যানজটের অন্যতম কারণ হিসেবে ব্যক্তিগত গাড়ি চিহ্নিত হলেও অনেকে দোষারোপ করছেন যত্রতত্র গাড়ি পার্কিংকে। শহরের গুরুত্বপূর্ণ রাস্তার দুই পাশেই এসব গাড়ি সারি সারি পার্কিং করে রাখতে দেখা যায়।
তাই, স্বল্প রাস্তার এই শহরে রাস্তায় পার্কিং বন্ধ করা গেলে অনেকাংশেই যানবাহনের এই জটলা থেকে পরিত্রাণ মিলবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
শনিবার(১১ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে রাজধানীর কাকরাইলে উইলস লিটল ফ্লাওয়ার স্কুলের বিপরীত দিকে সারিবদ্ধভাবে ব্যক্তিগত গাড়ি ও টেক্সিক্যাব পার্কিং করে রাখতে দেখা গেছে।
এখানে গাড়ি পার্কিংয়ের কারণ জানতে চাইলে ক্যাবচালক নরুল ইসলাম বাংলানিউজকে বলেন, ‘আমাদের রাস্তার গাড়ি তো রাস্তাতেই থাকবে। পার্কিংয়ের জায়গায় পার্কিং করলে তো আমরা যাত্রী পাব না। ’
গুলশান-২ এলাকায় রাস্তার পাশে পার্কিং করে রাখা ব্যক্তিগত গাড়ির চালক সোহেল বলেন, স্যার গাড়ি থেকে নেমে এখানে অপেক্ষা করতে বলল। তিনি আসলেই চলে যাব।
যত্রতত্র গাড়ি পার্কিংয়ের অপরাধে মাঝে মধ্যে বিভিন্ন এলাকায় দণ্ড দিয়েছে ট্রাফিক পুলিশ। কোনো গাড়ি রেকার বা হুইল লকার লাগালে সর্বনিম্ন ১২শ’ টাকা জরিমানা গুণতে হয় বলে জানান ট্রাফিক পুলিশ। ট্রাফিক পুলিশের এমন অভিযানের পরেও কিছুতেই যত্রতত্র পার্কিং কমানো যাচ্ছে না।
বনানী এলাকায় নাম প্রকাশে এক ট্রাফিক পুলিশ সদস্য বলেন, দেখেন রাস্তার পাশে রেস্টুরেন্ট, সেখানে তো মানুষ খেতে আসবেই। কিন্তু সেই মানুষটি যে গাড়িতে করে আসবে সেটা পার্কিং করার কোনো ব্যবস্থা রাখা হয়নি। আবার অনেকে গাড়ি থামিয়ে গুরুত্বপূর্ণ কাজের জন্য ৫-১০ মিনিট সময় চায়। কিন্তু তার ৫ মিনিটের জন্য রাস্তাতে একটা জটলা সৃষ্টি হয়ে যায়।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি) ট্রাফিক উত্তর বিভাগের উপ-কমিশনার (ডিসি) প্রবীর কুমার রায় বাংলানিউজকে বলেন, সারা শহর জুড়েই পার্কিংয়ের জায়গার সমস্যা রয়েছে। দেখা গেল, অনেকে ভবন করার সময় পার্কিং স্পেস রেখেছে, কিন্তু পরে সেখানে দোকান করে ভাড়া দিয়েছে। নগরজুড়ে প্রতি ভবনে পার্কিং ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে হবে। আবার অনেক ভবনের নিচে পার্কিংয়ের ব্যবস্থা থাকলেও ২০-৩০ টাকা খরচ করে গাড়ি চালক পার্কিং করতে চায় না। কোটি টাকার গাড়ি কিনে ৩০ টাকার জন্য রাস্তায় গাড়িটি পার্কিং করে।
যত্রতত্র পার্কিং ঠেকাতে ট্রাফিক বিভাগের বিভিন্ন উদ্যোগ তুলে ধরে তিনি বলেন, রাস্তায় ট্রাফিক আইন মেনে চলার জন্য আমরা নিয়মিত মাইকিং করি, লিফলেট বিতরণ, বিভিন্ন স্থানে নিজেরা গিয়ে অনুরোধ করি, চিঠি দিয়ে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্যও বলি।
শুধুমাত্র রেকারিং করে এ সমস্যার স্থায়ী সমাধান হবে না উল্লেখ করে তিনি বলেন, এজন্য জনগণকেই সচেতন হতে হবে। বর্তমানে যে অবস্থায় আছে, সে অবস্থাতেই আরও পার্কিং স্পেস বাড়াতে হবে।
ভবনে কোনো একটি প্রতিষ্ঠান খোলার আগে পর্যাপ্ত পার্কিং স্পেস নিশ্চিত করতে হবে বলে জানান তিনি।
বাংলাদেশ সময়: ১৫৪৪ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১২, ২০১৭
পিএম/পিসি