ঢাকা, শনিবার, ১০ মাঘ ১৪৩১, ২৫ জানুয়ারি ২০২৫, ২৪ রজব ১৪৪৬

জাতীয়

রূপসী বাংলা সংস্কারে বিলম্ব, জরিমানা হচ্ছে ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানের

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২৩৫৮ ঘণ্টা, অক্টোবর ২৫, ২০১৬
রূপসী বাংলা সংস্কারে বিলম্ব, জরিমানা হচ্ছে ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানের

ঢাকা: রূপসী বাংলা হোটেলের সংস্কার কাজে বিলম্বের কারণে জরিমানা গুণতে হচ্ছে ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানকে। হোটেলটির সংস্কার কাজের দায়িত্বে রয়েছে ইন্টারকন্টিনেন্টাল গ্রুপ।

সংস্কার কাজের চুক্তি অনুযায়ী চলতি অক্টোবর মাসেই সংস্কার কাজ শেষ হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু নানা অজুহাতে সেটি পিছিয়ে ২০১৭ সালের মার্চে গড়ানো হয়েছে। রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠানের এই বিলম্বের জন্য প্রতিদিন নির্দিষ্ট পরিমাণ অর্থ জরিমানার প্রস্তাব করেছে সংসদীয় কমিটি।

বাংলাদেশ প্রথম পাঁচ তারকা হোটেল বর্তমান রূপসী বাংলা হোটেল দীর্ঘ ৪৬ বছর ধরে দেশি-বিদেশি অতিথিদের অত্যন্ত সুনামের সঙ্গে সেবা দেওয়া হচ্ছে। বাংলাদেশ সার্ভিসেস লিমিটেডের (বিএসএল) মালিকানাধীন হোটেলটি প্রথমে ইন্টারকন্টিনেন্টাল ঢাকা নামে ১৯৬৬ সালে যাত্রা শুরু হয়।

পরবর্তীতে ১৯৮৩ সাল থেকে ২০১১ সাল পর্যন্ত ঢাকা শেরাটন হোটেল এবং ২০১১ সালের মে থেকে ২০১৪ সালের আগস্ট পর্যন্ত রূপসী বাংলা হোটেল নামে হোটেলটি পরিচালিত হয়। পূর্ববর্তী অপারেটর শেরাটন হোটেলের সঙ্গে চুক্তির মেয়াদ শেষে সরকারের অনুমোদন সাপেক্ষে বিএসএল'র সঙ্গে ইন্টারকন্টিনেন্টাল গ্রুপের (আইএইচজি) ২০১২ সালের ১৯ ফেব্রুয়ারি হোটেল পরিচালনার জন্য ৩০ বছর মেয়াদি চুক্তি স্বাক্ষর হয়।

চুক্তি অনুযায়ী হোটেলটির সংস্কার কাজ শেষ হওয়ার পর ইন্টারকন্টিনেন্টাল ঢাকা হিসেবে ব্রান্ডিং করা হবে।

আইএইচজি’র সঙ্গে চুক্তি অনুযায়ী হোটেল সংস্কারের উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়। চুক্তি অনুযায়ী হোটেল সংস্কার কাজকে তিন ধাপে ভাগ করা হয়। এরমধ্যে প্ল্যানিং পিরিয়ড ধরা হয় ৯ মাস, কনস্ট্রাকশন পিরিয়ড ১৬ মাস এবং ডিফেক্ট লায়াবিলিটি পিরিয়ড ১২ মাস।

কনস্ট্রাকশন পিরিয়ডের কাজ শুরু ২০১৫ সালের মার্চ মাসে। প্রথমে ২০১৬ সালের জানুয়ারি মাসে কাজ শেষ করার কথা থাকলেও সেটা সম্ভব হয়ে ওঠেনি। এরপর অক্টোবর পর্যন্ত সময় নিয়েও ব্যর্থ ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান।

 

সংস্কার প্রকল্পের আওতায় সমস্ত কাজটি ৪টি প্যাকেজে ভাগ করা হয়। প্যাকেজ ভিত্তিক কাজের স্ট্রিপ আউট ‍ডিমোলাইজেশন অ্যান্ড সিভিল স্ট্রাকচারাল ওয়ার্কসের বাস্তব অগ্রগতি ৮৭ শতাংশ। আর্থিক অগ্রগতি ৭৭ দশমিক ৩৭ শতাংশ। এই ৩১ অক্টোবরের মধ্যেই বাকি কাজ শেষ হবে বলে জানানো হয়েছে।

প্ল্যাম্বিং ওয়ার্কস অ্যান্ড স্যানিটি ফিটিং এর কাজ ৫০ ভাগ শেষ হয়েছে। এর আর্থিক অগ্রগতি মাত্র ২০ দশমিক ১৬ শতাংশ। এই কাজের ধীরগতির কারণ হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে, আমদানিকৃত মালামাল গত ২ অক্টোবর বেনাপোল বন্দরে আগুনে পুড়ে গেছে। ফলে, পুনরায় স্যানিটারি মালামালের জন্য এলসি খোলা হচ্ছে। এছাড়া ফায়ার প্রোটেকশনের ৬০ ভাগ, ইলেকট্রিক কাজ ৬০ ভাগ এবং আইটি, ডাটা বিভাগের কাজ ৪৩ ভাগ কাজ শেষ হয়েছে বলে সংসদীয় কমিটিকে জানিয়েছে কর্তৃপক্ষ।

কাজের ধীরগতি নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করে সংসদীয় সদস্য অধ্যাপক আলী আশরাফ বাংলানিউজকে বলেন, ‘কিসের কাজ হয়েছে? এই অক্টোবরে শেষ হওয়ার কথা ছিল, এখন শুনছি আগামি মার্চে শেষ হবে। ’

ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে কি পরিমাণ জরিমানার কথা ভাবছেন প্রশ্ন করা হলে বলেন, ‘জরিমানা তো টাকায় না ডলারে হবে। এটা চকআউট (নির্ধারণ) করা হবে। ’

বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির বৈঠকে মঙ্গলবার (২৫ অক্টোবর) রূপসী বাংলা হোটেলের কাজের অগ্রগতি নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করা হয়। বৈঠকের কার্যপত্র থেকে এসব তথ্য জানা যায়।

এদিকে, সংসদীয় সংসদ সচিবালয় থেকে পাঠানো বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয় রূপসী বাংলা হোটেলের সংস্কার কাজে চুক্তিপত্র অনুযায়ী যেসব ঠিকাদার কাজ করতে পারে নাই। তাদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ এবং সময় মতো কাজ সম্পন্ন করতে না পারলে তাদের প্রতিদিনের জন্য নির্দিষ্ট পরিমাণ টাকা জরিমানা করার বিষয়ে মন্ত্রণালয়কে সুপারিশ করে কমিটি।

কমিটি সভাপতি কর্নেল (অব.) মুহাম্মদ ফারুক খানের সভাপতিত্বে বৈঠকে কমিটি সদস্য  অধ্যাপক মো. আলী আশরাফ,  তানভীর ইমাম, মো. নজরুল ইসলাম চৌধুরী, মো. আফতাব উদ্দীন সরকার এবং সাবিহা নাহার বেগম অংশগ্রহণ করেন।

বাংলাদেশ সময়: ২৩৪৭ ঘণ্টা, অক্টোবর ২৫, ২০১৬

এসএম/পিসি

 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।