আগুন লাগার কারণ জানতে তিনটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হলেও একটি কমিটিও তদন্ত প্রতিবেদন দিতে পারেনি।
ঘটনার পর ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তর, ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি) এবং ডিএনসিসি মার্কেট সমিতির পক্ষ থেকে পৃথক তিনটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়।
গত ২ জানুয়ারি দিবাগত রাতে ডিএনসিসি মার্কেটে আগুন লাগে। আগুন লাগার কিছুক্ষণ পরেই ধসে পড়ে মার্কেটের একাংশ। ফায়ার সার্ভিসের ১৯টি ইউনিট চেষ্টা করে পরদিন বিকালে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে।
অগ্নিকান্ডের পর থেকে ব্যবসায়ীদের পক্ষ থেকে বার বার নাশকতার অভিযোগ তোলা হলেও এমন অভিযোগ নাকচ দেয় সিটি করপোরেশন কর্তৃপক্ষ। তবে, ঘটনা পরিকল্পিত নাকি দুর্ঘটনা তার উত্তর আটকে রয়েছে তদন্ত প্রক্রিয়াতেই।
ঘটনার কারণ খুঁজতে ফায়ার সার্ভিসের পরিচালক লে. কর্নেল মোশাররফ হোসেনকে প্রধান করে সাত সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। কমিটিকে ১৫ দিনের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন দিতে বলা হয়। কিন্তু আজও তা সম্ভব হয়নি।
তদন্ত প্রতিবেদন বিষয়ে জানতে চাইলে মোশাররফ হোসেন বাংলানিউজকে বলেন, আলামত সংগ্রহ ও সাক্ষ্য গ্রহণে সময় লেগেছে বলে নির্ধারিত সময়ে প্রতিবেদন দেওয়া সম্ভব হয়নি। আমরা ক্ষতির পরিমানের তালিকাসহ সকল তথ্য উপাত্ত সংগ্রহ প্রায় শেষ করেছি। সেগুলো যাচাই করা হচ্ছে। আশা করছি, অল্প কিছুদিনের মধ্যেই চূড়ান্ত প্রতিবেদনটি দাখিল করতে পারব।
ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) অতিরিক্ত কমিশনার দিদার আহম্মদকে প্রধান করে পুলিশের পাঁচ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। এ কমিটিকে সাত দিনের মধ্যে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে কমিটির সদস্য গুলশান বিভাগের উপ-কমিশনার (ডিসি) মোশতাক আহমেদ খান বাংলানিউজকে বলেন, তদন্তের স্বার্থেই বাড়তি সময় লেগেছে। প্রতিবেদনের আগে এ বিষয়ে কিছুই বলা যাচ্ছে না।
এদিকে, সাবেক বিচারপতি শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিককে প্রধান করে তিন সদস্যের কমিটি গঠন করে ডিএনসিসি মার্কেট দোকান মালিক সমিতি। কমিটিকে দুই সপ্তাহের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেওয়ার কথা বলা হয়েছিল।
এ প্রসঙ্গে দোকান মালিক সমিতির সভাপতি তালাল রেজবী বাংলানিউজকে বলেন, তদন্ত প্রতিবেদন দিতে আরো সময় লাগবে। ফায়ার সার্ভিস ও পুলিশের তদন্ত প্রতিবেদনের পর আমাদের কমিটি প্রতিবেদন দাখিল করবে।
বৃহস্পতিবার ডিএনসিসি মার্কেটে সরেজমিনে দেখা যায়, অগ্নিকান্ডে মার্কেটের যে অংশটি ধসে পড়েছে, ধ্বংসস্তুপ সরানোর পর সেখানে অস্থায়ী দোকান তৈরির কাজ করছে সিটি করপোরেশন কর্তৃপক্ষ। বাঁশ ও ত্রিপল দিয়ে বানানো এসব দোকানে পুনর্বাসন করা হবে ব্যবসায়ীদের।
ধসে পড়া ডিএনসিসি কাঁচা মার্কেটের দোতলা ভবনে ২৯১টি স্থায়ী দোকান ছিল। ২য় তলার ব্যবসায়ীদের জন্য মার্কেটের সামনের অংশে ও নিচতলার ব্যবসায়ীদের জন্য ধসে পড়া মার্কেটের স্থানে অস্থায়ী দোকান বানানো কাজ প্রায় শেষ পর্যায়ে রয়েছে।
কাঁচা মার্কেট সমিতির সভাপতি শের মোহাম্মদ বাংলানিউজকে বলেন, সিটি করপোরেশন জানিয়েছে আগামী দুই-তিন দিনের মধ্যেই অস্থায়ীভাবে দোকান চালু সম্ভব হবে। নতুন ভবন সম্পর্কে সিটি করপোরেশন এখনো কিছু জানায়নি। আপাতত আমরা এই অস্থায়ী দোকানেই ব্যবসা চালিয়ে যাব।
অগ্নিকান্ডের পর ক্ষতির পরিমান জানতে দোকান প্রতি ফরম বিতরণ করে কমিটি। সে হিসেবে অগ্নিকান্ডে প্রায় দুই হাজার কোটি টাকার ক্ষতি হয় বলে জানান তিনি।
বাংলাদেশ সময়: ০০৫৮ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ০৯, ২০১৭
পিম/এমএমকে