ঢাকা, রবিবার, ৭ পৌষ ১৪৩১, ২২ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৯ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

জাতীয়

রোহিঙ্গা ইস্যুতে মায়ানমারের বিরুদ্ধে কঠোর হচ্ছে ওআইসি

জেসমিন পাপড়ি, ডিপ্লোম্যাটিক করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪৩৬ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২, ২০১৭
রোহিঙ্গা ইস্যুতে মায়ানমারের বিরুদ্ধে কঠোর হচ্ছে ওআইসি ওআইসির লোগো ও মায়ানমারের পতাকা

ঢাকা: রাখাইনে সংখ্যালঘু রোহিঙ্গাদের ওপর নিপীড়ন বন্ধে মায়ানমারের বিরুদ্ধে কঠোর হচ্ছে ইসলামী সহযোগিতা সংস্থা (ওআইসি)। জেনেভা ও ব্রাসেলসে দফায় দফায় বৈঠকের পর নানাভাবে নাইপিদোর দৃষ্টি আকর্ষণ করেও কোনো ফল না আসায় এবার কুয়ালালামপুরে পররাষ্ট্রমন্ত্রী পর্যায়ের বৈঠক ডেকেছে মুসলিম দেশগুলোর সংস্থাটি। 

আগামী ১৯ জানুয়ারি মালয়েশিয়ার রাজধানীতে ওআইসিভুক্ত দেশগুলোর পররাষ্ট্র মন্ত্রীদের এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে। বৈঠকে মায়ানমারের বিরুদ্ধে কঠোর রেজল্যুশন নেওয়া হবে বলে জানাচ্ছে কূটনৈতিক সূত্রগুলো।

সূত্রগুলো বলছে, গত ডিসেম্বরে জেনেভা ও ব্রাসেলসে রোহিঙ্গা নিপীড়ন পরিস্থিতি নিয়ে কয়েকটি জরুরি বৈঠক করে ওআইসি। তারপর নিপীড়ন বন্ধে নানাভাবে মায়ানমারের প্রতি আহ্বান জানানো হয়। এতেও কাজ না হওয়ায় আসন্ন মন্ত্রী পর্যায়ের বিশেষ সভায় রোহিঙ্গাদের ওপর নিপীড়নের কারণ চিহ্নিত করে সমাধানে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হতে পারে।

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্র বলছে, ওআইসির বিশেষ ওই সভায় পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম বাংলাদেশ দলের নেতৃত্ব দেবেন। বৈঠকে অংশ নেওয়ার পাশপাশি মায়ানমারের রোহিঙ্গাদের সর্বশেষ পরিস্থিতির ওপর বাংলাদেশের অবস্থান তুলে ধরবেন পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী।

শাহরিয়ার আলম দীর্ঘদিন ধরে নিপীড়িত সংখ্যালঘু এবং মৌলিক মানবাধিকার থেকে বঞ্চিত রোহিঙ্গাদের পক্ষে ব্যবস্থা নিতেও আহ্বান জানাবেন বৈঠকে। মায়ানমার থেকে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গাদের নিরাপত্তা ও মর্যাদার সঙ্গে দেশে ফেরত নেওয়ারও আহবান জানাবেন তিনি।

ওআইসির এসব তৎপরতার পাশাপাশি জাতিসংঘ ও ইউরোপীয় পার্লামেন্টের (ইপি) নানা পদক্ষেপও দেখা যাচ্ছে রোহিঙ্গা নিপীড়ন ইস্যুতে। নিপীড়নের বিষয়টি আলোচনায় আসার পর জাতিসংঘ ও অন্যান্য পর্যবেক্ষকরা তদন্তে মাঠে নামতে চাইলে তাদের অনুমতি দিতে মায়ানমারের প্রতি আহবান জানায় ইপি।

এদিকে, রোহিঙ্গা ইস্যুতে বৈঠক করতে ঢাকা আসছেন মায়ানমারের স্টেট কাউন্সেলর (কার্যত সরকারপ্রধান) ও ক্ষমতাসীন দল এনএলডি’র প্রধান অং সান সুচির একজন বিশেষ দূত। চলতি মাসেই তার বাংলাদেশ সফর করার কথা জানিয়েছে নাইপিদো।

কূটনৈতিক সূত্র বলছে, দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের আওতায় যৌথ ওয়ার্কিং গ্রুপ গঠনের মাধ্যমে রোহিঙ্গাদের মায়ানমারে ফেরত দেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু করতে চাইছে বাংলাদেশ। তারই প্রক্রিয়া হিসেবে এ বৈঠক হতে যাচ্ছে।

এর আগে, দু’দেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মধ্যকার দ্বিপাক্ষিক অষ্টম পরামর্শক সভায় দুই হাজার ৪৯৫ জন মিয়ানমারের নাগরিককে দেশে ফিরিয়ে নেওয়ার আগ্রহের কথা জানায় মায়ানমার। বিশেষ দূতের সফরে এ বিষয়টিই গুরুত্ব পাবে। পাশাপাশি বিভিন্ন সময়ে বাংলাদেশে অনুপ্রবেশকারী নিবন্ধিত ও অনিবন্ধিত রোহিঙ্গাদের বিষয়টিও তার সফরে তুলে ধরবে ঢাকা।

কয়েকদিন আগে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানায়, রাখাইন রাজ্যে দমন-নিপীড়নের জেরে প্রায় ৫০ হাজার রোহিঙ্গা বাংলাদেশে পালিয়ে এসেছে। এর আগ থেকেই অবৈধভাবে এদেশে অবস্থান করছে প্রায় ৩ লাখ রোহিঙ্গা।

বাংলাদেশ সময়: ২০২১ ঘণ্টা, জানুয়ারি ০২, ২০১৭
জেপি/এইচএ/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।