খুলনা: মোংলা কাস্টম হাউসের কমিশনার ড. আল আমিন প্রামানিককে আগামী সাত কার্যদিবসের মধ্যে প্রত্যাহার করার দাবি জানিয়েছেন বন্দর ব্যবহারকারীরা।
মঙ্গলবার (০৮ নভেম্বর) দুপুরে খুলনা প্রেসক্লাবে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে মোংলা বন্দর ব্যবহারকারী সমন্বয় কমিটির পক্ষ থেকে এ দাবি জানান।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন সমন্বয় কমিটির মহাসচিব অ্যাডভোকেট সাইফুল ইসলাম।
তিনি বলেন, ‘সাত কার্যদিবসের মধ্যে মোংলা কাস্টম হাউজের কমিশনারকে প্রত্যাহার করা না হলে বন্দর ব্যবহারকারীরা তাদের কর্মকাণ্ড থেকে বিরত থাকাসহ কঠোর কর্মসূচি দিতে বাধ্য হবে। ’
‘‘জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের স্থায়ী আদেশ (নং ৪৭/৯৮ তারিখ ১১/০৬/১৯৯৮) অনুযায়ী আমদানি পণ্য চালান খালাসে ‘ত্বরিত খালাস পদ্ধতি’ (Rapid Clearence Procedure) প্রবর্তিত হয়েছে। এ পদ্ধতির আওতায় সব সরকারি, আধা সরকারি, স্বায়ত্ত্বশাসিত প্রতিষ্ঠান ও বিশেষ সুবিধাভোগী প্রতিষ্ঠান কিংবা ব্যক্তিদের আমদানি করা চাল, গম, ক্লিংকার জাতীয় পণ্য কায়িক পরীক্ষা ছাড়াই খালাস করার বিধান রয়েছে। ’’
অ্যাডভোকেট সাইফুল ইসলাম বলেন, চট্টগ্রাম কাস্টমস হাউজে এ নিয়ম যথাযথভাবে পালিত হলেও মোংলায় এ নিয়মের তোয়াক্কা করা হচ্ছে না। এমনকি এসব পণ্য কায়িক পরীক্ষার নামে হয়রানি ও সময় ক্ষেপণ করা হচ্ছে মোংলা কাস্টমসে।
‘এতে বিদেশি পতাকাবাহী জাহাজের বৈদেশিক মুদ্রায় ডেমারেজ দিতে হচ্ছে। যার বিরূপ প্রতিক্রিয়ায় সংশ্লিষ্ট সবাই ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন এবং মোংলা বন্দর ব্যবহারে আগ্রহ হারাচ্ছেন ব্যবহারকারীরা। ’
কমিটির নেতা অ্যাডভোকেট সাইফুল ইসলাম বলেন, ‘শিল্পখাতকে সর্বাধিক অগ্রাধিকার ভিত্তিতে বিবেচনায় এনে নতুন শিল্প কারখানা স্থাপনের জন্যে বিশেষ প্রনোদনা দিয়ে যাচ্ছে সরকার। শিল্পকে এগিয়ে নিতে বিভিন্ন ধরনের সুবিধার পাশাপাশি শিল্পের মূলধনী যন্ত্রপাতি ও যন্ত্রাংশ আমদানির জন্যে শুল্ককর আদায়ের ক্ষেত্রেও রেয়াতি হারে শুল্ক দেওয়ার নির্দেশনা রয়েছে। ’
‘কিন্তু এ ধরনের সুস্পষ্ট ব্যাখ্যা থাকা সত্ত্বেও মোংলা কাস্টম হাউসের কমিশনার আল আমিন প্রামানিকসহ কিছু কর্মকর্তা যন্ত্রপাতি ও যন্ত্রাংশের আলাদা আলাদা এইচএস কোড (Hs Code) এ উচ্চহারে ডিউটি নির্ধারণ করে শুল্কায়ন করছেন। ’
‘এতে শিল্প উদ্যোক্তারা উচ্চহারে শুল্ককর দিয়ে আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন। এমনকি দেশে নতুন করে বিনিয়োগে উৎসাহ হারাচ্ছেন তারা,’ বলেন তিনি।
কমিশনারের বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ তুলে কমিটির নেতা সাইফুল ইসলাম বলেন, ‘বিষয়টি নিয়ে সিঅ্যান্ডএফ এজেন্টস অ্যাসোসিয়েশনের কাছে অনুরোধ করা হলেও মোংলা কাস্টম হাউজের কমিশনার আল আমিন প্রামানিক কোনো ব্যবস্থা নেননি। ফলশ্রুতিতে এ বন্দরে বর্তমানে আমদানির পরিমাণ প্রায় শূন্যের কোঠায় পৌঁছেছে।
মোংলা বন্দরকে সচল রাখার স্বার্থে কাস্টম হাউজে বিরাজমান পরিস্থিতি দূর করতে প্রধানমন্ত্রীসহ সংশ্লিষ্টদের হস্তক্ষেপ কামনা করেন তিনি।
সমন্বয় কমিটির সভাপতি সৈয়দ মোসতাহেদ আলীর সভাপতিত্বে এ সময় খুলনা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজের সভাপতি কাজী আমিনুল হক, মোংলা কাস্টম ক্লিয়ারিং অ্যান্ড ফরওয়ার্ডিং এজেন্টস অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মো. সুলতান হোসেন খান, বাংলাদেশ শিপিং এজেন্টস অ্যাসোসিয়েশনের ভাইস চেয়ারম্যান ও মোংলা বন্দর মাস্টার স্টিভিডরস অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি সৈয়দ জাহীদ হোসেন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
বাংলাদেশ সময়: ১৭০৫ ঘণ্টা, নভেম্বর ০৮, ২০১৬
এমআরএম/এমএ