ঢাকা: ভোর হওয়ার পরও খানিকটা সময় গড়িয়েছে বটে। তবে আরো কিছুটা সময় লাগবে সূয্যি মামার দেখা পেতে।
এই সকালেই রাজধানীর গৃহবধুরা মুখে পানির ঝাপটা দিয়ে বারান্দায় এসে দাঁড়িয়েছে। গলি ধরে স্বামীর কর্মস্থলে ছুটে যাওয়ার পানে তাকিয়ে আছে তারা। ভেজা গালে চিক চিক করে উঠছে হেমন্তের আলো।
কার্তিকের মাঝামাঝি এ সময় ছায়ায় দাঁড়ালে শীত শীত লাগে। শরীর একটু গরম করে তুলতে রোদে এলে আরাম বোধ হয়। তবে কিছুক্ষণ পরই রোদের তেজটা ফের ঠেলে দেয় ছায়ার আরামে।
শীতের পদধ্বনি দিয়ে যাচ্ছে হেমন্ত। শেষ রাতে কাথা টেনে নিতে হচ্ছে। ঘাসের ওপর শিশির বিন্দু জমে উঠছে। রোদের আলো প্রতিবিম্বিত হয়ে তৈরি করছে মুক্তো। এমনই হেমন্তকে অনুভব করে নিজের ভাষায় কবি সুফিয়া কামাল বলেছেন,
'সবুজ পাতার খামের ভেতর
হলুদ গাঁদা চিঠি লেখে
কোন্ পাথারের ওপার থেকে
আনল ডেকে হেমন্তকে?'
এই রাজধানীর আকাশ গাড়ির কার্বনে ঢেকে যাওয়ার আগ পর্যন্ত হেমন্তের থাকে। তখন মেঘের শীতলতাকে বইয়ে বেড়ায় শহুরে রোদ। নাইবা থাক মটরশুঁটি আর খেজুরের রস বা পিঠা, সকালে গায়ে মিস্টি রোদের আঁচড় তো অনুভব করা যায়।
নগরীর পার্কগুলোতে যারা প্রাতঃভ্রমণে বের হন, তারাই দেখতে পান শিশির ভেজা ঘাস। হয়তো পায়ের জুতোর জন্যে অনুভব করা যায় না। তবে খালি পায়ে শিশিরের ছোঁয়া যে মনকে ধুয়ে দিয়ে যেতে পারে, শরীর শিরশির করে উঠতে পারে, সেটা কিন্তু বলাই যায়।
এই শহরের আকাশ এখন কবির ক্যানভাস। সেখানে খেলা করছে মেঘের দল। শরতের তুলার মতো মেঘের ভেলা যেমন ভেসে যাচ্ছে, তেমনি শীতের ডাকও দিয়ে যাচ্ছে।
উচুঁ দালানের ছাদ কেটে আসা সূর্যের আলো যদি মুখের ওপর এসে পড়ে, সেখানে চোখ জ্বালা তো করবেই না, বরং বুলিয়ে যাবে শান্তির পরশ। পরিবহনগুলোর পোঁ পোঁ শব্দও খুব বেশি আয়েসে চিঁড় কাটবে না, যদি গাড়ির জানালা দিয়ে একটু রোদ এসে শরীরে পড়ে।
বাংলাদেশ সময়: ১০৪৪ ঘণ্টা, অক্টোবর ৩০, ২০১৬
এমএন/জেডএম