ঢাকা, বুধবার, ১ মাঘ ১৪৩১, ১৫ জানুয়ারি ২০২৫, ১৪ রজব ১৪৪৬

জাতীয়

উচ্ছেদ অভিযানে খুশি স্থানীয়রা, রয়েছে শঙ্কা

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫১৩ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ৬, ২০১৭
উচ্ছেদ অভিযানে খুশি স্থানীয়রা, রয়েছে শঙ্কা অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ/ছবি: দিপু মালাকার-বাংলানিউজ

ঢাকা: রাজধানীর নন্দীপাড়া ব্রিজ থেকে ত্রিমোহনী গুদারাঘাট পর্যন্ত অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করায় খুশি হলেও এ কাজের ভবিষ্যৎ নিয়ে সংশয় কাটেনি স্থানীয়দের।

এর আগেও এলাকায় উচ্ছেদ অভিযান চালানো হলেও পরবর্তীতে খাল পুনরুদ্ধার ও রাস্তা সংস্কারের কাজে দৃশ্যমান অগ্রগতি হয়নি বলেও অভিযোগ তাদের।

সোমবার (০৬ ফেব্রুয়ারি) বেলা ১২টার দিকে রাজধানীর খিলগাঁওয়ের নন্দীপাড়া ব্রিজ থেকে ত্রিমোহনী গুদারাঘাট পর্যন্ত অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ অভিযান চালায় ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন (ডিএসসিসি)।

উচ্ছেদ অভিযানে ডিএস‌সি‌সির মেয়র সাঈদ খোকন উপস্থিত ছিলেন।

নন্দীপাড়া ব্রিজ থেকে ত্রিমোহনী গুদারাঘাট পর্যন্ত সরেজমিনে দেখা যায়, যখন ডিএস‌সি‌সির বুলডোজার অবৈধ স্থাপনা গুঁড়িয়ে দিচ্ছিলো তখন স্থানীয় জনতা উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেন। তারা একে অপরের সঙ্গে কথোপকথনে বলছিলেন, ‘সরকার এবার ভালো করে ধরছে, এবার আমাগো এলাকার উন্নয়ন হবেই। ’

একই সঙ্গে অনেকেই আবার সংশয় প্রকাশ করে বলেন, ‘এর আগেও তো একবার ভাঙচুর হয়েছিল, কিন্তু পরে কাজ এগোয়নি। এবার নতুন মেয়র কি কাজ শেষ করতে পাড়ব?’অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ/ছবি: দিপু মালাকার-বাংলানিউজ

বাংলানিউজকে স্থানীয়রা তাদের শঙ্কা প্রকাশ করে জানান, অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদে সিটি করপোরেশনের সিদ্ধান্তে তারা স্থানীয়রা খুশি। সিটি করপোরেশনের এই উদ্যোগের ফলে তাদের এলাকা উন্নয়নের মুখ দেখবে।

উচ্ছেদ পর্যন্ত শুধু সীমাবদ্ধ না থেকে যেন খাল পুনরুদ্ধার ও রাস্তা সংস্কারের কাজ শেষ হয় তা না হলে এলাকাবাসীর লাভের তুলনায় ক্ষতির পরিমাণ বেশি হবে, জানান স্থানীয়রা।

এ সম্পর্কে স্থানীয় ব্যবসায়ী মোহাম্মদ মিলন বাংলানিউজকে বলেন, অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদের সিদ্ধান্তে আমরা এলাকাবাসী মেয়র সাহেবের সঙ্গে আছি। তবে মেয়র সাহেবের কাছে আবেদন জানাই, তিনি যেন উচ্ছেদ পর্যন্তই সীমাবদ্ধ না থাকেন, খাল পুনরুদ্ধার ও রাস্তা সংস্কারের কাজটিও যেন দ্রুত শেষ করেন। তা না হলে উচ্ছেদের কারণে আমরা সবাই ক্ষতিগ্রস্ত হব।
 
কারণ হিসেবে তিনি বলেন, এই উচ্ছেদ অভিযানের ফলে অনেক লোক কর্মসংস্থান হারিয়েছেন। খাল পুনরুদ্ধার ও রাস্তা সংস্কারের কাজ শেষ হলে এলাকা উন্নত হবে আর এলাকা উন্নত হলে সবাই আবার কর্মসংস্থানের নতুন করে সুযোগ পাবে। অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ/ছবি: দিপু মালাকার-বাংলানিউজ

নন্দীপাড়ার স্থানীয় জসীম মিয়া বাংলানিউজকে বলেন, এর আগেও একবার উচ্ছেদ অভিযান হয়েছিল, পরে আর কাজ এগোয়নি। এবারও যদি এমন হয় তাহলে আমাদের সবার ক্ষতি হবে। দখলবাজরা অবৈধভাবে সরকারি জায়গা দখল করেছে ঠিক, কিন্তু এ সব দোকানপাট সাধারণ মানুষ ভাড়া নিয়ে নিজেদের জীবিকা নির্বাহ করতো। আজ উচ্ছেদের ফলে তাদের কর্মসংস্থান কিন্তু সঙ্কটে পড়েছে। কিন্তু মেয়র সাহেব যদি উন্নয়ন কাজ দ্রুত সম্পন্ন করেন তাহলে তারাও নতুন কাজ পাবে এবং আমাদের এলাকারও উন্নয়ন হবে।

গত ২২ জানুয়ারি ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র সাঈদ খোকন নগরভবনে এক জরুরি বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের বলেছেন, রাজধানীর ঢাকাকে গ্রিন সিটি করতে এবং এর জলাবদ্ধতা নিরসনের কাজে তিনি কোনো বাধাই মানবেন না। দখলবাজরা যেই হোক না কেন তাদের উচ্ছেদ করা হবে।

ঢাকা দক্ষিণের মেয়র সেই সঙ্গে বৈঠক থেকে ঘোষণা দিয়েছিলেন (৬ ফেব্রুয়ারি) নন্দীপাড়া ব্রিজ থেকে ত্রিমোহনী গুদারাঘাট পর্যন্ত অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করবেন। সাইদ খোকনের সেই প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী সোমবার নন্দীপাড়া ব্রিজ থেকে ত্রিমোহনী গুদারাঘাট পর্যন্ত অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করেছেন।

** খাল উদ্ধার অভিযানে নন্দীপড়ায় ঈদের আমেজ

বাংলাদেশ সময়: ২১১১ ঘণ্টা ফেব্রুয়ারি ০৬, ২০১৭
এমএ/এমজেএফ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।