীদের বনের বাইরে অন্য কোথাও পুনর্বাসন করার দাবি জানানো হয়।

একই সঙ্গে শেরপুরের বনাঞ্চলে বন্যহাতির জন্য অভয়াশ্রম তৈরি, সংরক্ষিত বনভূমিতে প্রাকৃতিক বন বেড়ে ওঠার সুযোগ সৃষ্টি এবং হাতিসহ বনের বিভিন্ন প্রাণীর প্রতি সদয় আচরণ করতে জনসচেতনা বাড়ানোর দাবি জানানো হয়।
 
স্থানীয়রা জানান, বিগত দেড় মাসে বন্যহাতির আক্রমণে শেরপুরের সীমান্তবর্তী জনপদে ১১ জনের মৃত্যু হয়েছে। এসময় বৈদ্যুতিক ফাঁদে, গুলিবিদ্ধ হয়ে বা ধারালো অস্ত্রের আঘাতে মারা গেছে ছয়টি বন্যহাতি।

বাংলাদেশ সময়: ১৭৫০ ঘণ্টা, অক্টোবর ২৫, ২০১৬
বিএসকে/এসআই

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।