মঙ্গলবার (২৪ জানুয়ারি) দুপুরে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে ঊর্ধ্বতন পুলিশ কর্মকর্তাদের উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে প্রধানমন্ত্রী এ কথা বলেন।
শেখ হাসিনা বলেন, ‘প্রজাতন্ত্রের মালিক জনগণ।
সংসদ সদস্য মঞ্জুরুল ইসলাম হত্যাকাণ্ডে মানবাধিকার সংগঠনগুলো সোচ্চার না হওয়া প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘ছোট খাট ঘটনা হলেই দেখি হাউকাউ শুরু হয়ে যায়। একজন সংসদ সদস্যকে হত্যা করার পর কোনো মানবাধিকার সংগঠন বা কেউ এ ব্যাপারে কোনো শব্দ করে না। ’
‘যারা পরিকল্পিতভাবে বিভিন্ন ধর্মের মানুষকে হত্যা করলো, মসজিদে আগুন দিলো মানুষ পোড়ালো তাদের বিরুদ্ধে অত বেশি সোচ্চার হতে দেখি না। ’
গত ৩১ ডিসেম্বর নিজ বাড়িতে দুর্বৃত্তদের গুলিতে নিহত হন এমপি মঞ্জুরুল ইসলাম লিটন। এর আগে, লিটনের গুলিতে একটি শিশু আহত হওয়ার ঘটনায় তার বিরুদ্ধে মামলা হয়, তার লাইসেন্স করা অস্ত্র নিয়ে যাওয়া হয়।
গাইবান্দায় সংসদ সদস্যকে হত্যা দুঃখজনক উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘তার বাসা থেকে পুলিশ তুলে নিয়ে যাওয়া হয়েছিলো। কেন পুলিশ তুলে নিয়ে যাওয়া হলো? তার বিরুদ্ধে একটা অপবাদ দিয়ে তার লাইসেন্স করা অস্ত্র নিয়ে যাওয়া হলো। ’
‘মনে হলো একেবারে পরিকল্পিতভাবে ছেলেটাকে মৃত্যুর মুখে ঢেলে দেওয়া হলো। ’
শেখ হাসিনা বলেন, ‘গাইবান্দার সুন্দরগঞ্জ, পলাশবাড়ি, গোবিন্দগঞ্জ থেকে শুরু করে সাঘাটা এলাকায় ২০১৩ সালে চারজন পুলিশকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছিলো। পুলিশ ফাঁড়িতে আগুন, ফিসপ্লেস খুলে ফেলা হয়েছিলো। এ ধরনের ঘটনা যেখানে ঘটেছিলো সেখানে একজন সংসদ সদস্যের নিরাপত্তার দিকে দৃষ্টি না দিয়ে, কোন পত্রিকায় কি লিখলো সেটা দেখে সঠিক খবর না নিয়ে এ ধরনের ব্যবস্থা নেয়া হলো? যার জন্য একজন সংসদ সদস্যকে জীবন দিতে হলো। ’
‘এটাও ষড়যন্ত্রের অংশ। প্রতিটি এলাকায় জনগণকে সম্পৃক্ত করতে হবে, আস্থায় রাখতে হবে। তাদের নিয়ে সব পরিস্থিতি মোকাবেলা করতে হবে। ’
প্রধানমন্ত্রী পুলিশ বাহিনীর সদস্যদের উন্নত প্রশিক্ষণের ওপর গুরুত্বারোপ করেন।
তিনি বলেন, উন্নতমানের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা হবে। বিশেষ প্রশিক্ষণ এবং সরঞ্জামের ব্যবস্থা অবশ্যই আমরা করবো।
পুলিশের প্রয়োজন অনুসারে যানবাহন সরবরাহ করা হচ্ছে জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ছয় হাজার ৮৫৬টি গাড়ি কেনার অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।
অনুষ্ঠানের শুরুতেই বাহিনীতে গ্রেড-১ ও গ্রেড-২ পদ সংখ্যা বৃদ্ধি, পদোন্নতি, যানবাহন বৃদ্ধিসহ বিভিন্ন দাবি-দাওয়া নিয়ে কথা বলেন পুলিশের উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।
অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন- স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল এবং স্বরাষ্ট্র সচিব কামাল উদ্দিন আহমেদ। স্বাগত বক্তব্য রাখেন- পুলিশের মহা-পরিদর্শক এ কে এম শহীদুল হক
সেখানে আরও বক্তব্য রাখেন- ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের কমিশনার আছাদুজ্জামান মিয়া, চট্টগ্রাম রেঞ্জের ডিআইজি শফিকুল ইসলাম, ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার ও কাউন্টার টেরোরিজম বিভাগের প্রধান মো. মনিরুল ইসলাম, অতিরিক্তি ডিআইজ হাবিবুর রহমান, গাজীপুরের পুলিশ সুপার হারুন-অর-রশীদ প্রমুখ।
ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন পুলিশের অতিরিক্ত মহা-পরিদর্শক মোখলেসুর রহমান।
বাংলাদেশ সময়: ১৫০৩ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২৪, ২০১৭
এমইউএম/পিসি