ঢাকা: সম্পদের তথ্য গোপনের দায়ে কক্সবাজার-৪ আসনের সংসদ সদস্য আবদুর রহমান বদির ৩ বছরের কারাদণ্ড হওয়ার পর তার পদ থাকবে কি-না- এ নিয়ে আলোচনা-সমালোচনা শুরু হয়েছে।
আইনজ্ঞদের কারো কারো মতে, দণ্ডিত হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে তিনি সংসদ সদস্য থেকে বাদ পড়ে গেছেন।
বুধবার (০২ নভেম্বর) সম্পদের তথ্য গোপনের দায়ে এমপি বদিকে ৩ বছরের কারাদণ্ডাদেশ দিয়েছেন বিচারিক আদালত। একই সঙ্গে ১০ লাখ টাকা জরিমানা, অনাদায়ে আরও তিনমাসের কারাদণ্ডাদেশ দেওয়া হয়।
সংসদ সদস্য পদের বিষয়ে সংবিধানের ৬৭ (১) এ বলা হয়েছে, ‘কোনো সংসদ সদস্যের আসন শূন্য হইবে, যদি (ঘ) তিনি এই সংবিধানের ৬৬ অনুচ্ছেদের (২) দফার অধীন অযোগ্য হইয়া যান’।
৬৬ অনুচ্ছেদে (২) (ঘ) বলা হয়েছে, ‘তিনি নৈতিক স্খলনজনিত কোনো ফৌজদারি অপরাধে দোষী সাব্যস্ত হইয়া অন্যূন দুই বৎসরের কারাদণ্ডে দণ্ডিত হন এবং তাহার মুক্তিলাভের পর পাঁচ বৎসরকাল অতিবাহিত না হইয়া থাকে’।
সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ও দুর্নীতি দমন কমিশনের কৌসুলি খুরশীদ আলম খান বলেন, ‘দণ্ডিত হওয়ার পর থেকে তিনি আর সংসদ সদস্য পদে নাই। এখন থেকে তিনি বাদ। তিনি এখন অযোগ্য। তবে তিনি হাইকোর্টে আপিল করতে পারবেন’।
আবদুর রহমান বদিকে সংসদ সদস্য পদে অযোগ্য উল্লেখ করে সাবেক অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল এম কে রহমান বলেন, ‘এখন থেকে তিনি আর সংসদ সদস্য পদে থাকতে পারবেন না’।
আইন অনুসারে এখনো হাইকোর্ট ও আপিল বিভাগের ধাপ বাকি আছে- এ প্রশ্নের জবাবে এম কে রহমান বলেন, ‘যদি নির্বাচনের আগ মুহূর্তে তিনি সাজা পেতেন তাহলে কি তিনি নির্বাচন করতে পারেতেন? অবশ্যই পারতেন না। তাই এখন তিনি অযোগ্য’।
তবে সাবেক আইনমন্ত্রী ব্যারিস্টার শফিক আহমেদ বলেন, ‘সাজা কি শেষ হয়ে গেছে? তিনি কি আপিল করার সুযোগ পাবেন না? আপিল করলে তো সাজা বন্ধ হয়ে থাকবে। কাজেই পদ থাকবে না কেন? এখনো তার (বদি) আপিল করার অধিকার আছে। আপিল করলে সাজা যদি স্টে (সাজা স্থগিত) না হয়, তাহলে পদ নিয়ে সমস্যা হতে পারে’।
সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি খন্দকার মাহবুব হোসেন বলেন, ‘সংবিধান অনুসারে যদি দুই বছরের অধিক সাজা হয়, তাহলে তার সংসদ সদস্য পদ থাকবে না। এখানে কথা ছিল, আগে আমরা যেটা দেখেছি, আপিল যদি করা হয়, আপিলের নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত সাজার কার্যকারিতা থাকে না। কিন্তু বর্তমানে আমাদের উচ্চ আদালতের যে বিধান রয়েছে, তাতে আপিলে থাকলেও সাজা থেকে যে পর্যন্ত মুক্ত না হবেন, ততোদিন পর্যন্ত তিনি আর সংসদ সদস্য থাকতে পারবেন না। যদি আপিলের পর সাজা স্থগিত হয়, তাহলে থাকতে পারেন। সাধারণত সাজা স্থগিত হয় না। আপিল শুনানির জন্য গ্রহণ করা হয়’।
‘আমি মনে করি, সংবিধানের আলোকে এই সংসদ সদস্যের দুই বছরের বেশি অর্থাৎ তিন বছরের সাজা হয়েছে। তাই তিনি সংসদ সদস্য পদে বহাল থাকতে পারেন না’ বলেও উল্লেখ করেন তিনি।
বাংলাদেশ সময়: ০০৩০ ঘণ্টা, নভেম্বর ০৩, ২০১৬
ইএস/এএসআর