ঢাকা: মরক্কোর মারাকাসে অনুষ্ঠিতব্য এবারের বিশ্ব জলবায়ু সম্মেলন ‘কপ-২২’ এ পানি ব্যবস্থাপনা ও কৃষির ওপর গুরুত্ব দেবে বাংলাদেশ।
আগামী ৭ থেকে ১৮ নভেম্বরের এ সম্মেলনে ‘হাই লিডার অব ওয়াটার’ প্যানেলের নেতৃত্ব দেবে বাংলাদেশ।
এবারের কপকে বলা হচ্ছে ‘ইমপ্লিমেন্টারি কপ’। প্যারিস অ্যাগ্রিমেন্ট বাস্তবায়নের রূপরেখা ঠিক হবে এবারের সম্মেলনে। একইসঙ্গে বৈশ্বিক জলবায়ু পরিবর্তনের অভিঘাত মোকাবেলায় তহবিল গঠনের বিষয়টিও চূড়ান্ত করা হবে।
পরিবেশ ও বন মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব নুরুল করিম বাংলানিউজকে বলেন, ‘এবারের কপে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে আমাদের পানি ব্যবস্থাপনার ওপর গুরুত্ব দিতে বলা হয়েছে। একই সঙ্গে গুরুত্বের কথা বলা হয়েছে জলবায়ু মোকাবেলায় কৃষি ব্যবস্থাপনার ওপরও’।
তিনি বলেন, গত ১৭ অক্টোবর প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে ‘কপ-২২’ নিয়ে বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর কর্যালয়ের সচিব সুরাইয়া বেগমের সভাপতিত্বে বৈঠকে বাংলাদেশের পক্ষ থেকে বিশ্বনেতাদের মধ্যে পানি নিয়ে বিশেষ সতর্কতা জারির সিদ্ধান্ত হয়েছে।
নুরুল করিম বলেন, বাংলাদেশ মনে করে, জলবায়ু পরিবর্তনে পানির ভূমিকাই সবচেয়ে বড়। বাংলাদেশের মতো দেশগুলোতে জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে একদিকে ভূগর্ভের পানির স্তর কমে যাচ্ছে, অন্যদিকে সমুদ্রে পানির উচ্চতা বাড়ছে। দেখা দিচ্ছে লবণাক্ততা ও জলাবদ্ধতার মতো দুর্যোগও। তাই মারাকাস সম্মেলনে পানি ব্যবস্থাপনাকেই বেশি গুরুত্ব দেবে বাংলাদেশ।
তিনি বলেন, ‘আমরা প্যারিস অ্যাগ্রিমেন্টে স্বাক্ষর করেছি। গত ২১ সেপ্টেম্বর আমরা তা রেক্টিফাই করে জাতিসংঘ মহাসচিবের কাছে হস্তান্তরও করেছি। প্যারিস অ্যাগ্রিমেন্টে বলা ছিল- এটি বাস্তবায়নে কমপক্ষে ৫৫টি দেশের মতামত লাগবে। গত ৫ অক্টোবরের মধ্যেই ৫৫টির বেশি দেশ প্যারিস অ্যাগ্রিমেন্ট বাস্তবায়নে মতামত দিয়েছে। আগামী ০৪ নভেম্বর থেকে তা কার্যকর হবে’।
তিনি বলেন, ‘সেখানে বাংলাদেশও একটি কর্মপরিকল্পনা পেশ করবে। আমরা সে লক্ষ্যে বন ও পরিবেশ মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব নুরুল কাদিরকে প্রধান করে কমিটি গঠন করেছি। এ কমিটি আমাদের বিশেষজ্ঞদের এবারের কপে বাংলাদেশের অবস্থান তুলে ধরতে ‘পজিশন পেপার’ তৈরি করার দায়িত্ব দিয়েছে। বর্তমানে কমিটি সেই কাজ করছে’।
‘কপ-২২’এর ‘পজিশন পেপার’ তৈরির দায়িত্ব পাওয়া নুরুল কাদির বলেন, ‘আমরা ‘প্যারিস অ্যাগ্রিমেন্ট’ বাস্তবায়নের প্রক্রিয়া ও অর্থায়নের বিষয়ে আমাদের অবস্থান তুলে ধরবো। বাংলাদেশ এজন্য বিশেষ প্রস্তুতি নিচ্ছে। একই সঙ্গে বৈশ্বিক তাপমাত্রা বাড়ার সীমা আমরা আমাদের ঘোষিত দাবি ‘দেড় ডিগ্রি’ তেই স্থির থাকবো। জলবায়ু অভিঘাত মোকাবেলায় ধনী দেশগুলোর বাংলাদেশের মতো ক্ষতিগ্রস্ত দেশগুলোকে ক্ষতিপূরণ দিতে হবে এবং বাংলাদেশ তা ঋণ হিসেবে নেবে না- তাও বিশ্বনেতাদের স্পষ্ট করে বলা হবে’।
বাংলাদেশ সময়: ১৯১৫ ঘণ্টা, অক্টোবর ৩১, ২০১৬
আরএম/এএসআর