ঢাকা, রবিবার, ২৮ পৌষ ১৪৩১, ১২ জানুয়ারি ২০২৫, ১১ রজব ১৪৪৬

জাতীয়

গুলশানে বছরজুড়েই খোঁড়াখুঁড়ি, লেগে থাকে ভোগান্তি

মানসুরা চামেলী, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৭৫৯ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২৭, ২০১৭
গুলশানে বছরজুড়েই খোঁড়াখুঁড়ি, লেগে থাকে ভোগান্তি গুলশানে বছরজুড়েই খোঁড়াখুঁড়ি, লেগে থাকে ভোগান্তি / ছবি: কাশেম হারুন

ঢাকা: “আর বলবেন না, সারাবছরই খোঁড়াখুঁড়ি। পানির লাইনের কাজ শেষ হলে, বিটিআরসি আসে, তারা শেষ হলে ওয়াসা আসে। দোকান-পাট ও বাসা-বাড়ির সামনে এভাবে খোঁড়াখুঁড়ি হলে চলাচল করা যায়? বাচ্চা-কাচ্চা নিয়ে চলাচল করাই মুশকিল হয়ে পড়েছে।”

রাজধানীর অভিজাত গুলশান ২ সার্কেলের আবাসিক এলাকা ও মার্কেটের সামনে খোঁড়াখুঁড়ি নিয়ে এ কথাগুলো বললেন স্থানীয় বাসিন্দা আমিন সরকার।

গুলশান অ্যাভিনিউ ও আবাসিক এলাকার বিভিন্ন সড়কে ঘুরে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন (ডিএনসিসি), বিটিআরসি (বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন) ও ওয়াসার খোঁড়াখুঁড়ির চিত্র দেখে কথা হচ্ছিল আমিনের সঙ্গে।


 
আমিনই বলেন, “কোথাও সুয়ারেজ লাইন, কোথাও পানির লাইন, আবার কোনো কোনো স্থানে টেলিফোন ও ইন্টারনেট লাইনের কাজ চলছে। এছাড়া রোড ডাইভারশন ও ফুটপাত মেরামতের কাজও চলছে। ”গুলশানে বছরজুড়েই খোঁড়াখুঁড়ি, লেগে থাকে ভোগান্তি
 
বছরজুড়েই চলা এই খোঁড়াখুড়ির কারণে ভোগান্তিতে পড়েছেন আমিনের মতো এলাকার বাসিন্দারা। তবে এ খোঁড়াখুড়ি কবে শেষ হবে সে বিষয়ে নির্দিষ্ট করে কিছু বলতে পারছে না সেবাদাতা সংস্থাগুলো।
 
ঘুরে দেখা যায়, গুলশান-২ এর ৩২, ২৪, ৪৭, ১০২ ও ১০৩ নম্বর রোডে রাস্তা ও ড্রেন মেরামত কাজের জন্য সিটি করপোরেশনের খোঁড়াখুঁড়ি চলছে। এ কারণে রোডগুলোর কোথাও কোথাও গাড়ি চলাচল ও পার্কিং নিষিদ্ধ করা হয়েছে। এতে ভোগান্তিতে পড়েছেন এলাকার বাসিন্দারা।

গুলশান ২ নম্বর মোড়ের কাছেই একটি অভিজাত হোটেলের পাশে চলছে রাস্তা ও সুয়ারেজ লাইন মেরামতের কাজ। সেখানে সিটি করপোরেশনের সাইনবোর্ডে লেখা আছে, ‘গুলশান, বনানী, বারিধারার কূটনৈতিক এলাকার রাস্তা, পানির লাইন, ড্রেন ও ফুটপাত মেরামত প্রকল্পের কাজ চলছে’।

এ প্রকল্পের কাজ শুরু হয়েছে গত বছরের জানুয়ারিতে। প্রকল্পের কাজ শেষ হওয়ার কথা ডিসেম্বরেই। তবে বছর পার হয়ে নতুন জানুয়ারি এলেও এখন পর্যন্ত প্রকল্প শেষ হয়নি। আরও কতদিন সময় লাগবে তা বলতে পারছে না কর্তৃপক্ষ।  গুলশানে বছরজুড়েই খোঁড়াখুঁড়ি, লেগে থাকে ভোগান্তি
 
শুলশান-২ এর মোড়ে শাহেদ প্লাজার সামনে বিশাল বিশাল গর্ত খুঁড়ে রেখেছে ‍সিটি করপোরেশন। সুয়ারেজ লাইনের কাজ চলতে থাকায় উৎকট গন্ধ ছড়িয়ে পড়েছে পুরো এলাকা।

শাহেদ প্লাজায় একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকরি করেন নুরে আলম। তিনি বাংলানিউজকে বলেন, “প্রায় ৬ মাস পার হলো রাস্তা ও ফুটপাত মেরামতের কাজ হচ্ছে। কাজ যেন আর শেষ হয় না। সারাদিন ঠুকঠাক আওয়াজ চলছে। একমাস হলো এখন আবার সুয়ারেজ লাইনের কাজ শুরু করেছে। কবে যে শেষ হবে আল্লাহই জানেন। ”

নুরে আলম মনে করেন, এসব এলাকায় বিদেশিরা যাতায়াত করেন। সারাবছর ধরে এমন বেহাল অবস্থা থাকলে ঢাকা নিয়ে বিদেশিদের খারাপ ধারণা হবে।
 
গত নভেম্বরে গুলশানের ৮৪ ও ৮৩ নম্বর রোডে দেখা যায়, ফুটপাত মেরামতের জন্য ইট আনা হয়েছে। সেখানে দু’মাস পর গিয়ে দেখা গেলো এখন কেবল কাজ শুরু হয়েছে। গুলশানে বছরজুড়েই খোঁড়াখুঁড়ি, লেগে থাকে ভোগান্তি

গুলশান ডিএনসিসি মার্কেটের আশপাশের এলাকাজুড়েও চলছে রাস্তা মেরামত ও সুয়ারেজ লাইন মেরামতের কাজ। একমাস আগেও এখানে বিটিআরসির খোঁড়াখুঁড়ি দেখা যায়।

ডিএনসিসির শ্রমিক সিদ্দিক বলেন, দুই-তিন মাস থেকে এখানে খোঁড়াখুঁড়ির কাজ চলছে। আমি দু’মাস ধরে কাজ করছি। কবে শেষ হবে বলতে পারি না। মনে হচ্ছে আরও তিন মাস লাগবেই।
 
খোঁড়াখুঁড়ি এবং ভোগান্তির বিষয়ে ডিএনসিসির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মেসবাহুল ইসলামের সঙ্গে কথা বলতে নগর ভবনে গেলে তিনি নিজে দেখা না করে প্রধান প্রকৌশলীর সঙ্গে কথা বলার পরামর্শ দেন।
 
পরে প্রধান প্রকৌশলী ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. সাঈদ আনোয়ারুল ইসলামের সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা করেও তাকে পাওয়া যায়নি।

বাংলাদেশ সময়: ১৩৩৪ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২৭, ২০১৭
এমসি/এইচএ/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।