ঢাকা: বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধকে হুবহু উপস্থাপন করে একটি ‘গেমস’ তৈরি করা হয়েছে।
ইতোমধ্যেই গেমসটির প্রথম এপোসাইড তৈরি শেষে তা এখন খেলার জন্য উন্মুক্ত।
৬ বছরে এই গেমে তৈরির পরিকল্পনা করেন নির্মাতা প্রতিষ্ঠান ম্যাসিভস্টার। এর মধ্যে আড়াই বছরে তারা একটি এপোসাইড তৈরি করতে সক্ষম হয়েছেন। ইতোমধ্যেই সরকারের আইসিটি বিভাগ আয়োজিত এবারের ডিজিটাল মেলার একটি স্টলে গেমসটি প্রদর্শন করেছে ম্যাসিভস্টার।
‘ম্যাসিভ যুদ্ধ ৭১’ নামের গেমসটিতে নয় মাসের মুক্তিযুদ্ধের সব ঘটনা অবিকল রাখার চেষ্টা করা হয়েছে। যেখানে যে কজন যেভাবে বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামে অংশ নিয়েছেন যেভাবে প্রতিরোধ গড়েছেন এবং মোকাবেলা করেছেন গেমটিতে ঠিক সেভাবেই তা উপস্থাপন করা হয়েছে।
এ জন্য গল্প, নাটক, সিনেমা, উপন্যাস নির্ভর হননি গেমসটির নির্মাতারা। গেমস তৈরির আগে তাদের ছুটে যেতে হয়েছে বাংলাদেশের বিভিন্ন প্রান্তে। সেখানে গিয়ে সরাসরি মুক্তিযোদ্ধাদের কাছ থেকে শুনেছেন যুদ্ধের কাহিনী আর সম্মুখ সমরের গল্পগুলো। তবে আরও বাস্তব হুবহু ঘটনা সাজাতে জীবিত খেতাবপ্রাপ্ত মুক্তিযোদ্ধাদের কাছ থেকে নির্মাতারা শুনেছেন যুদ্ধের ঘটনাগুলো।
তারা মোট ১৮০ জন মুক্তিযোদ্ধার গল্প নিয়ে এসেছেন ‘ম্যাসিভ যুদ্ধ ৭১’ গেমসে। মুক্তিযোদ্ধা ও খেতাবপ্রাপ্ত মুক্তিযোদ্ধাদের কাছ থেকে শুনে তারপর এ নিয়ে গবেষণা করে গেমসটি তৈরি করা হয়েছে।
বাংলানিউজকে এসব জানাচ্ছিলেন গেমসটির নির্মাতা প্রতিষ্ঠান ম্যাসিভস্টারের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মাহাবুব আলম।
তিনি বলেন, ম্যাসিভ যুদ্ধ ৭১ এর পুরো গল্পই ইতিহাস ভিত্তিক যার নায়কেরা সকলেই মুক্তিযুদ্ধের নায়ক। বিভিন্ন গল্প উপন্যাস ও সিনেমায় যেভাবে মুক্তিযুদ্ধকে তুলে ধরা হয়েছে গেমসটিতে তার চেয়ে বেশি বাস্তব এবং ঘটনাকে মুক্তিযুদ্ধের সময়কার মানুষ প্রকৃতি ও যুদ্ধের মতো করে সাজানো হয়েছে। ’
এর উদাহরণ দিয়ে মাহাবুব আলম বলেন, ‘যখন ২৫ মার্চের কালো রাতে বঙ্গবন্ধুকে তুলে নিয়ে যাওয়া হয় তখন কেমন ছিলে ওই বাড়ি। কয়টা ঘর ছিলো সেই বাড়িতে। প্রত্যেকটি জিনিস হুবহু রাখা হয়েছে। এমনকি বাড়িতে কয়টা গাছ আছে সেটাও গুণে গুণে আমার গেমসে দেখিয়েছি। এরপর বঙ্গবন্ধুকে কিভাবে নিয়ে গেলো। এ সময় কে কি বলছে? কয় জন লোক নিয়ে গেলো-তার মানে একবারে পুরো ব্যাপার যেভাবে হয়েছে সেইভাবেই গেমসে আনা হয়েছে। ’
তিনি জানান, প্রায় এক বছর লেগেছিলো শুধু মুক্তিযুদ্ধের গেমস তৈরির সিদ্ধান্ত নিতে। এ সময় আমরা দেখেছি, সব ঘটনা বর্ণনা করতে গেলে গেমসটি ছোট আকারে হয়ে যাবে। পুরো ঘটনা গেমসে আনতে গেলে ২১টি এপোসাইড করতে হবে। যা শেষ করতে ৬ বছরের মতো লাগবে। এখন পর্যন্ত আড়াই বছরে প্রাথমিক ফ্রেম ওয়ার্ক ও প্রথম এপিসোড তৈরি হয়েছে। কিছুদিনের মধ্যে এটি উদ্বোধন করবো ।
ম্যাসিভ যুদ্ধ ৭১ গেমস দিয়েই বাংলাদেশে গেমস শিল্প বিকাশ ঘটাতে চান মাহাবুব আলম। এমন স্বপ্ন নিয়ে আরও বললেন, দেশে গেমসের জন্য অসংখ্য রিসোর্স আছে। আর এ বিপ্লব শুরু হবে ‘ম্যাসিভ যুদ্ধ ৭১’ গেমস দিয়ে। বিদেশেও গেমসটি রফতানি করবে বাংলাদেশ।
তিনি আরও বলেন, বিশ্বে ১১০ বিলিয়ন ডলারের গেমসের মার্কেট আছে। আরও সাড়ে ৮শ বিলিয়ন ডলার অ্যাডভার্টাইজিং মার্কেট গেমসে আসতে পারে।
ম্যাসিভ স্টর বাংলাদেশে বাণিজ্যিক গেমস নির্মাণ শুরু করেছিলো ২০১৩ সালে। তাদের প্রথম গেমস হাতিরঝিল ড্রিম বিগিন্স।
ম্যাসিভ যুদ্ধ ৭১ পাওয়া যাবে www.war71.com or www.juddho71.com এই ওয়েবসাইটে। আর সম্পূর্ণ গেমসটি ডাউনলোড করা যাবে অফিসিয়ালি গেমসটি উদ্বোধনের পর।
বাংলাদেশ সময়: ০১২৮ ঘণ্টা, অক্টোবর ২৬, ২০১৬
এসএ/আরআই