ঢাকা, সোমবার, ৮ পৌষ ১৪৩১, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

জাতীয়

ভেজাল তেলে মুখরোচক ভাজা খাবার!

এম আব্দুল্লাহ আল মামুন খান, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৭০৩ ঘণ্টা, জানুয়ারি ৭, ২০১৭
ভেজাল তেলে মুখরোচক ভাজা খাবার! অস্বাস্থ্যকর হলেও নিজেদের রুটি-রুজির ব্যবস্থা করতেই গড়ে তুলেছেন ছোট দোকান/ছবি-বাংলানিউজ

ময়মনসিংহ: খোলা আকাশের নিচে গ্রামের পতিত জমিতে চট বিছিয়ে দোকান নিয়ে বসে গেছেন ক্ষুদে ব্যবসায়ীরা। গর্ত করে ইট বিছিয়ে তৈরি করা হয়েছে চুলো। কড়াইয়ে ভেজাল ও পোড়া তেলে ভাজা হচ্ছে পেঁয়াজু, রসালো জিলাপি, রং মেশানো পাপড়সহ নানা মুখরোচক খাবার। এসব খাবারে মিশছে ধুলো-বালিও।

অস্বাস্থ্যকর হলেও নিজেদের রুটি-রুজির ব্যবস্থা করতেই গড়ে তুলেছেন ছোট দোকান। সীমিত আয়ের মানুষেরাই এসব দোকানের ক্রেতা।

দুপুর থেকে রাত পর্যন্ত চলে বেচা-কেনা।

শুক্রবার (০৬ জানুয়ারি) বিকেলে ময়মনসিংহের ফুলবাড়িয়া উপজেলার জোরবাড়িয়া গ্রামে দেখা গেছে এ দৃশ্য।

শীতের আমেজ এখন প্রকৃতিতে। গ্রাম-গঞ্জে সন্ধ্যার পর পরই শীত আর কুয়াশায় একাকার। শীতকালের ধর্মসভাকে ঘিরেই এসব ব্যবসায়ীরা খাবারের অস্থায়ী দোকানগুলো দেন। সভা শেষ হতেই দোকান গুটিয়ে বাড়ি ফেরেন তারা। সীমিত আয়ের মানুষেরাই এসব দোকানের ক্রেতা/ছবি-বাংলািনউজপোড়া পাম তেলে জিলাপি ভাজছিলেন ভালুকজান এলাকার মোফাজ্জল হোসেন। সয়াবিন তেল একশ’ টাকা লিটার হওয়ায় জিলাপি ভাজতে পাম তেল ব্যবহার করেন তিনি। ভাজা শেষ হলে আবার সেই তেলই গ্যালনে ঢালেন। মোফাজ্জল বলেন, ‘পাম তেল ছাড়া জিলাপি হয় না। ভেজাল হলে পাবলিক তো আর খাইতো না’।

তিনি জানান, ‘প্রতিটি ধর্মীয় সভায় ৬০ টাকা কেজি দরে আট থেকে দশ হাজার টাকার জিলাপি বিক্রি হয়। এর মধ্যে এক থেকে দেড় হাজার টাকা লাভ থাকে’।

রং মেশানো প্রতি পিস পাপড় পাঁচ টাকা দামে বিক্রি করছিলেন হাসপাতাল রোড এলাকার বাসিন্দা বাদল হোসেন। গরমের সময় পেশা বদল করেন। গ্রামে ঘুরে ঘুরে আইসক্রিম বিক্রি করেন।

তিনি জানান, ময়দা দিয়ে নিজেরাই পাপড় তৈরি করেন। এরপর কাঁঠালি রঙ মিশিয়ে পাম তেলে ভাজা হয় পাপড়।

এ ক্ষুদে ব্যবসায়ী স্বীকার করেন, নতুন পাম তেলের সঙ্গে পোড়া পাম তেল মাঝে-মধ্যে ব্যবহার করা হয়। তবে এর ক্ষতিকারক দিক সম্পর্কে কোনো জ্ঞান নেই বাদলের।

ভ্রাম্যমাণ দোকান দিয়ে ছয় সদস্যের সংসারের হাল ধরেছেন রফিকুল ইসলাম। তার দোকানে মিলছে তিলের তক্তি, বুট, খুরমা, বাদাম দানা।

রফিকুল জানান, প্রতি কেজি বাদাম দানা দেড়শ’ টাকা ও তিলের তক্তি ১৬০ টাকা বিক্রি হচ্ছে। খাবারের অস্থায়ী দোকান/ছবি-বাংলানিউজস্কুলছাত্র হাফেজ আলীর মতে, ‘মচমচা তক্তি খেতে মজা। দামে সস্তা হলেও যুগের পর যুগ এ খাবারগুলোই সবাই খেয়ে আসছেন’।

শিশুদের খেলনা বিক্রেতা পলাশতলী গ্রামের আলম (৩৫) জানান, গ্রামের ধর্মসভাকে ঘিরে দোকানে শিশুদের ভিড় থাকে। বিক্রির টাকা দিয়েই চলে সংসারের খরচ।

বাংলাদেশ সময়: ১৩০৪ ঘণ্টা, জানুয়ারি ০৭, ২০১৭

এমএএএম/এএটি/এএসআর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।