দোকানে দোকানে গিয়ে বিভিন্ন জিনিস নেড়েচেড়ে দেখছিলেন তারা। খেলনা ও রকমারি কসমেটিক ছিল তাদের কেনাকাটার তালিকায়।
দামে পরতায় মেলার পরই হাতে থাকা বা কাঁধে ঝোলানো ভ্যানিটি ব্যাগ খুলে টাকা বের করেন। দোকানিকে টাকা বুঝিয়ে দিয়ে পছন্দের পণ্যটি হাতে তুলে নেন। এভাবে বউমেলায় গল্প আড্ডার তালে তালে চলে বউদের কেনাকাটা। বৃহস্পতিবার (০৯ ফেব্রুয়ারি) বগুড়ার গাবতলী উপজেলার ঐতিহ্যবাহী পোড়াদহ মেলায় আসা নারীদের সঙ্গে কথা বলে অনেক কিছুই জানা হয় এই অভিনব মেলাটির ব্যাপারে।
আগের দিন বুধবারই (০৮ ফেব্রুয়ারি) এ স্থানে বসেছে মেলা। মেলার প্রথমদিনের বেচাকেনায় প্রাধান্য পেয়েছিল মাছ ও মিষ্টিসহ বিভিন্ন সামগ্রী। তবে সেখানে সিংহভাগ ক্রেতা-বিক্রেতাই পুরুষ।
পরদিন একই স্থানে সকাল থেকে শুরু হয় বউমেলা। চলে বিকেল পর্যন্ত। আর এ মেলার ক্রেতা-বিক্রেতা শুধুই নারী। তবে সীমিত সংখ্যক দোকানে পুরুষ বিক্রেতাকেও দেখা যায়। ঐতিহ্যবাহী পোড়াদহ মেলা শুরু হওয়ার পর থেকেই চলে আসছে এ রীতি। এমনটাই জানা যায়। মাছের মেলা শেষ হওয়ার পর রাতের মধ্যেই খেলনা ও কসমেটিক দোকানিরা ব্যবসায় অনেকটা পরিবর্তন আনেন। নারীদের সাজসজ্জার রকমারি পণ্য দিয়ে ভরে তোলেন দোকানগুলো।
বাহারি ডিজাইনের কসমেটিক সামগ্রীর পসরা সাজিয়ে দোকানে দোকানে জাঁকিয়ে বসেন নারী দোকানিরা। পাশাপাশি কিছু দোকানে পুরুষ বিক্রেতাও নজরে পড়েছে। খেলনা সামগ্রীর দোকানগুলোর চিত্রও ছিল প্রায় একই রকম। এসব দোকানে ছিল নারীদের ছিল উপচেপড়া ভিড়। পাশাপাশি কিশোরী-তরুণী ও উঠতি বয়সের মেয়েরাও কেনাকাটায় পিছিয়ে ছিল না। শেষ মুহূর্তে মনপসন্দ জিনিস কিনতে তাদের দোকানে দোকানে ঘুরতে দেখা যায়। দেখা যায় দরদাম করতে। দুপুরের মধ্যে মেলা-এলাকা বিভিন্ন বয়সী নারীদের পদভারে মুখরিত হয়ে ওঠে।
রাবেয়া বেগম, হোসনে আরা, নার্গিস বেগম বাংলানিউজকে জানান, প্রথমদিন মেলায় প্রচণ্ড ভিড় থাকে। এদিন মাছ-মিষ্টি বেচা-বিক্রিতে লাখো মানুষের ঢল নামে। যাদের সিংহভাগই পুরুষ। এ কারণে মেলায় যাওয়া হয়ে ওঠে না। পরদিনের মেলা শুধুই নারীদের জন্য বলে নারীদের উপস্থিতিটাই মুখ্য। তারা আরো জানান, বউমেলায় পুরুষ মানুষরা আসেন না। মেলার রীতি অনুযায়ী এদিন মেলায় পুরুষদের আসতে মানা। তাই তাদের জন্য সুবিধা হয়। তারা মেলায় আসেন। ঘোরাঘোরি করেন। স্বজনের সঙ্গে গল্প করেন। আড্ডা দেন। সঙ্গে পছন্দের প্রিয় জিনিসগুলো ক্রয় করেন।
সাবিনা, উম্মে সালমা, বিউটি খাতুন, সুমি ইসলাম বাংলানিউজকে জানান, এ মেলা থেকে প্রত্যেক বছর তারা বিভিন্ন কসমেটিক ও ইমিটেশন সামগ্রী কেনেন। পাশাপাশি ছোটদের জন্য খেলনা ও সাংসারিক প্রয়োজনে ব্যবহার করা যায়-এমন সব জিনিসপত্রও ক্রয় করেন।
বাংলাদেশ সময়: ২১৩৫ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ০৯, ২০১৭
এমবিএইচ/জেএম