প্রায় চারশ’ বছর ধরে গ্রামীণ ঐতিহ্যকে ধারণ করে বগুড়ার গাবতলী উপজেলার পোড়াদহ এলাকায় চলে আসছে স্থানীয়ভাবে ‘মাছ আর বউমেলা’ নামে পরিচিত এ মেলা।
প্রত্যেক বছরের বাংলা সনের মাঘের শেষ বুধবার দু’দিনের এ মেলা বসে।
এবারের মেলা শুরু হয়েছিল বুধবার (০৮ ফেব্রুয়ারি)। বৃহস্পতিবার শেষদিন সন্ধ্যায়ও বিভিন্ন এলাকা থেকে আসা জামাই, স্বজন, দর্শনার্থী, ক্রেতা-বিক্রেতাদের পদভারে মুখরিত ছিল মেলা প্রাঙ্গন।
মেলায় আসা শাহাদৎ হোসেন বাবু, বদিউজ্জামান ও জাহাঙ্গীর আলম বাংলানিউজকে জানান, ঈদ-পূজার পরেই এ অঞ্চলের মানুষের অন্যতম বড় উৎসব এ মেলা। মেলা উপলক্ষে পোড়াদহসহ আশেপাশের ১৫-২০ গ্রামের মানুষজন তাদের স্বজনদের নিমন্ত্রণ করেন। নিমন্ত্রণ তালিকার শীর্ষে থাকে নতুন-পুরনো জামাই বাবুদের নাম।
এসব গ্রামের লোকজন জামাই-মেয়ে ও স্বজনদের নিমন্ত্রণ করে সবাই মিলে-মিশে মেলার আনন্দ উৎসব ভাগাভাগি করে উপভোগ করেন। শ্বশুরবাড়ি থেকে পাওয়া সেলামির সঙ্গে জামাইরা নিজেদের টাকা মিলিয়ে মেলায় ওঠা বড় বড় মাছ ও রকমারি মিষ্টান্ন সামগ্রী কেনেন।
এসব নিয়ে চলে আসেন শ্বশুরবাড়িতে। পরে ধুমধাম করে সেই মাছ রান্না হয়। এরপর চলে আনন্দ-উল্লাসের সঙ্গে খাওয়ার পালা।
মেলার প্রথম দিন সবাই মাছ-মিষ্টি কেনায় ব্যস্ত সময় পার করেছেন। দ্বিতীয় দিনের বউমেলায় নারীদের রকমারি খেলনা আর কসমেটিকস সামগ্রী কিনতে দেখা গেছে।
বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া শাকিল, কলেজছাত্রী ফারহানাসহ মেলায় আসা তরুণ-তরুণীরা বাংলানিউজকে বলেন, ‘আমরা আমাদের সংস্কৃতিকে ভুলতে বসেছি। অপসংস্কৃতি আমাদের গ্রাস করছে। গ্রামীণ এসব মেলা আজো বাঙালি সংস্কৃতির ইতিহাস-ঐতিহ্য বহন করে চলেছে। এর মধ্যে পোড়াদহ মেলাটি অন্যতম’।
বাংলাদেশ সময়: ২১৩০ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ০৯, ২০১৭
এমবিএইচ/এএসআর