কুড়িল বিশ্বরোডে পাঁচ বছরের শিশু ও তার মাকে বাঁচাতে গিয়ে ট্রেনে কাটা পড়ে রেলওয়ের ইঞ্জিনিয়ার বিভাগের ম্যাট বাদল মিয়ার (৫২) মৃত্যু হয়। মরদেহের সঙ্গে ঢামেকে মর্গে আসা তার সহকর্মী মোহাম্মদ সোহেল এ দুর্ঘটনার বিবরণ দেন।
তিনি বলেন, বাদলসহ আমরা ২০ জন কুড়িল বিশ্বরোডের রেললাইন মেরামতের কাজে ব্যস্ত ছিলাম। তখন আমাদের কাছে সংকেত আসে, একটি ট্রেন সিলেট থেকে কমলাপুর ঢুকতেছে। আমরা দুই রেললাইনের মধ্যে দাঁড়িয়ে যাই।
হঠাৎ দেখি এক বোরখাপরা নারী ও তার সঙ্গে থাকা পাঁচ বছরের কমলা রঙের ফ্রক পরা এক শিশু রেললাইন পার হচ্ছে। তখন পথচারী এক লোক তাদের ধাক্কা দিয়ে রেললাইনের বাইরে ফেলে দেন। আর বলেন, ‘ট্রেন আসছে সরেন। ’
সহকর্মী সোহেলের ধারণা, পড়ে গিয়ে শিশুটি ভয় পেয়ে একাই দৌড় দিয়ে আবার রেললাইন পার হওয়ার চেষ্টা করে। তখন বাদল মিয়া শিশুটিকে রেললাইন থেকে ধাক্কা দিয়ে সরিয়ে নিজেই ট্রেনের নিচে কাটা পড়ে ঘটনাস্থলেই মারা যান।
এদিকে, আরেক সহকর্মী খলিলুর রহমান বাংলানিউজকে বলেন, গতকাল খিলক্ষেতে দায়িত্বপালনকালে রেলক্রসিং এলাকায় গেটম্যানের রুমে লাঞ্চ করার সময় গেটম্যান রবির ব্যবহৃত চশমা চোখে দেন বাদল ভাই। আর বলেন, ‘বয়সতো অনেক হইলো, আর কতদিন বাঁচবো, রঙিন চশমা পরেছি একটা ছবি তুল। ’ সাথে থাকা খলিলুর রহমান তার ছবিটি তোলেন।
মৃত ব্যক্তির ছোট ভাই সিদ্দিকুর রহমান আবুল জানান, মৃত বাদল মিয়ার স্ত্রী আয়শা বেগম। তিনি ৫ ছেলে ও ৩ মেয়ের জনক। তিনি খিলক্ষেত কাউলা রেলগেট সংলগ্ন এলাকায় পরিবার নিয়ে থাকতেন। সংসারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তি ছিলেন বাদল মিয়া।
ঢামেকে ময়নাতদন্ত শেষে পরিবার তার মৃতদেহ নিয়ে গেছে।
**অন্যকে বাঁচাতে গিয়ে ট্রেনে কাটা পড়ে রেল কর্মচারীর মৃত্যু
বাংলাদেশ সময়: ১৯১২ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২৭, ২০১৭
এজেডএস/এএটি/পিসি