ঢাকা, শনিবার, ১৩ আশ্বিন ১৪৩১, ২৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ২৪ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

শিল্পে সাতক্ষীরাকে এগিয়ে নিচ্ছেন নুরুল ইসলাম রনি

শেখ তানজির আহমেদ, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৫৪৬ ঘণ্টা, জানুয়ারি ৩, ২০১৭
শিল্পে সাতক্ষীরাকে এগিয়ে নিচ্ছেন নুরুল ইসলাম রনি জি এম নুরুল ইসলাম রনি

সাতক্ষীরা: ১৯৯৩ সালে ভাগ্যের চাকা ঘোরাতে সৌদি আরবে পাড়ি জমিয়েছিলেন জি এম নুরুল ইসলাম রনি। সেখানে একটি ফার্মে কাজ করতে করতেই রপ্ত করেছিলেন ‘ইনকিউবেটর’ (ডিম থেকে বাচ্চা ফোটানোর যন্ত্র) তৈরির জ্ঞান। এর পরপরই দেশ মাতৃকার টানে ফিরে আসেন তিনি।

ফিরেই বাংলাদেশে প্রবর্তন করেন ইনকিউবেটর যন্ত্রের ব্যবহার।  শুধু তাই নয়, নিজ জেলা সাতক্ষীরায় একে একে গড়ে তুলেছেন রনি অ্যাগ্রো ইঞ্জিনিয়ারিং, রনি প্লাইউড অ্যান্ড ডোর ইন্ডাস্ট্রিজ, রনি স্পেয়ার পার্টস অ্যান্ড সাপ্লাই, রনি পোল্ট্রি ফিড ও রনি অ্যাগ্রো হ্যাচারি লিমিটেড নামে কয়েকটি শিল্প প্রতিষ্ঠান।

আর এভাবেই শিল্পে সাতক্ষীরাকে এগিয়ে নিচ্ছেন বাংলাদেশে ইনকিউবেটর’র প্রবর্তক সাতক্ষীরা সদর উপজেলার মাগুরা গ্রামের জি এম নুরুল ইসলাম রনি।

যার স্বীকৃতি সরূপ ২০১৩ সাল থেকে ২০১৫ সাল পর্যন্ত টানা তিনবার রনি অ্যাগ্রো ইঞ্জিনিয়ারিং কোম্পানি লিমিটেড পেয়েছে ন্যাশনাল প্রোডাকটিভিটি অ্যান্ড কোয়ালিটি এক্সিলেন্স অ্যাওয়ার্ড। ২০১৪ সালে তিনি পেয়েছেন জাতীয় সফল ক্ষুদ্র উদ্যোক্তা সম্মাননা। অর্জন করেছেন অতীশ দীপঙ্কর ইউনিভার্সিটি’র দেওয়া স্বর্ণপদক। ঢাকার গৌবরময় চারশ’ বছর উদযাপন অনুষ্ঠানে তাকে বাংলাদেশের কৃতি সন্তান হিসেবে দেওয়া হয়েছে বিশেষ সম্মাননা। মেসার্স রনি অ্যাগ্রো ইঞ্জিনিয়ারিং

১৯৭২ সালে জেলার কালিগঞ্জ উপজেলার কৃষ্ণনগর ইউনিয়নের রহমতপুর গ্রামের কৃষক অয়েজউদ্দীন গাজী ও গৃহিনী ছফুরুন্নেছার ঘরে জন্ম হয় তার।

বাংলানিউজের সঙ্গে একান্ত আলাপচারিতায় তরুণদের উদ্দেশে এই শিল্পোদ্যোক্তা বলেন, চাকরির জন্য বসে না থেকে সাহস নিয়ে উদ্ভাবনী
উদ্যোগ নিলে জীবনে সফল হওয়া সম্ভব।

নিজের জীবনের বর্ণনা দিয়ে তিনি বলেন, আমি কখনো আর্টের কাজ করেছি, আবার কখনো বিদেশে শ্রমিক হিসেবে কাজ করেছি। আমার জীবনের মোড় ঘুরিয়ে দেয় ইনকিউবেটর তৈরির জ্ঞান। সৌদি আরবে কষ্ট সহ্য করতে না পেরে দেশে ফিরে এসেছিলাম। তখনই সাহস নিয়ে বাংলাদেশে শুরু করেছিলাম ইনকিউবেটর তৈরির কাজ। কাজটি মোটেও সহজ ছিল না। কারণ বাংলাদেশে তখন এর প্রচলন ছিল না।

কিন্তু সারাদেশে আজ যে ইনকিউবেটর ব্যবহার হচ্ছে, বলতে পারি, সবগুলো হয় আমার তৈরি অথবা আমার কাছ থেকে প্রশিক্ষণ নিয়ে তা তৈরি করা হয়েছে। ইনকিউবেটরের চাহিদা এতো বেশি যে অনেক সময় আমরা সাপ্লাই দিতে হিমশিম খাই।

রনি বলেন, সাতক্ষীরায় হাজার কোটি টাকার মালিকের সংখ্যা অনেক। কিন্তু সাহসী মানুষের অভাব রয়েছে। আমার বিশ্বাস সাহসই পারে গোটা দৃশ্যপট বদলে দিতে। সাহস নিয়েই উদ্যোগ নিতে হবে।

তরুণ উদ্যোক্তাদের হাত ধরেই আগামীতে বাংলাদেশের চেহারা বদলে যাবে উল্লেখ করে তিনি বলেন, শিল্প উন্নয়নে সরকারকেও এগিয়ে আসতে হবে। বাংলাদেশে শিল্পঋণের সুদের মাত্রা অনেক বেশি। এটা কমানো দরকার। এছাড়া বিদ্যুৎ ও যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়ন করা গেলে বাংলাদেশ শিল্পে অনেক এগিয়ে যাবে। তখন বিশ্বের কাছে বাংলাদেশ হবে মডেল।  

বাংলাদেশ সময়: ১১ ঘণ্টা, জানুয়ারি ০৩, ২০১৭
এসআই 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।