ঢাকা, সোমবার, ২৯ পৌষ ১৪৩১, ১৩ জানুয়ারি ২০২৫, ১২ রজব ১৪৪৬

জাতীয়

তাজমহল রোডের বাড়িটি পিডব্লিউডির সাবেক কর্মকর্তার

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১২৫৪ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ৩, ২০১৭
তাজমহল রোডের বাড়িটি পিডব্লিউডির সাবেক কর্মকর্তার তাজমহল রোডের বাড়িটি পিডব্লিউডির সাবেক কর্মকর্তার

ঢাকা: রাজধানীর মোহাম্মদপুরের তাজমহল রোড়ের বাড়ির নম্বর ১১/৭। তাজমহল রোড থেকে ১১ নম্বর লেনে প্রবেশের পর ঠিক দু’টি বাড়ির পরেই এর অবস্থান। ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের ২৯ নম্বর ওয়ার্ডের সবুজরঙা দোতলা বাড়িটি সরকারের পক্ষ থেকে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছিল এ কে এম জয়নাল আবেদিন নামের পিডব্লিউডির একজন সাবেক কর্মকর্তাকে।

বাড়ির ভেতরে দোতলায় ওঠার সিঁড়ির সামনেই একটি কালো বোর্ডে লেখা রয়েছে এ কর্মকর্তার নাম। তিনি এ বাড়িতে থাকেন না।

 

শুক্রবার (৩ ফেব্রুয়ারি) মোহাম্মদপুর তাজমহল রোড়ের ১১/৭ নম্বর বাড়িতে সরেজমিনে গিয়ে ও সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে এসব তথ্য পাওয়া যায়।

পুলিশ বলছে, তাজমহল রোড়ের ১১/৭ নম্বর বাড়িতে গ্রেফতারশাহনাজ বেগম ওরফে জোৎস্না বেগম ভাড়া থাকতেন। তবে সেখানে তার পরিবারের কাউকে পাওয়া যায়নি।

এর আগে বৃহস্পতিবার (২ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে রাজধানীর মোহাম্মদপুরের ওই বাসায় গোপন বৈঠকের সময় জামায়াতের নারী শাখার ২৮ সদস্যকে গ্রেফতার করে পুলিশ। শুক্রবার (৩ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে গ্রেফতারদের ৭ দিনের রিমান্ড আবেদন করে আদালতে পাঠানো হয়েছে। আদালত তাদের প্রত্যেককে দুই দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন।

পুলিশের দাবি, অবৈধভাবে সরকার উৎখাত পরিকল্পনা করতেই জামায়াতের নারী শাখার সদস্যরা এ বাড়ি দ্বিতীয়তলায় গোপন বৈঠকও করেছে।

গ্রেফতার শাহনাজ বেগম জামায়াতের নারী শাখার সেক্রেটারি/সভাপতি। প্রায় সময় এ বাসাতেই সংগঠনের নারী সদস্যদের নিয়ে গোপন বৈঠক করতেন তিনি। এমনটাই ধারণা করছে পুলিশ।

ঢাকা মেট্রোপলিটান পুলিশের (ডিএমপি) মোহাম্মদপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. জামাল উদ্দিন মীর বাংলানিউজকে বলেন, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে ওই বাসা থেকে জামায়াতের ২৮ জন নারীকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তাদের কাছে দলের অনেক গুরুত্বপূর্ণ নথি পাওয়া গেছে।

ওই বাসায় গ্রেফতার শাহনাজ বেগম ভাড়া থাকতেন। তবে বাসাটি কার সে বিষয়ে তদন্ত চলছে। আসামিদের রিমান্ডে এনে জিজ্ঞাসাবাদ করলে আরও তথ্য সম্পর্কে জানা যাবে।

এদিকে, শুক্রবার (৩ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে সরেজমিনে দেখা যায়, গ্রেফতারদের স্বজনেরা মোহাম্মদপুর থানার সামনে এসে অপেক্ষা করছেন। গ্রেফতার উম্মে কুলসুমের স্বামী মো. রফিকুল ইসলাম বাংলানিউজকে বলেন, প্রায় সময় এখানে ইসলামিক তালিম, তাবলিগ অনুষ্ঠিত হতো। এখানে সব নারীই আসতেন। এমনটাই আমি জানি। আমার স্ত্রীও তালিমের জন্য ওই বাসায় যেতেন। তাই বৃহস্পতিবারও গিয়েছিল। কিন্তু আমার স্ত্রী কোনো সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত নয়।       

গ্রেফতার শরীফা আক্তারের স্বজনরা জানান, শুনেছি বাসা থেকে বের হওয়ার সময় বলেছিল দাওয়াতে যাচ্ছি। কিন্তু কি দাওয়াত সেটা বলেনি।

এদিকে, জামায়াতের ২৮ জন নারী সদস্যকে গ্রেফতারের পর তাজমহল রোডের ওই বাসায় তল্লাশি করে জামায়াতকর্মীদের উদ্দেশ্যে বানানো ৫০টি লিফলেট, জামায়াতের জনকল্যাণমুখী আদর্শ রাষ্ট্র ও সরকার গঠনের নিয়মতান্ত্রিক আন্দোলনের ৬৫ লিফলেট, সংগঠনের বিভিন্ন থানা/ওয়ার্ড/কমিটির/ ইউনিয়নের মাসিক রিপোর্ট ফরম ৩০টি, সংগঠনের নারী শাখার ত্রৈমাসিক/সাপ্তাহিক/বার্ষিক রির্পোট ফরম, পলাশী থেকে বাংলাদেশ শিরোনামে গোলাম আজমের লেখা ৩টি বই, ইসলাম ও সন্ত্রাসবাদ শিরোনামে মতিউর রহমান নিজামীর লেখা বিভ্রান্তিকর একটি বইসহ আরও নথিপত্র উদ্ধার করা হয়।      

ঢাকা মেট্রোপলিটান পুলিশের (ডিএমপি) তেজগাঁও বিভাগের উপ-কমিশনার (ডিসি) বিপ্লব কুমার সরকার বলেন, গ্রেফতারদের কাছ থেকে যেসব বই উদ্ধার করা হয়েছে সেগুলো উগ্রবাদী বই হিসেবে পরিচিত। তাদের নাশকতার পরিকল্পনা ছিল।
 
বাংলাদেশ সময়: ১৮৩২ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ০৩, ২০১৭
এসজেএ/এএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।