ঢাকা, শনিবার, ১০ মাঘ ১৪৩১, ২৫ জানুয়ারি ২০২৫, ২৪ রজব ১৪৪৬

জাতীয়

পারিবারিক কলহের জেরে দুই শিশু সন্তানকে হত্যা

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১২৫১ ঘণ্টা, অক্টোবর ২৬, ২০১৬
পারিবারিক কলহের জেরে দুই শিশু সন্তানকে হত্যা ছবি: আবু বকর-বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

সিলেট: স্ত্রীর সঙ্গে পারিবারিক কলহের জের ধরে দুই শিশুকে ঠাণ্ডা মাথায় হত্যা করেছেন বাবা ছাতির আলী। আটকের পর জিজ্ঞাসাবাদে তার কাছ থেকে এমন তথ্য জানতে পেরেছে পুলিশ।

বুধবার (২৬ অক্টোবর) সকাল সাড়ে ৮টায় সিলেটের ওসমানী নগরের চিন্তামণি গ্রামের একটি পরিত্যক্ত বাড়ি থেকে স্থানীয়দের সহায়তায় তাকে আটক করা হয়।

ওসমানী নগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল আউয়াল চৌধুরী বিষয়টি বাংলানিউজকে জানান।

এরপর সকাল সাড়ে ১০টায় পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে এ বিষয়ে প্রেস ব্রিফিংয়ে পুলিশ সুপার (এসপি) মো. মনিরুজ্জামান বলেন, দুই শিশু সন্তানকে ধারালো এক ধরনের চুকা লাঠি দিয়ে খুঁচিয়ে ও মাথায় আঘাত করেন ছাতির আলী। তাদের ঠাণ্ডা মাথায় খুন করে স্থানীয় কালীমন্দিরে পালান। স্ত্রীর সঙ্গে পরিবারিক কলহের জের ধরেই এ হত্যাকাণ্ড ঘটান তিনি।

খুনের বর্ণনা দিয়ে তিনি বলেন, ঘটনার দিন বেলা ১১টার দিকে দুই ছেলে মামুন (৭) ও রুজেলকে (১১) নিয়ে পাশ্ববর্তী হাওরে মাছ ধরতে যান ছাতির আলী।

দুপুর দেড়টার দিকে বড় ছেলে রুজেলকে দিয়ে কিছু মাছ বাড়িতে পাঠান। এই সময়ের মধ্যে প্রথমে ছোট ছেলে মামুনকে (৭) খুন করেন। আধাঘণ্টা পর রুজেল (১১) ফিরে এসে ছোট ভাইকে খুঁজতে থাকে।

ছাতির আলী বলে এতো খোঁজাখুঁজি করছিস কেনো, বলেই বড় ছেলে রুজেলের মাথায় ছয়টি আঘাত করেন। খুন করার জন্য আগে থেকেই মানসিকভাবে প্রস্তুতি নিয়ে যান ছাতির আলী।

এসপি জানান, শিশু মামুনের মাথার পেছনে দু’টি, পিঠের মাঝখানে ও নাভি বরাবর সুচালো ধারালো অস্ত্রের আঘাতের চিহ্ন মিলে। এছাড়া বড় ছেলে রুজেলের মাথায় ছয়টি আঘাত করা হয়। আঘাতে তার মাথা থেঁতলে যায়। খুনের ঘটনায় ব্যবহৃত নারিকেল গাছের তৈরি চুকা লাঠি ও বাঁশের একটি লাঠি জব্দ করেছে পুলিশ।

এ ঘটনায় এখনও মামলা দায়ের হয়নি। নিহতদের মা ও পরিবার-পরিজন মানসিকভাবে বিপর্যস্ত হয়ে পড়ায় মামলা দায়েরে বিলম্ব হচ্ছে। তবে বুধবার বিকেল অথবা রাতে মামলা দায়ের হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে বলে জানান এসপি।  

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন জেলা পুলিশের বিশেষ শাখার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সুজ্ঞান চাকমা ও অতিরিক্ত পুলিশ সুপার হাসমত আলী।

পুলিশ সূত্র জানায়,  স্ত্রীকে প্রায় সময় সন্দেহ করতেন ছাতির আলী। তার মূল উদ্দেশ্য ছিল স্ত্রীকে মেরে ফেলা। গত ২০ দিন ধরে স্ত্রীর হাতের রান্নাও খেতেন না তিনি। স্ত্রীকে মারতে না পেরে সন্তানদের হত্যা করেন তিনি।

স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি গ্রহণের জন্য বৃহস্পতিবার (২৭ অক্টোবর) তাকে আদালতে হাজির করা হতে পারে বলে জানিয়েছে পুলিশ।

এর আগে সোমবার (২৪ অক্টোবর) রাত ৯টার দিকে ওসমানী নগরের চিন্তামণি গ্রামের একটি হাওর থেকে দুই শিশুর মরদেহ উদ্ধার করা হয়।

এক মেয়ে ও দুই ছেলে সন্তানের জনক ছাতির আলী ওই গ্রামের মৃত আফরোজ আলী ওরফে চিনা মিয়ার ছেলে।

**সিলেটে ২ সন্তান হত্যার ঘটনায় বাবা ছাতির আলী আটক

**সিলেটে খুন হওয়া দুই সহোদরের দাফন সম্পন্ন

**সিলেটে বাবার হাতে খুন দুই শিশুর ময়না তদন্ত চলছে

**সিলেটে বিল থেকে ২ ভাইয়ের মরদেহ উদ্ধার

বাংলাদেশ সময়: ১২৪৯ ঘণ্টা, অক্টোবর ২৬, ২০১৬

এনইউ/এএটি/এএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।