বৃহস্পতিবার (৯ ফেব্রুয়ারি) রাতে জাতীয় সংসদে রাষ্ট্রপতির ভাষণের উপর আনীত ধন্যবাদ প্রস্তাবের আলোচনায় অংশ নিয়ে তিনি একথা বলেন। ডেপুটি স্পিকার অ্যাডভোকেট ফজলে রাব্বী মিয়া অধিবেশনে সভাপতিত্ব করেন।
মতিয়া চৌধুরী বলেন, রাষ্ট্রপতির ভাষণ এমন সময়ে দেওয়া হয়েছে, যখন বিশ্ব রাজনীতি ও অর্থনীতি বিশাল পরিবর্তনের ভেতর দিয়ে অস্থির ক্রান্তিকাল অতিক্রম করছে। কিন্তু বাংলাদেশের অর্থনীতি ও গণতন্ত্র পাশাপাশি হাতে হাত রেখে এগিয়ে চলছে। দেশবাসীসহ আমরা একাদশ সংসদের প্রস্তুতি নিচ্ছি।
তিনি বলেন, আমরা এমন সময়ে রাষ্ট্রপতির ভাষণের উপর আলোচনা করতে দাঁড়িয়েছি, যখন উদার বিশ্ব বাণিজ্যকে চ্যালেঞ্জ করে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ক্ষমতাসীন হয়েছেন। বহুদিনের চর্চিত ইউরোপীয় ইউনিয়ন থেকে গণভোটের মাধ্যমে গ্রেট ব্রিটেন বেরিয়ে গেছে।
সংসদীয় গণতন্ত্রের ধারা অব্যাহত রেখে দেশ এগিয়ে চলেছে উল্লেখ করে মতিয়া চৌধুরী বলেন, এই মুহূর্তে দেশে শান্তি ও স্থিতি বিরাজ করছে। ২০১৪ সালে অনুষ্ঠিত দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে বিএনপি দেশে অরাজক পরিস্থিতি সৃষ্টি করতে চেয়েছিল। নির্বাচন পরবর্তী সময়েও খালেদা জিয়া ঘোষণা করেছিলেন, সরকারকে উৎখাত না করে ঘরে ফিরবেন না। আজকের এই স্থিতিশীল শান্ত পরিবেশ ও ক্রমাগত সুশাসনের ফল প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দক্ষ সরকার পরিচালনা। এই অবস্থান অর্জন করার জন্য আওয়ামী লীগ সরকারকে এক বিশাল প্রতিকূল অবস্থা পেরিয়ে আসতে হয়েছে।
আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর এ সদস্য বলেন, শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আমরা আলোকিত বাংলাদেশে বাস করছি। বঙ্গবন্ধু কন্যার শাসনামলে জাতীয় গ্রিডে নতুনভাবে যুক্ত হয়েছে ৮ হাজার দুশ’ ৩২ মেগাওয়াট।
সরকারের বিভিন্ন উন্নয়ন চিত্র তুলে ধরে মতিয়া চৌধুরী বলেন, আওয়ামী লীগ সরকার কাজে বিশ্বাস করে। কোনো লোক বিদেশে গেলে সেখান থেকে দেশে ফিরে এসে যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নতি দেখে অবাক বিস্ময়ে থাকিয়ে থাকে। আমি চ্যালেঞ্জ দিয়ে বলতে পারি, খালেদা জিয়া ১০ বারও যদি জন্ম নেন, এই একটা হাতিরঝিল তিনি করতে পারতেন না। পারবেনও না। এটাই হল তার যোগ্যতার বহর।
পদ্মাসেতুর অর্থায়ন বন্ধের প্রসঙ্গ টেনে মতিয়া চৌধুরী বলেন, পদ্মাসেতুতে দুর্নীতির অভিযোগ তুলে বিশ্বব্যাংক অর্থ দিতে অস্বীকার করে। এই ব্যাপারে কলকাঠি নাড়েন ড. মুহাম্মদ ইউনূস। সেই অবস্থায় এটা অনেকেই ভাবেন বিশ্বব্যাংকের সহায়তা ছাড়া পদ্মাসেতু করা সম্ভব হবে না। কিন্তু অবিচল ছিলেন আমাদের নেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন এই স্বপ্নের সেতু আমরা নিজদের টাকাতেই করবো। আজ এ কথা সফল হতে চলেছে। পদ্মাসেতুর প্রায় ৪০ ভাগ কাজ শেষ। নির্ধারিত সময়ে পদ্মাসেতুর কাজ শেষ হবে এবং ২০১৮ সালের মধ্যে এই স্বপ্নের সেতু বাস্তবে রূপ নেবে। এটা আমাদের জিডিপিতে প্রবৃদ্ধির হার কমপক্ষে ১ দশমিক ২ শতাংশ বাড়াবে।
ড. ইউনূসের সমালোচনা করে মতিয়া চৌধুরী বলেন, সর্বোচ্চ আদালতে হেরেও গিয়েও গ্রামীণ ব্যাংকের বাড়িতে ৫ বছর ভাড়া না দিয়ে থাকেন তিনি।
রাষ্ট্রপতির ভাষণের উপর ধন্যবাদ প্রস্তাবের আলোচনায় আরও অংশ নেন বিএম মোজাম্মেল হক, নাজমুল হক প্রধান, আমাতুল কিবরিয়া কেয়া চৌধুরী, মোহাম্মদ সুবিদ আলী ভুঁইয়া, আয়েশা ফেরদাউস প্রমুখ।
বাংলাদেশ সময়: ২১২৬ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ০৯, ২০১৭
এসএম/এইচএ/