ঘটনার ১৮ দিন পার হলেও মামলার একমাত্র আসামির কাছ থেকে তেমন গুরুত্বপূর্ণ কোনো তথ্য পায়নি তারা। কি কারণে এ আত্মহত্যা সে বিষয়ে এখনও অন্ধকারেই রয়েছে পুলিশ।
চলতি বছরের ১০ জানুয়ারি (মঙ্গলবার) বিকেলে রাজধানীর দারুসসালাম থানার ছোট ডিয়াবাড়ি এলাকার ২৯/১ মাস্টার বাড়ির টিনশেডের একটি রুমে পাঁচ বছরের মেয়ে শামীমা ও তিন বছরের ছেলে আব্দুল্লাহকে হত্যার পর নিজেও আত্মহত্যা করেন মা আনিকা (২০)। মৃত্যুর আগে মা আনিকা একটি সুইসাইড নোট লিখে রেখে যান। তবে সেই নোটে আত্মহত্যার জন্য কাউকে দায়ী করেননি তিনি।
এ ঘটনার পরদিন স্বামী শামীম হোসেনের নামে আত্মহননকারী আনিকার মা নাদিরা বেগম বাদী হয়ে দারুসসালাম থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। মামলায় অভিযোগ করা হয়েছে, আনিকার আত্মহত্যার পেছনে স্বামী শামীম হোসেনের প্ররোচনা ছিলো।
মামলার প্রেক্ষিতে আসামি শামীম হোসেনকে গ্রেফতার করে রিমান্ডে নেয় দারুসসালাম থানা পুলিশ।
আসামি শামীমকে রিমান্ডে এনে জিজ্ঞাসাবাদে আত্মহত্যার প্ররোচনার কোনো ক্লু এখনো পাওয়া যায়নি বলে জানিয়েছেন তদন্তকারী কর্মকর্তা। অপরদিকে দুই শিশু ও তাদের মা আনিকার ময়নাতদন্ত প্রতিবেদনও এখনও পাওয়া যায়নি। এ ঘটনায় ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন অনেক কার্যকরী ভূমিকা রাখবে এমনটাই বলছে পুলিশ।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ও দারুসসালাম থানার উপ পরিদর্শক (এসআই) নওশের আলী বাংলানিউজকে বলেন, ‘মরদেহের সুরতহাল প্রতিবেদন ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) মর্গে পাঠানো হয়েছে, তবে ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন এখনও পাইনি আমরা। এটি মামলার তদন্ত কার্যক্রমের অগ্রগতিতে অনেক সহায়ক হবে বলে আমরা মনে করছি। ’
বর্তমানে আসামি শামীম হোসেন কারাগারে আছেন। ময়নাতদন্তের প্রতিবেদনসহ ঘটনার গুরুত্বপূর্ণ আলামত তদন্ত কার্যক্রমে আরও গতি পাবে বলে ধারণা করছেন পুলিশ।
এদিকে, এ আত্মহত্যার ঘটনা তদন্তে আসামি শামীম হোসেনের পরিবারের সদস্যদেরও জিজ্ঞাসাবাদ করেছে পুলিশ। এছাড়া শামীমের বন্ধু, প্রতিবেশী ও তার প্রতিষ্ঠানের (সেলুন) আশপাশেও তদন্ত পরিচালনা করছে পুলিশ। পাশাপাশি এ ঘটনায় তৃতীয় কোনো ব্যক্তির সম্পৃক্ততা আছে কি না, তাও তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।
দারুসসালাম থানার পরিদর্শক (তদন্ত) ফারুক-উল আলম বাংলানিউজকে বলেন, আসামি কারাগারে আছেন। তার স্ত্রী আনিকার পরিবারের পক্ষ থেকে শামীমের বিরুদ্ধে আত্মহত্যার প্ররোচনার অভিযোগ করা হয়েছে। তদন্ত কার্যক্রম শেষে এ চার্জশীটের বিষয় সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলেও জানান তিনি।
১২ বছরের সংসার জীবনে দুই শিশু সন্তানের জনক-জননী ছিলেন আনিকা-শামীম। পারিবারিকভাবেই বিয়ে হয় তাদের। শামীমের একটি সেলুনের দোকান রয়েছে। সংসারে কিছু আর্থিক সমস্যাও ছিলো।
মামলার বাদী নাদিরা বেগম বলেন, কেন আমার মেয়ে তার সন্তানদের হত্যা করলো আর কেনই বা সে আত্মহত্যা করলো এর কারণ আমারও জানা নেই। ‘কি কারণে এমন ঘটনা ঘটেছে এটা আমরা জানতে চাই’ বললেন নাদিরা বেগম।
বাংলাদেশ সময়: ১১৪৭ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২৭, ২০১৭
এসজেএ/ওএইচ/আরআই