ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ২ মাঘ ১৪৩১, ১৬ জানুয়ারি ২০২৫, ১৫ রজব ১৪৪৬

জাতীয়

যুক্তরাষ্ট্র-প্রবাসীদের আপাতত দেশে না ফেরাই উত্তম

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৩২৯ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১২, ২০১৭
যুক্তরাষ্ট্র-প্রবাসীদের আপাতত দেশে না ফেরাই উত্তম বিভাজনের বিরুদ্ধে অভিবাসীদের বিক্ষোভ। ছবি: সংগৃহীত

ঢাকা: ৭টি মুসলিম দেশের বিরুদ্ধে ঢালাওভাবে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের নির্বাহী আদেশ নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রে বসবাসরত বাংলাদেশিদের সতর্ক দৃষ্টি রাখার পরামর্শ দিয়েছেন কূটনীতিকরা। বিশেষ করে যেসব প্রবাসী বাংলাদেশে ভ্রমণে আসতে চান তাদেরকে আপাতত  দেশে না এসে যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থান করে পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করতে বলেছেন তারা।  

যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশের সাবেক রাষ্ট্রদূত হুমায়ুন কবীর বাংলানিউজকে শনিবার (১১ ফেব্রুয়ারি) বলেন, মার্কিন কোর্ট এরই মধ্যে ডোনাল্ড ট্রাম্পের নিষেধাজ্ঞার ওপর স্থগিতাদেশ দিয়েছে। এ নির্বাহী আদেশের কার্যকারিতা আপাতত নেই।

তবু বিপদ এখনো কাটেনি। সেখানে ইমিগ্রেশন নিয়ে কী কী পরিবর্তন হচ্ছে এ বিষয়গুলো খেয়াল রাখতে হবে। সে পরিবর্তনের আলোকেই প্রবাসীদের করণীয় ঠিক করতে হবে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে কিন্তু আইনের শাসন খুবই কড়া ও পক্ষপাতহীন। রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানগুলো স্বাধীন ও নিরপেক্ষ। ডোনাল্ড ট্রাম্প নির্বাহী আদেশ দিলেও আদালতে সংবিধানের মৌল স্পিরিটের বিরোধী এ-আদেশ হালে পানি পায়নি। কোর্ট অসাংবিধানিক এই আদেশকে ঠিকই স্থগিত করে দিয়েছে। বাংলাদেশিদের কোনো সমস্যা হলে তাদের মানসিকভাবে প্রস্তুত থাকতে হবে। প্রয়োজনে কোর্টের দ্বারস্থ হতে হবে। যদিও এ মুহূর্তে সেটার দরকার নেই। কারণ শুধু ডোনাল্ড ট্রাম্প নন, অ্যাটর্নি জেনারেলের অফিস,  ইমিগ্রেশন ডিপার্টমেন্ট, কাস্টমস, এ-সময়ে কী ধরনের পদক্ষেপ নেয় তা খুব মনোযোগ দিয়ে দেখতে হবে।  

হুমায়ুন কবীর আরও বলেন, এটা খেয়াল রাখতে হবে যে, নিষেধাজ্ঞার টার্গেট এই ৭টি দেশের বাইরে নতুন করে আরো দেশের নাগরিকদের বিরুদ্ধে ট্রাম্প প্রশাসন এহেন বৈরী পদক্ষেপের পাঁয়তারা করতে পারে। এদিকটা আমাদের মাথায় রাখতে হবে। তবে অহেতুক অতিরিক্ত উদ্বিগ্ন বা শংকিত হবার কারণ নেই। যুক্তরাষ্ট্রে যারা নাগরিকত্ব পেয়ে গেছেন তাদের বাংলাদেশে যাওয়া-আসায় বাধা নেই। কিন্তু যারা এখনও নাগরিকত্ব পাননি তাদের আপাতত দেশে ফেরাটা হবে ঝুঁকিপূর্ণ এবং ভুল। তাদের এখন দেশে আসা উচিৎও নয়। কারণ যারা ওখানে অনিবন্ধিত অবস্থায় আছেন, তাদের আপাতত যু্ক্তরাষ্ট্রেই থাকা উচিৎ। যদি বলা হয়, তাদেরকে চলে যেতে হবে তখন অবস্থা বুঝে ব্যবস্থা নেওয়া যাবে।  
মুসলিমদের বিরুদ্ধে যে অবস্থান ট্রাম্প নিয়েছেন তার প্রতিবাদ কিন্তু উদারমনা ইহুদিরাও করছে। তাই প্রয়োজন হলে অন্যে দেশের মানবতাবাদী মুসলিম,হিন্দু,খৃষ্টান ও ইহুদি---সবার সঙ্গে হাত মিলিয়ে কাজ করতে হবে।  

সাবেক রাষ্ট্রদূত আশফাকুর রহমানও এইদিন বাংলানিউজকে বলেন, এখন সব কিছুই সতর্কভাবে পর্যবেক্ষণ করতে হবে। কোর্ট এরই মধ্যে ট্রাম্পের আদেশের কার্যকারিতা স্থগিত করে দিয়েছে। ট্রাম্পকে বুঝতে হবে তার ‘লিমিট অব পাওয়ার’ সম্পর্কে। কোর্টের স্থগিতাদেশ বলবৎ থাকলে এটি ধীরে ধীরে ঠিক হয়ে যাবে। এখন বাংলাদেশিদের করার কিছু্‌ নেই। এখনতো বাংলাদেশিরা টার্গেটও নয়। ৭টি মুসলিম দেশ ছাড়াও আরো কিছু দেশকে সেকেন্ড র‌্যাংকিং—এর আওতাভূক্ত করে রেখেছে ট্রাম্প প্রশাসন। এখন ওয়েট অ্যান্ড সি। যুক্তরাষ্ট্র থেকে প্রবাসীরা শীতকালেই বেশি বেড়াতে আসেন। যারা যুক্তরাষ্ট্রে থাকবেন  এয়ারপোর্টে গিয়ে তাদের নিজেদের এক্সপোজড করার কোনো দরকার দেখছি না।
তিনি বলেন, এ-নির্বাহী আদেশের বিরুদ্ধে কোর্টের পরিধি আরো বাড়তে পারে। আমার মনে হয়, আপিল কোর্ট বিশেষ পদক্ষেপ নেবে, এনিয়ে যেন বেশি বাড়াবাড়ি না হয়। কিন্তু ট্রাম্প ক্ষমতায় এসে রীতিমতো যেন রেপিড ফায়ার শুরু করে দিয়েছেন। এটা তো মানুষ মেনে নিতে পারছে না। যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশি বেশি নেই। সেখানে তাদের লবিং পাওয়ারটাও কম। অন্য দিকে বাংলাদেশিদের অ্যালায়েন্স নেই।
চীন, জার্মানি সিঙ্গাপুরে নিযুক্ত বাংলাদেশের সাবেক এ রাষ্ট্রদূত বলেন, যুক্তরাষ্ট্রে এখন অবস্থান করলে আইনিন সমর্থন বেশি পাওয়া যাবে। যুক্তরাষ্ট্রের বাইরে গেলে তখন কোনো তা পাওয়া সম্ভব হবে না। তাছাড়া বাংলাদেশিদের অ্যালায়েন্স গড়ে তোলা খুবই দরকার।  

বাংলাদেশ সময়: ০৯১৮ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১২, ২০১৭
কেজেড/জেএম

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।