সার্চ কমিটি অত্যন্ত দায়িত্বশীলতা ও নিরপেক্ষতা বজায় রেখে ১০ জনের একটি তালিকা জমা দেন রাষ্ট্রপতির কাছে। আর তা থেকেই একজনকে প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও চার জনকে নির্বাচন কমিশনার করে নতুন কমিশন গঠন করা হয়।
নতুন প্রধান নির্বাচন কমিশনার হিসেবে নিযোগ পেয়েছেন সাবেক সচিব কেএম নুরুল হুদা। আর কমিশনার হিসেবে দায়িত্ব পেয়েছেন সাবেক সচিব রফিকুল ইসলাম, সাবেক অতিরিক্ত সচিব মাহবুব তালুকদার, অবসরপ্রাপ্ত জেলা ও দায়রা জজ কবিতা খানম এবং ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) শাহাদৎ হোসেন চৌধুরী।
প্রধান নির্বাচন কমিশনার কে এম নূরুল হুদাকে নিয়েই আগ্রহ সবচেয়ে বেশি। কে এই নূরুল হুদা? বাংলানিউজের পাঠকদের জন্য তাকে নিয়ে কিছু তথ্য এখানে তুলে ধরা হলো। ১৯৭৩ সালে বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিসে যোগ দেন এই নূরুল হুদা। সরকারের বিভিন্ন পর্যায়ে ও পদে ভূমিকা পালনের পর তিনি বাংলাদেশ সরকারের সচিব পদমর্যাদা লাভ করেন। আর ২০০৬ সালে সচিব হিসেবে চাকরি থেকে অবসরে যান।
কেএম নূরুল হুদা কুমিল্লা ও ফরিদপুরের জেলা প্রশাসক ছিলেন। এছাড়াও ঢাকা সিটি কর্পোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা এবং পরিবেশ ও বন মন্ত্রণালয় এবং সংসদ সচিবালয় যুগ্ম সচিব ও অতিরিক্ত সচিবের পদে ছিলেন। অবসরে যাওয়ার পর ২০১০ সালে তাকে বাংলাদেশ মিউনিসিপাল ডেভেলপমেন্ট ফান্ড (বিএমডিএফ)’র ব্যবস্থাপনা পরিচালক পদে বসানো হয়। সেখানে দায়িত্বে ছিলেন পাঁচ বছর। তবে তারও আগে জেমকন গ্রুপের পরিচালক (প্রশাসন ও মানবসম্পদ), নর্থ ওয়েস্ট জোন কোম্পানির চেয়ারম্যান, বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন-বাপার সঙ্গেও যুক্ত ছিলেন এই কেএম নূরুল হুদা।
১৯৪৮ সালে পটুয়াখালীর বাউফলে জন্ম। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিসংখ্যান বিভাগ থেকে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর ডিগ্রি আর যুক্তরাজ্যের ম্যানচেষ্টার ইউনিভর্সিটি ও সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়ন থেকেও উচ্চতর ডিগ্রি নেন এই কেএম নুরুল হুদা।
মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র নুরুল হুদা পটুয়াখালীতে মেজর জলিলের নেতৃত্বে সরাসরি সংগ্রামে অংশ নেন। ৯ নম্বর সেক্টরে এই যুদ্ধে তিনি পটুয়াখালীকে পাক হানাদার মুক্ত করায় দায়িত্বশীল ভূমিকা রাখেন।
নুরুল হুদা ব্যক্তিগত জীবনে তিন ছেলে-মেয়ের জনক। তার স্ত্রী হুসনে আরা। বড় ছেলে কানাডা প্রবাসী প্রকৌশলী, মেজ মেয়ে যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী প্রকৌশলী ও ছোট মেয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পাঠ চুকিয়ে কানাডায় উচ্চতর ডিগ্রির নিচ্ছেন।
আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ তথ্য: ২০০১ সালে ক্ষমতায় থাকা বিএনপি এই কে এম নুরুল হুদাকে বাধ্যতামূলক অবসর দেয়। সর্বোচ্চ আদালতে লড়ে ওই আদেশ বেআইনি এমন রায় এনে নিজের চাকরি বজায় রাখেন এই লড়াকু আমলা। তবে চাকরি ফিরে পেলেও ২০০৬ সালে বিএনপি ফের ওএসডি করে কে এম নুরুল হুদাকে। পরে অনেকটা আক্ষেপ নিয়েই অবসরে যেতে হয় সাবেক এই সচিবকে।
নুরুল হুদাকে প্রধান করে নতুন ইসি গঠন
‘বড় দায়িত্ব, যথাযথভাবে পালন করবো’
বাংলাদেশ সময় ০৯৪৬ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ০৭, ২০১৭
এমএমকে