নির্মাণের সময় থেকেই এ সড়কে ভাঙন শুরু হয়। কার্পেটিং উঠে সড়কে ছোট-বড় অসংখ্য গর্তের সৃষ্টি হয়।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, শেরপুর ঢাকা-বগুড়া মহাসড়কের উপজেলার ধুনটমোড় থেকে বথুয়াবাড়ী সেতু হয়ে কাজীপুরের মেঘাই পর্যন্ত ছোট-বড় শতাধিক সড়কের দু’ধার ধসে গেছে। সড়কের অসংখ্য স্থান থেকে উঠে গেছে কার্পেটিং। সেখানে সৃষ্টি হয়েছে ছোট-বড় অংসখ্য গর্ত।
সড়কটি নির্মাণের পর থেকে প্রতিবছরই সংশ্লিষ্টরা সড়কের বিভিন্ন স্থানের ভাঙন ও কার্পেটিং উঠে যাওয়া অংশ মেরামত করেন। কিন্তু কিছুদিন যেতে না যেতেই সড়কটি আবারও আগের চেহারায় ফিরে যায়।
এবারও ব্যতিক্রম ঘটেনি। নামমাত্র মেরামত করা হয়েছে সড়কটি। ইতোমধ্যেই মেরামত করা স্থানের সিংহভাগ নষ্ট হয়ে গেছে। এভাবে প্রত্যেক বছর সড়কটি মেরামতের নামে বিপুল অঙ্কের টাকা ব্যয় দেখিয়ে লুটপাট করা হয় বলেও অভিযোগ উঠেছে।
স্থানীয় আজগর আলী, মোখলেছুর রহমান, দুলালসহ অনেকেই বাংলানিউজকে জানান, সড়কটি নির্মাণের পর থেকেই মেরামত কাজ করা হচ্ছে। ভাঙন রোধে বালু বা মাটি ভর্তি বস্তা ফেলা হয়েছে। এদিকে যানবাহন চলাচলের কারণে কয়েক সপ্তাহের মধ্যে কার্পেটিং উঠে পড়ে।
তারা আরও জানান, দূর থেকে মাটি এনে ভরাটের কাজ করা হয়নি। সড়কের দু’ধারের জমি থেকে বালু-মাটি উত্তোলন করে সড়কে ফেলা হয়। পাশাপাশি সড়কের পাশ দিয়ে প্রবাহিত বাঙালি ও করতোয়া নদীতে ড্রেজার মেশিন বসিয়ে বিরামহীনভাবে বালু উত্তোলন করা হয়। এসব বালু সড়কের নির্মাণ কাজে ব্যবহার করা হয়।
সংশিষ্ট সূত্র জানায়, ২০০৩ সালের ২২ এপ্রিল বিশ্বব্যাংকের অর্থায়নে শেরপুর থেকে সিরাজগঞ্জের কাজিপুর পর্যন্ত ২৬ দশমিক ৮৩ কিলোমিটার রাস্তার সংস্কার ও পাকা করার কাজ শুরু হয়। প্রায় ৩০ কোটি টাকা ব্যয়ে বগুড়া সড়ক ও জনপথ বিভাগের তত্ত্বাবধানে চীনের ইউহ্যান জেনারেল মিউনিসিপ্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং করপোরেশন ও রাইজিং কনস্ট্রাকশন যৌথভাবে সড়কের নির্মাণ কাজ শুরু করে।
২০০৪ সালের ২ জানুয়ারির মধ্যে সড়কের নির্মাণ কাজ শেষ করার কথা থাকলেও প্রথম দফায় ব্যর্থ হয়। পরে কয়েক দফা কাজের মেয়াদ বাড়িয়ে দুই ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান কোনোমতে সড়কের নির্মাণ কাজ শেষ করে। মাত্র দেড় বছরের মাথায় গুরুত্বপূর্ণ এ সড়কে ভাঙন দেখা দেয়। এখন যোগাযোগ ব্যবস্থা নিয়ে উদ্বিগ্ন শেরপুর, ধুনট, কাজিপুর উপজেলার লাখো মানুষ।
বগুড়া সড়ক ও জনপদ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী আব্দুল হালিম বাংলানিউজকে জানান, নিজস্ব অর্থায়নে গেল সপ্তাহে সড়কটি মেরামত করা হয়েছে। ভালোভাবে মেরামতের জন্য ২০ লাখ টাকার দরপত্র আহবান করা হয়েছে। এ প্রক্রিয়া শেষ হলে আবারও সড়কটি মেরামত করা হবে। তবে মেরামতের নামে অর্থ লুটপাটের অভিযোগ অস্বীকার করেন তিনি।
বাংলাদেশ সময়: ১৭৩২ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ০৩, ২০১৭
এমবিএইচ/আরআর/এমজেএফ