একই মামলার অপর আসামি নিশাত সুলতানা বানুকে (২৫) বেকসুর খালাস এবং ধর্ষণের কারণে ওই ছাত্রীর গর্ভে জন্ম নেওয়া সন্তানকে জন্ম থেকে ২১ বছর বয়স পর্যন্ত রাষ্ট্রপক্ষকে ভরণ-পোষণের দায়িত্ব পালনের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
রোববার (৫ ফেব্রুয়ারি) বিকেল সোয়া চারটার সময় জেলা ও দায়রা জজ আদালতের ভারপ্রাপ্ত বিচারক মো. রেজাউল করিম এই আদেশ দেন।
দণ্ডাদেশ প্রাপ্ত মনিরুজ্জামান জেলার লালপুর উপজেলার ধূপইল গ্রামের মৃত ডা. আব্দুল কুদ্দুস বিশ্বাসের ছেলে।
দণ্ডাদেশপ্রাপ্ত মনিরুজ্জামান ও খালাসপ্রাপ্ত নিশাত সুলতানা বানু জেলার লালপুর উপজেলার ধূপইল কলেজপাড়ার মৃত ডা. আব্দুল কুদ্দুস বিশ্বাসের সন্তান।
নাটোর জজ কোর্টের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) সিরাজুল ইসলাম বাংলানিউজকে জানান, ২০১০ সালে নিশাতদের বাড়িতে গিয়ে প্রাইভেট পড়তো লালপুর উপজেলার সপ্তম শ্রেণির এক ছাত্রী।
সেই সুবাদে নিশাতের ভাই মনিরুজ্জামান মনির সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। একপর্যায়ে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে একই বছরের ১৬ জুলাই কাবিন নামায় স্বাক্ষর করিয়ে মেয়েটির সঙ্গে দৈহিক সম্পর্ক গড়ে তোলেন মনিরুজ্জামান।
এতে অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়লে মেয়ের পরিবার বিষয়টি জানতে পারে। ঘটনার পর মনিরুজ্জামানকে বিয়ে করতে বললে তিনি রাজি হননি। এর মধ্যে মেয়েটি একটি পুত্র সন্তানের জন্ম দেয়।
এ অবস্থায় ওই বছরের ১২ নভেম্বর মেয়েটির মা বাদী হয়ে মনিরুজ্জামান ও তার বোন নিশাতের বিরুদ্ধে লালপুর থানায় মামলা দায়ের করেন।
দীর্ঘ শুনানি শেষে অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় রোববার বিকেলে এ রায় দেন বিচারক।
রায়ে বিচারক আরো উল্লেখ করেন, মনিরুজ্জামানের ছেলে যতোদিন সাবালক না হবে রাষ্ট্র ততোদিন তার ভরণ-পোষণ করবে। আর জরিমানার ৫০ হাজার টাকা ছয় মাসের মধ্যে মনিরুজ্জামানের কাছ থেকে আদায় করে জেলা কালেক্টরেট’র কাছে জমা দিতে হবে। পরে ওই টাকা ক্ষতিপূরণ বাবদ ভিকটিমকে দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়।
এছাড়া রায়ে উল্লেখ করা হয়, মনিরুজ্জামানের ধর্ষণের ফলে জন্ম নেওয়া ছেলেটি বাবা মনিরুজ্জামান ও মায়ের পরিচয়ে পরিচিত হবে।
এই মামলায় রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী ছিলেন নাটোর জজ কোর্টের স্পেশাল পিপি অ্যাডভোকেট শাজাহান কবির ও সহকারী পাবলিক প্রসিকিউটর (এপিপি) অ্যাডভোকেট জাহাঙ্গীর আলী। আসামি পক্ষে ছিলেন সদ্য প্রয়াত সিনিয়র আইনজীবী অ্যাডভোকেট শওকত হোসেন।
বাংলাদেশ সময়: ১৭২৩ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ০৫, ২০১৭
এসআই