রোববার (০৫ ফেব্রুয়ারি) সকালে হাসপাতাল থেকে মরদেহ ঝিগাতলার বাসায় নিয়ে আসার পর কেঁদে কেঁদে কথাগুলো বলছিলেন জয়া সেন গুপ্ত।
জয়া সেনগুপ্ত বলেন, জেলে যাওয়ার পর ওই বাড়িতে একাই এসেছিলাম, আজ এই বাড়িতে একাই রয়ে গেলাম।
জয়া বলেন, অগ্নিকে স্বাক্ষী রোখে সাত জনমের বন্ধনে আবদ্ধ হওয়া মানুষটি আমাকে রেখে এভাবে চলে যাবে ভাবতেও পারিনি।
তুমি আমায় পঙ্গু করে গেলে। আমি কি তোমায় ছাড়া কখনো চলতে পারি, নাকি পেরেছি। সামনে আমি করে চলবো একবারতো বলে গেলে না। এমনতো কথা ছিলো না বলেই কান্নায় ভেঙে পড়েন সুরঞ্জিত সেনগুপ্তের সহধর্মীনী।
যে বিছানায় বিশ্রাম নিতেন সুরঞ্জিত সেখানে হাত রেখে বলছেন, তুমি কেন আমায় ছেড়ে গেলে আমি কিছুতে একটু শঙ্কিত হলে তুমি আমায় ভরসা দিতে। এখন আমার কি হবে। কে ভরসা দেবে।
ঘড়ের দেয়ালে ঝুলছে সুরঞ্জিত সেন গুপ্ত ও জয়া সেন গুপ্তের বিয়ের ছবি। ছবিটির দিকে তাকিয়ে আত্মচিৎকারে ফেটে যায় যেন জয়া সেন গুপ্তের হৃদয়।
জয় বলেন, আমার সামনে এখন শুধু অন্ধকার। কি করবো, কোথায় যাবো। কার কাছে যাবো তুমি কিছুই বলে গেলে না।
১৯৪৬ সালে সুনামগঞ্জের আনোয়ারাপুরে জন্ম নেন সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত। দ্বিতীয়, তৃতীয়, পঞ্চম, সপ্তম, অষ্টম, নবম ও দশম জাতীয় সংসদসহ মোট সাতবার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন এই প্রবীণ পার্লামেন্টারিয়ান।
১৯৯৬ সালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সংসদ বিষয়ক উপদেষ্টা ছিলেন তিনি। ২০০৮ সালে আওয়ামী লীগ দ্বিতীয়বারের মতো ক্ষমতায় আসার পর তিনি রেলমন্ত্রী হন। পরবর্তীতে তাকে দফতরবিহীন মন্ত্রী করা হয়।
সুরঞ্জিত সেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর সম্পন্ন করেন। সেন্ট্রাল ল’ কলেজ থেকে এলএলবি পাশের পর আইন পেশায় যুক্ত হন তিনি।
সুরঞ্জিত সেন বর্তমান সংসদের আইন মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় কমিটির সভাপতি ছিলেন। একই সঙ্গে সুপ্রিম কোর্ট বার কাউন্সিলেরও সদস্য ছিলেন তিনি।
রোববার (০৫ জানুয়ারি) ভোর ৪টা ২৪ মিনিটে রাজধানীর ল্যাবএইড হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি।
বাংলাদেশ সময়: ১১২৮ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ০৫, ২০১৭
ইউএম/বিএস