খুলনা: বিগত বছরগুলোর ধারাবাহিকতায় এবারও খুলনায় অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে ঐতিহ্যবাহী নৌকাবাইচ।
শনিবার (২৯ অক্টোবর) দুপুর ২টায় রূপসা নদীর ১নং কাস্টম ঘাটে অতিথিরা ফেস্টুন ও বেলুন উড়িয়ে এর উদ্বোধন করা হবে।
খুলনার নগর সামাজিক ও সাংস্কৃতিক কেন্দ্রের (এনএসএসকে) আয়োজনে এবং দেশের শীর্ষস্থানীয় টেলিযোগাযোগ সেবাদাতা প্রতিষ্ঠান গ্রামীণফোনের সহযোগিতায় অনুষ্ঠিত হচ্ছে এই ১১তম বাইচ আসর।
নৌকা বাইচে এবার ছোট-বড় মোট ২৮টি নৌকা অংশ নেবে। এর মধ্যে বড় নৌকা ১৯টি ও ছোট ৯টি।
বৃহস্পতিবার (২৭ অক্টোবর) দুপুরে খুলনা ক্লাবে সংবাদ সম্মেলনে এই তথ্য জানানো হয়। এর আগে মাঝিদের প্রতীকি নৌকা নিয়ে সেখানে এক বাইচ অনুষ্ঠিত হয়।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন- গ্রামীণফোনের হেড অব এক্সটারনাল কমিউনিকেশন্স সৈয়দ তালাত কামাল, গ্রামীণফোনের হেড অব মার্কেটিং খুলনা সার্কেল পার্থ প্রতীম ভট্টাচার্য্য, নগর সামাজিক ও সাংস্কৃতিক কেন্দ্র’র সভাপতি মোল্লা মারুফ রশীদ, সাধারণ সম্পাদক মো. মনিরুজ্জামান রহিম এবং প্রধান উপদেষ্টা শেখ আশরাফ-উজ-জামান।
সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, বর্ণাঢ্য আয়োজনের মাধ্যমে ওই দিন সকাল ১০টায় শোভাযাত্রা দিয়ে শুরু হবে দিনব্যাপি এই উৎসবের। দুপুর ২টায় রূপসা নদীর ১ নং কাস্টম ঘাটে অতিথিরা ফেস্টুন ও বেলুন উড়িয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে এর উদ্বোধন করবেন। দুপুর ২টা ৩০ মিনিটে ১নং কাস্টম ঘাটে নৌকা বাইচ প্রতিযোগিতা শুরু হবে। ১নং কাস্টম ঘাট থেকে প্রতিযোগিতা শুরু হয়ে খানজাহান আলী সেতুতে (রূপসা সেতু) গিয়ে শেষ হবে।
এবার প্রতিযোগিতায় কয়রা, পাইকগাছা,তেরখাদা, কালিয়া, নড়াইল, গোপালগঞ্জ, মাদারীপুর ও ফরিদপুর থেকে মোট ২৮টি বাইচ দল অংশ নেবেন। নৌকার মাপভেদে বাইচকে দুটি গ্রুপে ভাগ করা হয়েছে। এর মধ্যে বড় দল রয়েছে ১৯টি আর ছোট দল রয়েছে নয়টি। বড় দলের প্রথম বিজয়ীরা পাবেন এক লক্ষ টাকা, দ্বিতীয় দল পাবেন ৬০ হাজার টাকা এবং তৃতীয় দল পাবেন ৩০ হাজার টাকা। অন্যদিকে ছোটদলের প্রথম বিজয়ী দল ৫০ হাজার টাকা, দ্বিতীয় দল ৩০ হাজার টাকা এবং তৃতীয় দল পাবেন ২০ হাজার টাকা।
মোল্লা মারুফ রশীদ বলেন, প্রতিযোগিতা উপভোগ করতে খুলনার ১নং কাস্টম ঘাটে লাখ-লাখ মানুষ উপস্থিত থাকবেন। রূপসা নদীর আশেপাশের এলাকা মেতে উঠবে প্রাণের উৎসবে। প্রতিযোগিতার পুরষ্কার বিতরণী অনুষ্ঠান শেষে সন্ধ্যা সাতটায় রূপসা ফেরিঘাটে প্রতিবারের মতো সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান আয়োজন করা হয়েছে। সেই অনুষ্ঠানে থাকছেন জনপ্রিয় শিল্পী কর্নিয়া, ক্ষুদে গানরাজ খুলনার রাতুল ও স্থানীয় শিল্পীরা।
এর পাশাপাশি আয়োজন করা হয়েছে ফটোগ্রাফি প্রতিযোগিতা। আগ্রহীরা ১১তম নৌকা বাইচের প্রতিযোগিতার ছবি ফেসবুকে Grameenphone 11th Khulna Boat Raceইভেন্ট পেজে নৌকা বাইচের দিন সন্ধ্যা সাতটার মধ্যে আপলোড করতে পারবেন। বিজয়ীদের সেদিন সন্ধায় পুরস্কৃত করা হবে।
গ্রামীণফোনের হেড অব মার্কেটিং খুলনা সার্কেল পার্থ প্রতীম ভট্টাচার্য্য বলেন, খুলনা ঐতিহ্য, সংস্কৃতি, শিক্ষা ও অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে অনেক এগিয়ে। নৌকা বাইচ-ই তার একটি অন্যতম উদাহরণ। এতো বড় নৌকা বাইচ বাংলাদেশের আর কোথাও হয় বলে আমার জানা নেই।
গ্রামীণফোনের হেড অব এক্সটারনাল কমিউনিকেশন্স সৈয়দ তালাত কামাল বলেন, বাইচকে সফল করার উদ্দেশ্যে প্রশাসন এবং সর্বস্তরের মানুষের যে অপরিসীম চেষ্টা তা সহজেই অনুমেয়। আমি গ্রামীণফোনের পক্ষ থেকে সকলকে তাদের সহযোগিতার জন্য আন্তরিক ধন্যবাদ জানাই। বিশেষ করে ধন্যবাদ জানাই নগর সামাজিক ও সাংস্কৃতিক কেন্দ্রকে এই আয়োজনে আমাদের সঙ্গে নেয়ার জন্য।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, নৌকা বাইচের দিন শনিবার সকাল ১০টা থেকে ১নং কাস্টম ঘাট, নতুন বাজার লঞ্চ ঘাট ও রূপসা ফেরিঘাটে সকল যাত্রী পারাপার বন্ধ থাকবে। নিরাপত্তা রক্ষার্থে পুরো এলাকায় আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী নিযুক্ত থাকবেন। এছাড়াও বিশেষ প্রয়োজনে মেডিকেল টীম ও ফায়ার সার্ভিস উপস্থিত থাকবেন। রূপসা সেতুতে কোনো গাড়ি পার্ক করা যাবে না। ব্রিজে শুধুমাত্র মহিলা ও শিশুরা অবস্থান করতে পারবেন।
বাংলাদেশ সময়: ১৭০৬ ঘণ্টা, অক্টোবর ২৭, ২০১৬
এমআরএম/বিএস