ঢাকা, বুধবার, ০ মাঘ ১৪৩১, ১৫ জানুয়ারি ২০২৫, ১৪ রজব ১৪৪৬

জাতীয়

সংসদে শেষ বক্তৃতায় যা বলেছিলেন সুরঞ্জিত

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৩১৩ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ৫, ২০১৭
সংসদে শেষ বক্তৃতায় যা বলেছিলেন সুরঞ্জিত

জাতীয় সংসদ ভবন থেকে: সংবিধানের বিভিন্ন অনুচ্ছেদের ব্যাখ্যা তুলে ধরে সংসদকে প্রাণবন্ত করে রাখতেন সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত। তিনি যখন কথা বলতেন, সংসদে উপস্থিত সব সংসদ সদস্য নীরবে শুনতেন, ব্যাখ্যায় হতেন মুগ্ধ। মাথা নাড়িয়ে বিভিন্ন অঙ্গ-ভঙ্গিতে তিনি কথা বলতেন।

দশম জাতীয় সংসদের ১৪তম অধিবেশনেও গত ২৯ জানুয়ারি শেষ বারের মতো বক্তৃতা করেন ভাটি অঞ্চলের এই প্রাণ পুরুষ প্রবীণ রাজনীতিবিদ সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত। সেদিন পয়েন্ট অব অর্ডারে দাঁড়িয়ে অনির্ধারিত আলোচনায় সংবিধানের ৪৮ অনুচ্ছেদের ব্যাখ্যা সংবলিত ব্যাখ্যা প্রদান করেন।

সংবিধানের ৪৮ অনুচ্ছেদ তুলে ধরে সেদিন সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত বলেন, রাষ্ট্রপতির কথার ওপরে কোনো কথা নেই। তিনি গভীরভাবে শ্রদ্ধাশীল। তিনি গভীরভাবে পড়াশোনা করে একটি সুন্দর সার্চ কমিটি গঠন করেছেন।
 
রাষ্ট্রপতি কর্তৃক গঠিত সার্চ কমিটি গঠনের প্রসঙ্গ তুলে ধরে বিএনপির উদ্দেশে বলেন, আমি অত্যন্ত আশ্চার্যের সঙ্গে দেখলাম, বিএনপি সার্চ কমিটি নিয়ে প্রশ্ন তুলতে চাইছে। রাষ্ট্রপতির এই কমিটি করার পরে কারো কথা বলার অধিকার নেই।

তিনি বলেন, বিএনপিকে যদি সাংবিধানিক রাজনীতি করতে হয় তাহলে সংবিধান জেনেই করতে হবে।
 
নির্বাচন কমিশন (ইসি) পুনর্গঠন নিয়ে আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোর মতামত ও আগ্রহের সমালোচনা করে তিনি বলেন, জাতিসংঘও আগ্রহ দেখাচ্ছে। জাতিসংঘের স্বাধীন ও সার্বভৌম রাষ্ট্রের প্রক্রিয়ার ওপর কোনো কথা বলার এখতিয়ার বা সংশ্লিষ্টতা একেবারেই নেই। তাদের যদি কোনো কথা থাকে, সেটা ডিপ্লোম্যাটিক চ্যানেলে তারা বলতে পারেন।
 
স্পিকারের দৃষ্টি আকর্ষণ করে সুরঞ্জিত আরও বলেন, রাষ্ট্রপতি অনুসন্ধান কমিটি করে দিয়েছেন। বিএনপির যদি কোনো কথা থাকে, তারা অনুসন্ধান কমিটিতে বলতে পারে। তাদের নেতারা বলতে পারেন, এই লোককে না নিয়ে ওই লোককে নিন। এটা সংবিধান প্রণিধানযোগ্য হতে পারে। অন্য কোনো উপায়ে নয়।
 
বিএনপি গণতান্ত্রিক উপায়ে ফিরে এসেছে দাবি করে বলেন, তাদের সংবিধান সম্পর্কে আরও ওয়াকিবহাল ও শ্রদ্ধাশীল হতে হবে। এটা হয়েই দেশের এই সংকট থেকে আমাদের মুক্তি পেতে হবে।
 
রাষ্ট্রপতির অনুসন্ধান কমিটি যেটা করেছেন, সেটা গোটা জাতির কাছে গ্রহণযোগ্য হয়েছে। আমি আমার ব্যক্তিগত জীবনে এতো সুন্দর অ্যাপ্লিকেশন দেখিনি।

ইসি গঠন নিয়ে নিজ দল আওয়ামী লীগের অবস্থান সম্পর্কে বলেন, আমরা কি চাই রাষ্ট্রপতির কাছে বলে এসেছি। সংবিধানের মধ্য থেকেই কেবলমাত্র ক্ষমতার ব্যবহার করতে হবে। এসব সুবিধা ব্যবহার করে আমরা আমাদের নিজেদের সাংবিধানিক অভিজ্ঞতা এবং রাষ্ট্রীয় সার্বভৌমের ক্ষমতার কথা বলেছি। ওরা রাষ্ট্রপতির ক্ষমতা সম্পর্কে বুঝেননি। সংবিধানের ৪৮ (৩) অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে, রাষ্ট্রপতির বক্তব্য, তার কথা, সংবিধান অনুযায়ী কারো প্রশ্ন তোলার অধিকার নেই।
 
জাতিসংঘ প্রসঙ্গে প্রবীণ এই রাজনীতিবিদ বলেন, আন্তর্জাতিক সংস্থা জাতিসংঘের প্রতি আমরা শ্রদ্ধাশীল। তারা তাদের বক্তব্য যদি কিছু থাকে তাহলে বলতে পারেন। এর বাইরে তারা যদি কোনো প্রশ্ন তোলেন এটা আমরা জাতি হিসেবে খুবই বিব্রতকর হবো এবং সাংবিধানিকভাবে বিশ্বের কোনো দেশের কোথাও হয় না।
 
বাংলাদেশ সময়: ১৯০৪ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ০৫, ২০১৭
এসএম/ওএইচ/আইএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।