ঢাকা, বুধবার, ০ মাঘ ১৪৩১, ১৫ জানুয়ারি ২০২৫, ১৪ রজব ১৪৪৬

জাতীয়

রাষ্ট্রদূতদের ঠেংগার চর পরিদর্শনের আহ্বান পররাষ্ট্রমন্ত্রীর

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫৩৯ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ৫, ২০১৭
রাষ্ট্রদূতদের ঠেংগার চর পরিদর্শনের আহ্বান পররাষ্ট্রমন্ত্রীর  ঠেংগার চর/ ছবি: সংগৃহীত

ঢাকা: সন্দ্বীপ ও হাতিয়ার মাঝামাঝি অংশে মেঘনার মোহনায় জেগে ওঠা  ঠেংগার চরে রোহিঙ্গাদের স্থানান্তর করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার।এ চর পরিদর্শনের জন্য বিদেশি রাষ্ট্রদূতদের আহ্বান জানিয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাহমুদ আলী।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী  বাংলাদেশে নিযুক্ত বিদেশি রাষ্ট্রদূতদের রোহিঙ্গা বিষয়ে সরকারের অবস্থান জানিয়ে রোববার (৫ ফেব্রুয়ারি)রাষ্ট্রীয় অতিথিভবন পদ্মায়  বিকেল ৩ টা থেকে ৫টা পর্যন্ত এ ব্রিফ করেন।

পরে রাত পৌনে আটটায় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে পাঠানো এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে একথা জানানো হয়।



বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, চীন, জাপান, কানাডা ছাড়াও জাতিসংঘ, আইইএমও,আইএলও’র ৬০ জন প্রতিনিধি এ ব্রিফিং-এ উপস্থিত ছিলেন।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ঠেংগার চরকে বসবাস উপযোগী করতে পদক্ষেপ নিয়েছে সরকার। সেখানে আবাসন, স্কুল, হাসপাতাল, মসজিদ সহ প্রয়োজনীয় সব কিছুই স্থাপন করা হবে। জাতিসংঘ ও বিদেশি বন্ধুরাষ্ট্ররা এ বিষয়ে সহযোগিতার আশ্বাসও দিয়েছেন।

বাংলাদেশ থেকে মায়ানমারে প্রত্যাবাসনের আগে রোহিঙ্গাদেরকে পর্যায়ক্রমে এখানে স্থানান্তর করা হবে। তবে স্থানান্তরের প্রক্রিয়া শুরু করতে কিছুদিন সময় লাগবে।

তিনি বলেন, প্রায় চার লাখ রোহিঙ্গা বাংলাদেশে এসেছে। মিয়ানমারের আরাকান বা রাখাইন প্রদেশে গত ৯ অক্টোবরের সন্ত্রাসী হামলার পর নতুন করে এ পর্যন্ত প্রায় ৬৬ হাজার রোহিঙ্গা বাংলাদেশে এসেছে। এর মধ্যে সবচেয়ে ব্যাপক মাত্রায় রোহিঙ্গা আসে ৯১-৯২ সালে, এসময় কক্সবাজার থেকে টেকনাফ পর্যন্ত রাস্তার ধারে প্রায় ২শত বর্গ কিলোমিটার এলাকাজুড়ে বনাঞ্চলে বসতি গড়ে তোলে রোহিঙ্গারা। পরে জাতিসংঘ ও বাংলাদেশ সরকারের উদ্যোগে অস্থায়ী শরণার্থী শিবির তৈরি করে তাদের অন্ন-বস্ত্র-বাসস্থানের সংস্থান করা হয়েছিল। ওই সময় আড়াই লক্ষাধিক রোহিঙ্গা শরণার্থীকে আশ্রয় দিতে গিয়ে এই অঞ্চলের সমৃদ্ধ বনাঞ্চল প্রায় ধ্বংস হয়ে গিয়েছিল। সেসময় মায়ানমার থেকে অফিসিয়াল হিসাব অনুযায়ী ২ লাখ ৫০ হাজার ৮৭৭ জন রোহিঙ্গা বাংলাদেশে আসে। এরপর ৯২ সাল থেকে পর্যায়ক্রমে ২০০৫ সালের ২৮ জুলাই পর্যন্ত সময়ে ২ লাখ ৩৭ হাজার ৫৯৯ জন রোহিঙ্গাকে তাদের নিজ দেশে প্রত্যাবাসন করা হয়েছিল জাতিসংঘের মধ্যস্থতায়।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, বর্তমানে রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবর্তন হচ্ছে না। কিন্তু তারা যে অঞ্চলে অবস্থান করছে সেখনকার আর্থ সামাজিক ও নিরপত্তার  জন্য হুমকি সৃষ্টি করছে। এর ফলে মানবপাচার, চোরাকারবার ও মাদকের অন্ধকার জগতে নাম লেখাচ্ছে তারা। তাই অস্থায়ী ভিত্তিতে তাদের ঠেংগার চরে স্থানান্তরিত করার নীতিগত সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাহমুদ আলী বলেন, শেষ পর্যন্ত মায়ানমারের অবৈধ নাগরিকদের তাদের নিজ দেশে ফেরত যেতেই হবে। এজন্য তিনি আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে সোচ্চার হওয়া আহ্বান জানান।

বাংলাদেশের সময়: ২১৩৪ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ০৫, ২০১৭
কেজেড /জেএম

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।