ঢাকা, মঙ্গলবার, ৯ পৌষ ১৪৩১, ২৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ২১ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

জাতীয়

‘ডিএনসিসির ঘটনায় উদাসীনতাই দায়ী’

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৮৪৫ ঘণ্টা, জানুয়ারি ৮, ২০১৭
‘ডিএনসিসির ঘটনায় উদাসীনতাই দায়ী’ সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আলী আহমেদ খান/ছবি: শাকিল আহমেদ

ঢাকা: রাজধানীর গুলশান-১ নম্বরে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন (ডিএনসিসি) মার্কেটসহ বেশকিছু প্রতিষ্ঠানকে চিঠি দেওয়া সত্ত্বেও কর্তৃপক্ষ উদাসীন ছিল বলে মন্তব্য করেছেন ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আলী আহমেদ খান।

রোববার (০৮ জানুয়ারি) রাজধানীর মহাখালী ব্র্যাক সেন্টারে অ্যাকশন এইড আয়োজিত ‘ভূমিকম্প প্রতিক্রিয়া প্রস্তুতি: সমস্যা ও সম্ভাবনা’ শীর্ষক সেমিনারে তিনি এ মন্তব্য করেন।

আলী আহমেদ বলেন, বিভিন্ন সময় তাদের সচেতন করা হলেও যথাযথ ব্যবস্থা ছিলো না।

সেফটির জন্য কোনো ধরনের ব্যবস্থা ছিলো না। তাছাড়া আগুন লাগার তথ্য দিতে অনেক দেরি হয়েছিলো। ফায়ার সার্ভিস পৌঁছাতে পৌঁছাতে আগুন ছড়িয়ে পড়ে। মার্কেটে অনেক দাহ্য পদার্থ থাকায় তা নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায়।

তিনি বলেন, বাংলাদেশের উন্নয়ন হচ্ছে তবে, তা শৃঙ্খলার মধ্য নিয়ে আসতে হবে। এজন্য সব মন্ত্রণালয়, বেসরকারি প্রতিষ্ঠানকে একত্রে কাজ করতে হবে।

নির্দেশনা তৈরির ২০ বছর এবং আইন হওয়ার প্রায় ১০ বছর পরেও  বাস্তবায়ন হয়নি ‘বাংলাদেশ ন্যাশনাল বিল্ডিং কোড’। যে কারণে অপরিকল্পিতভাবে শহর এবং গ্রামে বাড়ছে ভবন নির্মাণ। ফলে ভবনের অবকাঠামো ঝুঁকি দিন দিন বাড়ছে।
 
এ প্রসঙ্গে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক মেহেদী আহমেদ আনসারী বলেন, ‘বিল্ডিং কোড যদি বাস্তবায়ন করা যায়  তবে ৯০ শতাংশ ঝুঁকি কমানো সম্ভব হবে। তাই ভবন নির্মাণ বিধিমালা প্রয়োগ করা খুবই জরুরি। এছাড়া যে ভবনগুলো আছে সেগুলোর যদি ঝুঁকি নিরুপণ না করি তবে আমাদের পরিস্থিতি আরো ভয়াবহ হবে বলে তিনি হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেন।  
 
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা বিভাগের চেয়ারম্যান মাকসুদ কামাল বলেন, আমরা বলি বাংলাদেশ ভূমিকম্প প্রবণ দেশ।  আবার কর্তৃপক্ষ বলে বাংলাদেশের পরিস্থিতি খারাপ না। বাস্তবতা হলো যখন বড় ধরনের ভূমিকম্প হবে তখন কিছু করার থাকবে না। যতো তাড়াতাড়ি সম্ভব ভবন নির্মাণ বিধিমালা প্রয়োগ করতে হবে।
‘ভূমিকম্প প্রতিক্রিয়া প্রস্তুতি: সমস্যা ও সম্ভাবনা’ শীর্ষক সেমিনারে  বক্তারা
একশনএইড বাংলাদেশের কান্ট্রি ডিরেক্টর ফারহ্ কবির বলেন, এতো বিশাল জনগোষ্ঠীর দেশে ভূমিকম্প হলে পরিস্থিতি ভয়াবহ হবে। সেই ভয়াবহতার কথা মাথায় নিয়ে কাজ করা খুবই জরুরি। তবে হতাশার কথা হলো, আমাদের সিদ্ধান্ত গ্রহণ ও বাস্তবায়নকারী কর্তৃপক্ষের মধ্যে সচেতনতার যথেষ্ট অভাব রয়েছে।  

আমরা একাডেমিকভাবে কাজ করছি, আলোচনা করছি। কিন্তু দেশের এ কাজটি ভালোভাবে করতে হবে সরকার ও অন্যান্য সিদ্ধান্ত  গ্রহণ ও প্রয়োগকারী প্রতিষ্ঠানকে।  
 
এফবিসিসিআইয়’র সাবেক সভাপতি আসিফ ইব্রাহিম বলেন, প্রাকৃতিক দুর্যোগ বলতে সবসময় বন্যার কথা বলি। এখন আমাদের অবশ্যই ভূমিকম্প নিয়ে কথা বলা উচিত।  তৈরি পোশাক শিল্পে ভূমিকম্প মোকাবেলায় নানা পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে। একইভাবে বাংলাদেশের অন্যান্য সেক্টরে সে কাজটি করতে হবে।

অনুষ্ঠানের শুরুতেই বিষয়টি নিয়ে প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন একশনএইড বাংলাদেশের প্রোগ্রাম ম্যানেজার ম্যানেজার এ এম  নাসির উদ্দিন।

প্রবন্ধে বলা হয়, বাংলাদেশ দুর্যোগ ঝুঁকির দিক দিয়ে বিশ্বের মধ্যে ৫ম। নগর ঝুঁকির দিক দিয়ে যার অবস্থান ১১তম।  বর্তমানে  বাংলাদেশে মোট জনসংখ্যার ৩০ শতাংশ  শহরে বাস করে। তবে ২০৩০ সালের মধ্যে এর পরিমাণ বেড়ে দাঁড়াবে ৫০ শতাংশ।  

এজন্য সচেতনতার পাশাপাশি শিল্পকারখানা, অন্যান্য প্রতিষ্ঠান বিকেন্দ্রীকরণ করতে হবে।  

অ্যাকশনএইড বাংলাদেশের পরিচালক ফারাহ কবিরের সভাপতিত্বে আরো উপস্থিত ছিলেন আরবান রিসাইলেন্স প্রকল্পের পরিচালক ইঞ্জিনিয়ার ড. তারিক বিন ইউসুফ, বুয়েটের পুরকৌশল বিভাগের অধ্যাপক মেহেদি আহমেদ আনসারী, বিজেএমইএ’র ডেপুটি সেক্রেটারি শফিকুল ইসলাম, জাইকার ডেপুটি প্রোগ্রাম ম্যানেজার আনিসুজ্জামান চৌধুরী প্রমুখ।

বাংলাদেশ সময়:১৪৩৭ ঘণ্টা, জানুয়ারি ০৮, ২০১৭/আপডেট: ১৭২৩ ঘণ্টা
এএম/ওএইচ/জেডএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।