ঢাকা, শুক্রবার, ১০ মাঘ ১৪৩১, ২৪ জানুয়ারি ২০২৫, ২৩ রজব ১৪৪৬

জাতীয়

নির্যাতিত ৫ বছরের শিশুটির দায়িত্ব নিলেন গণশিক্ষামন্ত্রী

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫৫৭ ঘণ্টা, অক্টোবর ২৭, ২০১৬
নির্যাতিত ৫ বছরের শিশুটির দায়িত্ব নিলেন গণশিক্ষামন্ত্রী

ঢাকা: প্রাথমিক ও গণশিক্ষামন্ত্রী মোস্তাফিজুর রহমান ফিজার দিনাজপুরের পার্বতীপুরে ধর্ষণসহ পাশবিক নির্যাতনের শিকার পাঁচ বছরের শিশুটির দায়িত্ব নিয়েছেন।

 

প্রধানমন্ত্রীর পক্ষ থেকে শিশুটির চিকিৎসা সহায়তার পর শিশুটির চিকিৎসাসহ আনুষঙ্গিক ব্যয় বহন করার কথা জানিয়েছেন মোস্তাফিজুর রহমান।


 
মোস্তাফিজুর রহমানের নির্বাচনী এলাকা পার্বতীপুরের জমিরহাট তকেয়াপাড়া গ্রামে গত ১৮ অক্টোবর ধর্ষণ ও পাশবিক নির্যাতনের শিকার শিশুটি বর্তমানে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ওয়ান-স্টপ ক্রাইসিস সেন্টারে (ওসিসি) চিকিৎসাধীন।
 
বিদেশে অবস্থানরত মন্ত্রীর পক্ষে বৃহস্পতিবার (২৭ অক্টোবর) দুপুরে তার একান্ত সচিব (পিএস) শেখ আতাহার হোসেন, এপিএস মির্জা আশফাক হোসেনসহ কর্মকর্তারা হাসপাতালে গিয়ে শিশুটির চিকিৎসার খোঁজ-খবর নেন।
 
শেখ আতাহার হোসেন সচিবালয়ে বাংলানিউজকে বলেন, সরকার শিশুটির দায়িত্ব নিয়েছে। এরপরও মন্ত্রীর পক্ষে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে শিশুটির সুচিকিৎসা নিশ্চিত করতে বলা হয়েছে। এ ব্যাপারে যেকোনো ধরনের আর্থিক ব্যয় বহন করবেন মন্ত্রী।
 
মন্ত্রী জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিতের জন্য সংশ্লিষ্টদের প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দিয়েছেন বলেও জানান পিএস আতাহার।
 
হাসপাতালের ওসিসি’র তত্ত্বাবধায়ক ডা. বিলকিস বেগম জানান, শিশুটির যৌনাঙ্গ ধারালো কিছু দিয়ে কাটা হয়েছে। কাটা জায়গায় ইনফেকশন দেখা দিয়েছে। শিশুটির অবস্থা ভালো না। খাওয়া-দাওয়া  স্বাভাবিকভাবে চললেও এখনো ভয়ে কান্নাকাটি করছে।
 
এদিকে, শিশুটির উন্নত চিকিৎসায় হাসপাতালের ৯টি বিভাগের প্রধানদের নিয়ে গঠিত মেডিকেল বোর্ড কাজ শুরু করেছে।
 
ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোহাম্মদ মিজানুর রহমান সাংবাদিকদের বলেন, ‘শিশুটির জীবনহানির শঙ্কা না থাকলেও শরীরের বিভিন্ন জায়গায় গভীর ক্ষত রয়েছে। তাকে সব ধরনের চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে’।
 
শিশুটির পুরোপুরি সুস্থ হতে দুই মাসের মতো সময় লাগতে পারে বলেও জানান ঢামেক হাসপাতালের পরিচালক।
 
গত ১৮ অক্টোবর সকালে বাড়ির বাইরে খেলতে যাওয়ার পর শিশুটিকে পাওয়া যাচ্ছিল না। অনেক খোঁজাখুঁজির পর রাত ১১টার দিকে পার্বতীপুর মডেল থানায় সাধারণ ডায়েরি করেন শিশুটির বাবা। পরদিন ১৯ অক্টোবর ভোর ৬টায় শিশুটিকে বাড়ির পাশের হলুদ ক্ষেত থেকে অচেতন অবস্থায় উদ্ধার করা হয়। তাকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় রংপুর মেডিকেল কলেজ (রমেক) হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।

গত মঙ্গলবার (২৫ অক্টোবর)  ভোরে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢামেক হাসপাতালে  ভর্তি করা হয় শিশুটিকে। অবস্থা সংকটাপন্ন হওয়ায় ওসিসি সেন্টারে রাখা হয়েছে তাকে।

এ ঘটনায় নির্যাতিতা শিশুর বাবা গত ২০ অক্টোবর প্রতিবেশী মাদকসেবি সাইফুল ইসলাম (৪১) ও আফজাল হোসেন কবিরাজকে (৪৭) আসামি করে পার্বতীপুর মডেল থানায় ধর্ষণ মামলা দায়ের করেন। ধর্ষক সাইফুল ইসলামকে আটক করেছে পুলিশ।

শিশুটির সঙ্গে থাকা  স্বজনেরা অভিযোগ করেছেন, সাইফুলই বেলা ১২টায় শিশুটিকে হলুদ ক্ষেতটিতে নিয়ে যান। পরে আফজাল হোসেন কবিরাজকে নিয়ে যৌনাঙ্গ ধারালো অস্ত্র দিয়ে কেটে  ধর্ষণ করেন। শিশুটির বুকে কামড় এবং গলাসহ শরীরে বিভিন্ন স্থানে ধারালো অস্ত্রের আঘাত করেন। নির্যাতনের পাশাপাশি শিশুটির শরীরে সিগারেটের ছ্যাঁকাও দেওয়া হয়।

 বাংলাদেশ সময়: ১৫৪৫ ঘণ্টা, অক্টোবর ২৭, ২০১৬
এমআইএইচ/এএসআর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।