এ ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার শেখ রেজাউল করিম বাদী হয়ে হাছিনা বেগমকে আসামি করে শেরেবাংলা নগর থানায় একটি মামলা দায়ের করেছেন।
রোববার (১২ ফেব্রুয়ারি) দুপুর দেড়টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. কামাল উদ্দিন আহাম্মদ সাংবাদিকদের এ জালিয়াতির কথা জানান।
উপাচার্য বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ে ২০১৬-১৭ শিক্ষাবর্ষে ভর্তি পরীক্ষায় অকৃতকার্য হওয়ার পরও ফাহিম জাহান দৃষ্টি নামে এক শিক্ষার্থীকে বিশেষ কোটায় বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি করানোর জন্য প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে একটি ভুলে ভরা আদেশ পত্র ও একটি সুপারিশপত্র আসে উপাচার্য বরাবর। গত ২৩ জানুয়ারি দেওয়া প্রধানমন্ত্রীর স্বাক্ষরসহ এ আদেশ পত্রে ফাহিম জাহান দৃষ্টিকে প্রধানমন্ত্রীর সু-পরিচিত এবং নিকটতাত্মীয় উল্লেখ করে বিশেষ কোটায় ভর্তি করতে আদেশ দেওয়া হয়।
তিনি বলেন, আমার দৃঢ় বিশ্বাস ছিল, প্রধানমন্ত্রী এমন অনৈতিক সুপারিশ কখনোই করবেন না। পত্রে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার স্বাক্ষর দেখেও সন্দেহ হয়। পরে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে আদেশ পত্রটির মিথ্যা বলে প্রমাণ হয়। হাছিনা বেগম এ পর্যন্ত তিনবার সুপারিশপত্র নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ে তদবির করতে এসেছেন। সুপারিশ করা পত্রগুলোর অসত্যতার প্রমাণ পেয়েই আমরা তাকে আটক করিয়েছি।
সংবাদ সম্মেলনে উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. সেকেন্দার আলী বলেন, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের ভুয়া প্যাডে বিশেষ কোটায় ভর্তির আদেশ পত্রে অন্তত দশটি ভুল রয়েছে। জালিয়াতকারীরা ডেপুটি স্পিকার ফজলে রাব্বি মিয়া, সংসদ সদস্য শেখ ফজলুল করিম সেলিম, পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের সচিব সফিকুল ইসলাম এবং প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে প্রটোকল অফিসার মনজিলা ফারুকের স্বাক্ষরও নকল করেছে।
ভর্তিচ্ছু ফাহিম জাহান দৃষ্টিকে অপরিচিত দাবি করে আটক হাছিনা বেগম সাংবাদিকদের বলেন, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের প্রটোকল অফিসার মনজিলা ফারুক ও সাইফুজ্জামান শিখরের নির্দেশে তিনি এ সুপারিশপত্র উপাচার্য অফিসে নিয়ে আসেন।
হাছিনা বেগম নিজেকে গণভবনের বাবুর্চি হিসেবে পরিচয় দেন। এ সময় গণভবনে প্রবেশের জন্য একটি পরিচয়পত্র দেখান।
এ ব্যাপারে প্রধানমন্ত্রীর উপ-প্রেস সচিব আশরাফুল আলম খোকন ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে সাংবাদিকদের বলেন, প্রাথমিকভাবে দেখেই মনে হচ্ছে আদেশ পত্রগুলো প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের না। এ সময় তিনি হাছিনা বেগমের কাছে থাকা পরিচয়পত্রটি ভুয়া বলে নিশ্চিত করেন।
শেরেবাংলা নগর থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মালেক সাংবাদিকদের বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে বাদী হয়ে মোছা. হাছিনা বেগমকে আসামি করে থানায় মামলা করা হয়েছে। তদন্ত সাপেক্ষে পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
বাংলাদেশ সময়: ১৭১০ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১২, ২০১৭ (আপডেট সময়: ২১০০ ঘণ্টা)
পিএম/এসআরএস/জিপি/ওএইচ/এসএইচ