ঢাকা: শক্তি ও শান্তির প্রতীক শ্যামা দেবীর আগমন উপলক্ষে জেগে রয়েছে রাজধানীর পুরান ঢাকার শাঁখারী বাজার। মণ্ডপে মণ্ডপে চলছে পূজার প্রস্তুতি।
কালী পূজাকে সামনে রেখে শাঁখারী বাজারে শিল্পীরা রাত জেগে প্রতিমা সাজানোর কাজে ব্যস্ত। শনিবার (২৯ অক্টোবর) রাতে শ্যামা বা কালী পূজা ও দীপাবলি উদ্যাপন করা হবে।
শুক্রবার (২৮ অক্টোবর) দিনগত মধ্যরাতে শাঁখারী বাজারে গিয়ে দেখা গেলো, মূল রাস্তা থেকেই বসেছে পণ্য-সামগ্রীর পসরা।
একটু এগিয়ে কালি মন্দিরের কাছে সততা সংসদের আয়োজনে মঞ্চের উপর প্রতিমা সাজাতে ব্যস্ত ঠাকুর নির্মাতা সুকুমার পাল ও তার সঙ্গীরা। কেউ শাড়ি পরাচ্ছেন, কেউবা গহনা পরাচ্ছেন দেবীর শরীরে। রঙিন শাড়িতে চার হাতের দেবী হয়ে উঠছে অপরূপা।
সেখানে কথা হয় স্থানীয় বাসিন্দা শ্যামল সরকারের সঙ্গে। বলেন, পুষ্পাঞ্জলি ও ষোড়শ উপচারে দেবী কালীর পূজার মধ্য দিয়ে অশুভ শক্তিকে পরাজিত করে কল্যাণের শক্তি লাভ করার লক্ষ্যে, সন্ধ্যার পরপরই হিন্দুরা শ্যামাপূজা করার জন্য মণ্ডপে মণ্ডপে সমবেত হবেন। ঢাক-ঢোল, কাঁসর আর উলুধ্বনিতে মুখরিত হবে পূজা মণ্ডপ।
শনিবার অধিবাসের মাধ্যমে শ্যামাপূজার আনুষ্ঠানিকতা শুরু হবে। কার্তিক মাসের অমাবস্যা তিথিতে মোমবাতি জ্বালিয়ে হবে দীপাবলী পালন।
কালীপূজার দিনটিতে ভারতীয় মহাদেশসহ অন্যান্য জায়গায় দীপাবলী উৎসব পালিত হয় বলে জানান শ্যামল।
সনাতন ধর্মাবলম্বীদের দ্বিতীয় বৃহত্তম ধর্মীয় উৎসব শ্যামাপূজা ও দীপাবলী উৎসব। শাস্ত্রমতে, কার্তিক মাসের কৃষ্ণপক্ষের চতুর্দশী তিথিতে দীপান্বিতা পার্বণ শ্রাদ্ধ ও শ্যামাপূজা করা হয়। প্রতি বছরই দুর্গাপূজার আনন্দ-উচ্ছ্বাস মিইয়ে যাওয়ার আগেই দীপাবলী আসে। বিজয়ার ভাসানে পাঁচ দিনের আনন্দ বিদায়ে যে বিয়োগবিধুর অনুভূতিতে আবিষ্ট হয় মন, সেই মন দীপাবলিকে সামনে রেখেই আবার আনন্দের স্বপ্ন দেখে।
শ্যামা দেবী শান্তি, সংহতি ও সম্প্রীতি প্রতিষ্ঠার সংগ্রামের প্রতীক। দুষ্টের দমন আর শিষ্টের লালনের মাধ্যমে বিশ্বব্যাপী ভক্তের জীবনে অবারিত কল্যাণের অঙ্গীকার নিয়ে ধরণীতে আগমন ঘটে দেবী শ্যামার।
শ্যামল জানান, একশো আট পদের খাবার রেঁধে সোমবার শ্যামা দেবীর জন্য উৎসর্গ করা হবে। মঙ্গলবার ভাইফোঁটার দিন বোন দেবে ভাইয়ের কপালে ফোঁটা।
রক্ত জবা পূজা কমিটির অসীম নাগ জানালেন, তারা ময়ূরপঙ্খী গহনার নৌকায় দেবীকে বসাবেন। এজন্য প্রস্তুতি চলছে।
পূজার দিনটিতে প্রতিবারই বিপুল সংখ্যক ভক্তের আগমন ঘটে। আর এজন্য মিঠাই, ছোটদের খেলনা সামগ্রী বিক্রির দোকান বসেছে।
এদিকে, পূজা সুন্দর পরিবেশে উদযাপনের জন্য কোতোয়ালী থানা পুলিশের একটি দল সেখানে রাতভর নিরাপত্তার দায়িত্ব পালন করছেন।
বাংলাদেশ সময়: ০৫৪০ ঘণ্টা, অক্টোবর ২৯, ২০১৬
এমআইএইচ/এসএনএস