বুধবার (৮ ফেব্রুয়ারি) ঢাকা-সিলেট রুটে এনা পরিবহনে নতুন যোগ হওয়া ‘হুন্দাই এসি’ বাসে বসেই এমন কথা শোনা গেলো। দীর্ঘ যাত্রাপথে ক্লান্তির কোনো ছাপ ফেলতে দেয়নি এই বাস।
একসময় অতিরিক্ত গতি ও দুর্ঘটনার কারণে সমালোচিত এ পরিবহন এখন আড়াইশো কিলোমিটার যাত্রাপথে একবারও তার গতি সীমারেখা অতিক্রম করে যাচ্ছে না।
বাসের ভেতরে সুপরিসর এক আসন থেকে আরেক আসন যথেষ্ট খোলামেলা (ফাঁকা) রেখে বসানো। প্রশস্ত সিটের মাঝখানে স্বাচ্ছন্দ্যে হেঁটে যাওয়া যাচ্ছে। গাড়িটির সামনের সিটে যেমন কোনো ঝাঁকি অনুভূত হচ্ছে না, তেমনি একেবারে পেছনের সিটেও ঝাঁকি নেই। আর গাড়ির ভেতরেই যাত্রীদের জন্য মিনি রেফ্রিজারেটর রাখা। চাইলে যে কেউ সেখান থেকে পানি নিয়ে পান করতে পারছেন।
বাংলাদেশে বিলাসবহুল এমন বেশ কয়েকটি বাস নিয়ে এনা তাদের সেবা নতুন করে সাজিয়েছে। নোংরা টার্মিনাল-কাউন্টার ছেড়ে নিজস্ব শীতাতপ কাউন্টার খুলেছে এনা। যেখানে যাত্রীরা অপেক্ষা করতে পারবেন। ইচ্ছেমতো পানি পান, নামাজ আদায় করতে পারবেন।
মহাখালি টার্মিনালের আরও উত্তরে এনার হুন্দাই বিশেষ বাসগুলোর জন্য আলাদা কাউন্টারে এমন সুবিধাই চোখে পড়লো। সদ্য নির্মিত এই কাউন্টারে যাত্রী সুবিধার সব ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। পরিচ্ছন্ন ওয়াশরুম। টিস্যু পেপার, টাওয়াল,
রেফ্রিজারেটর থেকে পানি সবই যাত্রীদের জন্য ইচ্ছেমতো উন্মুক্ত।
ঢাকা থেকে সিলেটে এনা পরিবহন সকাল-দুপুর-বিকেলে ও রাতে বেশ কয়েকটি হুন্দাই এসি বাস চালাচ্ছে। এসব বাসের যাত্রীরাই এই সুবিধাগুলো ব্যবহার করছেন।
হুন্দাই এসিবাস গুলো সিলেট ছাড়াও চট্টগ্রাম, কক্সবাজারে চলছে। কিছুদিনের মধ্যে ঢাকা-ফেনী রুটেও বাস ছাড়বে এনা। ঢাকা-সিলেট রুটে এ বাসের ভাড়া ১২শ টাকা।
তবে বাংলাদেশের পরিবহন জগতে প্রথমবারের এনা নিজস্ব সর্ববৃহৎ টার্মিনাল নির্মাণ করেছে সিলেটে। সেখানে এনার নন এসি, এসিসহ সব শ্রেণীর যাত্রীর জন্য রয়েছে শীতাতপ ওয়েটিং লাউঞ্জ । কাউন্টারের সামনে বিশাল উন্মুক্ত স্থানে গাড়ি পার্কিং করে রাখা হচ্ছে। ডিজিটাল সাউন্ড সিস্টেম সহ অত্যাধুনিক সুবিধা দেয়া হয়েছে সিলেটগামী ও সিলেট ছেড়ে আসা যাত্রীদের।
ঢাকা থেকে বিকেলে হুন্দাই বাসের যাত্রী হয়ে সিলেট পর্যন্ত গিয়ে দেখা গেছে, আগের মতো সেবায় নেই আর এনা। যাত্রীদের জন্য নিয়ে এসেছে আরামদায়ক নতুন হুন্দাই শীতাতপ বাসের ব্যতিক্রমী সেবা। বাস যেমন গতি মেনে চলছে তেমনি আরামদায়ক করে তুলছে জার্নিকে।
আরাফাতুল ইসলাম নামে একজন প্রবাসী সিলেটগামী যাত্রী বললেন, এরকম আরামদায়ক বাস জার্নি তার এটাই প্রথম। এর আগে গ্রিনলাইন এবং এনারই সাধারণ এসি বাসে যাত্রী হয়েছিলেন। কিন্তু এখনকার মতো আরাম উপভোগ করেননি।
তার সঙ্গে যোগ দিয়ে আরেকজন এমাদুল হক বলেন, ‘এমন বাস এ রুটে আরও আগে দরকার ছিলো। মানুষ নিরাপদ ও আরামদায়ক জার্নি চায়। এখন যে এই সেবা নিয়ে এগিয়ে আসবে মানুষ তাকেই গ্রহণ করবে। ’
ওই বাসের (ঢাকা মেট্রো ব১৫-০৫৬৭) চালক সেলিম বাংলানিউজকে জানান, ‘যাত্রীরা নতুন এই বাসগুলো ব্যবহার করে মজা পাচ্ছেন। আরামে যাচ্ছেন। ঠিক সময়ে গিয়ে গন্তব্যে পৌঁছাচ্ছেন। গাড়ির ইঞ্জিন ও মান ভালো হওয়ায় রাস্তায় মসৃণভাবে চলছে। ’
বাংলাদেশ সময়: ১১২৮ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ০৯, ২০১৭
এসএ/এসএইচ