ঢাকা, রবিবার, ২৮ পৌষ ১৪৩১, ১২ জানুয়ারি ২০২৫, ১১ রজব ১৪৪৬

জাতীয়

৪০ চাঁদাবাজের নিয়ন্ত্রণে গুলিস্তানের ফুটপাত

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৮১৩ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২৭, ২০১৭
৪০ চাঁদাবাজের নিয়ন্ত্রণে গুলিস্তানের ফুটপাত হকার উচ্ছেদের পর ফাঁকা গুলিস্তানের ফুটপাত; ছবি- সুমন

ঢাকা: রাজধানীর গুলিস্তান ও এর আশপাশের ফুটপাতের হকার্স মার্কেটগুলো নিয়ন্ত্রণ করে ৪০ জন চাঁদাবাজ। এরা এই এলাকার ফুটপাতের দোকানপাট থেকে চাঁদাবাজির মাধ্যমে হকারদের কাছ থেকে বিপুল অঙ্কের টাকা আদায় করছে। এই টাকার ভাগ পুলিশ থেকে শুরু করে স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও সরকারি দলের বিভিন্ন সহযোগী সংগঠনের নেতারাও পান বলে জানা গেছে।

সম্প্রতি ফুটপাত অবৈধ দখলমুক্ত করতে গুলিস্তান ও এর আশপাশের ফুটপাতে উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা করেছে ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন (ডিএসসিসি)।

সেই সঙ্গে এই ফুটপাতের হকার্স মার্কেট নিয়ন্ত্রণ করে যারা চাঁদাবাজি করে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে একটি তালিকা তৈরি করেছে ডিএসসিসি।

এই তালিকায় ৪০ জন চাঁদাবাজের নাম-ঠিকানা রয়েছে। এরা গুলিস্তান ও আশপাশের ৪০/৪৫টি ফুটপাতের হকার্স মার্কেট তাদের নিয়ন্ত্রণে রেখেছে। এখান থেকে তারা প্রতি মাসে দুই কোটি টাকার বেশি চাঁদা আদায় করে। ডিএসসিসি’র আইন শাখায় এই চাঁদাবাজদের নাম-ঠিকানাসহ তালিকা পাঠানো হয়েছে। আইন শাখাকে এদের বিরুদ্ধে মামলা করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

এই তালিকায় যাদের নাম রয়েছে তারা হলেন, বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ের ফুটপাতে হরিদাস ও সিতানাথ দাস; বায়তুল মোকাররম মসজিদের পশ্চিম পাশের ফুটপাতে কোটন মিয়া; বায়তুল মোকাররম মসজিদের দক্ষিণ গেটে আব্দুল কাদের; গুলিস্তান আহাদ পুলিশ বক্সের উত্তর পাশে লম্বা হারুন; আহাদ পুলিশ বক্সের দক্ষিণ পাশে আমিন; ভাসানী হকি স্টেডিয়ামের পশ্চিম পাশের ফুটপাতে আলী মিয়া ও আব্দুল গফুর; বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থার (বাসস) সামনে আবুল হাশেম কবির; পুরানা পল্টন আজাদ প্রোডাক্টসের সামনে দুলাল; গুলিস্তান সিনেমা হলের সামনে বাবুল; বায়তুল মোকাররম স্বর্ণের দোকানের সামনে হারুন; বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে সোনালী ব্যাংকের সামনে আব্দুস সালাম; ওসমানী উদ্যানের পূর্ব পাশে শাহজাহান, সুন্দরবন স্কয়ার মার্কেটের সামনে জজ মিয়া (মোটা জজ), গুলিস্তান ট্রেড সেন্টারের দক্ষিণ ও পূর্ব পাশে সেলিম ও ভোলা, নগর ভবনের সামনে শাহিন, জাতীয় গ্রন্থাগার থেকে রেলওয়ে মার্কেট পর্যন্ত সুলতান ও লিফু, বায়তুল মোকাররম মসজিদের উত্তর পাশ থেকে ক্রীড়া ভবন পর্যন্ত রহিম ও নূরু, রমনা ভবনের পশ্চিম পাশে মনির ও শফিক, গুলিস্তান হল মার্কেটের উত্তর পাশে হাসান ও খোরশেদ, গুলিস্তান সোনালী ব্যাংকের সামনে মিজান ও শওকত, গোলাপ শাহ মসজিদের দক্ষিণ পাশে বাবুল ও দোলন, গোলাপ শাহ মাজার থেকে আওয়ামী লীগ অফিস পর্যন্ত সড়কের দুই পাশে স্থানীয় যুবলীগ নেতা মনির, কাপ্তান বাজার থেকে গুলিস্তান ট্রেড সেন্টার পর্যন্ত আবু সাঈদ, আল মনসুরের সামনে থেকে ট্রেড সেন্টার পর্যন্ত বিমল বাবু, খদ্দর মার্কেটের সামনে সালাম, গুলিস্তান হোটেল গার্ডেনের সামনে থেকে বাটা শো-রুম ও বেলপট্টি পর্যন্ত ফারুক এবং ওসমানী উদ্যান ও সচিবালয়ের উল্টো পাশে শাহজাহান।

এরা প্রতিটি দোকান থেকে ৫০ টাকা থেকে শুরু করে ১৫০ টাকা পর্যন্ত চাঁদা তোলে। এ ছাড়া ফুটপাতের দেড় থেকে দুই হাজার দোকান থেকে লাইট প্রতি ৩০-৪০ টাকা চাঁদা তোলে খাজা মিয়া নামের এক ব্যক্তি।

গুলিস্তানের ফুটপাত দখলমুক্ত করতে ডিএসসিসি বার বার উচ্ছেদ অভিযান চালালেও এই চাঁদাবাজদের সহযোগিতায় আবার ফুটপাত দখল হয়ে যাচ্ছে। এ কারণে ডিএসসিসি এই চাঁদাবাজদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বলে সূত্র জানিয়েছে। এই চাঁদাবাজদের বিরুদ্ধে ফৌজদারি মামলা করতে ডিএসসিসির আইন শাখা প্রয়োজনীয় নথিপত্রও তৈরি করেছে বলে সূত্রটি জানায়।

বাংলাদেশ সময় ১৩৪০ ঘন্টা, জানুয়ারি ২৭, ২০১৭
এসকে/আরআই

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।