যশোরের বীরশ্রেষ্ঠ মতিউর রহমান বিমান ঘাঁটির কর্মকর্তারা রোববার (২৯ জানুয়ারি) সকালে ইমাম শেখের সঙ্গে দেখা করে তাকে চাকরি দেওয়ার সিদ্ধান্ত জানান। দুপুরে তার ভ্যানসহ ইমামকে নিয়ে ঘাঁটির উদ্দেশ্যে রওনা হয়েছেন ওই কর্মকর্তারা।
মোবাইল ফোনে ইমাম শেখের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় সে বাংলানিউজকে বলে, ‘চাকরি হওয়ার বিষয়টি আমি বিশ্বাসই করতে পারতেছি না। খুব ভালো লাগতাছে। আমি খুব খুশি, সবকিছু স্বপ্নের মতো মনে হইতাছে’।
খুব শিগগিরই ইমাম তার নতুন চাকরিতে যোগদান করবে বলে জানান আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় ধর্ম বিষয়ক সম্পাদক ও প্রধানমন্ত্রীর টুঙ্গিপাড়া-কোটালীপাড়া এলাকার নির্বাচনী প্রতিনিধি শেখ মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ।
শেখ মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ’র মাধ্যমে ও তারই টুঙ্গিপাড়ার বাড়িতে ইমাম শেখের সঙ্গে প্রথম সাক্ষাৎ হয় বীরশ্রেষ্ঠ মতিউর রহমান বিমান ঘাঁটির স্কোয়াড্রন লিডার হারুন অর রশিদের নেতৃত্বে তিন কর্মকর্তার। পরে ইমাম শেখের টুঙ্গিপাড়ার পাটগাতী সরদার পাড়ার বাড়িতেও যান তারা। ইমামের পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে কথা বলে তার চাকরির বিষয়টি চূড়ান্ত করেন।
শেখ মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ বাংলানিউজকে বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে শনিবার (২৮ জানুয়ারি) যশোরের বীরশ্রেষ্ঠ মতিউর রহমান বিমান ঘাঁটি কর্তৃপক্ষ ইমাম শেখকে চাকরি দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়। রাতে আমার মোবাইলে মেসেজের মাধ্যমে এ বিষয়ে আগ্রহ প্রকাশ করে তারা। বিমান ঘাঁটির প্রতিনিধিরা রোববার সকালে ইমামের বাড়িতে আসতে চান’।
‘এজন্য সকালে ইমামকে টুঙ্গিপাড়ায় নিজের বাসায় ডেকে আনি। সেখানে ইমামের সঙ্গে সাক্ষাৎ হয় বিমান বাহিনীর ওই দলটির সঙ্গে’।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন- গোপালগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মাহবুব আলী খান, টুঙ্গিপাড়া উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান গাজী গোলাম মোস্তাফাসহ স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা। পরে সবাই মিলে ইমাম শেখের বাড়িতে যান এবং ইমামের পরিবারের সঙ্গে কথা বলেন।
বেলা ১২টা ১৭ মিনিটে ভ্যানগাড়ি ও ইমাম শেখকে নিয়ে প্রতিনিধি দলটি বীরশ্রেষ্ঠ মতিউর রহমান বিমান ঘাঁটির উদ্দেশ্যে রওনা হয়।
এর আগে ইমাম জানায়, তার বয়স ১৭ বছর। সে স্থানীয় প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত পড়াশোনা করেছে। গত দেড় বছর থেকে ভ্যানগাড়ি চালিয়েই দরিদ্র বাবা-মায়ের সঙ্গে কাটছিলো তার দিন।
গত শুক্রবার (২৭ জানুয়ারি) সকাল ১১টার দিকে বঙ্গবন্ধুর সমাধি এলাকার ১ নম্বর গেট থেকে প্রধানমন্ত্রী ও তার পরিবারের সদস্যদের নিজের ভ্যানে বহন করে প্রধানমন্ত্রীর বাসভবনে যায় ইমাম শেখ। প্রায় এক কিলোমিটার রাস্তা দুরু-দুরু বুকে ভীষণ সাবধানতার সঙ্গে ভ্যান চালায় সে। এ সময়ের মধ্যে বার-বার একটি কথাই বলতে চেয়েছিলো ইমাম। কিন্তু চক্ষু-লজ্জার কারণে ইমান সে কথা বলতেই পারেনি।
ওইদিন রাতেই এ বিষয়ে দেশের শীর্ষ অনলাইন নিউজপোর্টাল বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম’য়ে ‘প্রধানমন্ত্রীকে মনের কথাটাই বলা হলো না ভ্যানচালকের’ শিরোনামে সংবাদ প্রকাশ হলে প্রধানমন্ত্রীর কাছে ইমামের চাকরির প্রত্যাশার কথা সবাই জানতে পারেন।
আরও পড়ুন...
** প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে এক ছবিতেই ‘সেলিব্রেটি’ ইমাম শেখ
** প্রধানমন্ত্রীকে মনের কথাটাই বলা হলো না ভ্যানচালকের
** নাতি-নাতনিদের নিয়ে ভ্যানে ঘুরলেন প্রধানমন্ত্রী
বাংলাদেশ সময়: ১০৪৮ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২৯, ২০১৭/আপডেট: ১২৩০, ১৩৩২ ঘণ্টা
টিআই/এএসআর