ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ২ মাঘ ১৪৩১, ১৬ জানুয়ারি ২০২৫, ১৫ রজব ১৪৪৬

জাতীয়

বসন্তকে স্বাগত জানাতে খুবিতে বাহারি প্রজাতির ফুল

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬০২ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১২, ২০১৭
বসন্তকে স্বাগত জানাতে খুবিতে বাহারি প্রজাতির ফুল খুবিতে বাহারি প্রজাতির ফুল, ছবি: বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

খুলনা: ফুলে-ফুলে ভরে গেছে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় (খুবি) ক্যাম্পাস। গাছ ঠাসা ফোঁটা এসব ফুলের মিষ্টি সুবাসে পাগল পারা মৌমাছি আর প্রজাপতিরা। যা দেখে মুগ্ধ সবাই।

বাহারি প্রজাতির এসব ফুল এমনভাবে ফুটেছে যেন রাত পোহালেই সোমবার (১৩ ফেব্রুয়ারি) বসন্তকে গভীর উষ্ণতায় স্বাগত জানাবে।

বসন্তের আগে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে ফুঠেছে নানা বর্ণের ফুল।

ডালিয়া, জিনিয়া, গাঁদা, গোলাপের মতো নাম না জানা নানা বর্ণের ফুল তো আছেই। আরও ফুটেছে নতুন-নতুন নামের নানা আকার ও বর্ণের অসংখ্য ফুল।

রয়েছে আকাশি সাদা স্নোবল, সালভিয়া, দোপাটি, ক্যালেন্ডোলা, দায়েনথাঁচ, ফ্লোগর্স, ইন্টালিয়াম, স্নাকড্রাগন, পেনজি, কারিয়াফছি, ভারবিনা, পিটুনিয়া, স্টার গোল্ড, মৌচন্ডা, পানচাটিয়া, এ্যালমন্ডা, গ্লাডিয়া তালপাম্প, চন্দ্রমল্লিকা, ইনকা গাদা, চাইনিজ গাদা, জাম্বুস গাঁদা, মোরগ ঝুঁটি, কসমস, জুঁই, চামেলি ছাড়াও আছে টগর, বেলি এবং সাইকাস, ক্রিসমাস, জবা, পাতাবাহারসহ নানা জাতের ফুলের সমাহার। সব মিলিয়ে ত্রিশোর্ধ্ব জাতের ফুল ফুটেছে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে।

প্রস্ফুটিত এসব ফুলে এখন সুশোভিত বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস। ফুলে ফুলে সজ্জিত ক্যাম্পাস যেন শিল্পীর তুলিতে আঁকা নয়ন জুড়ানো অপরূপ কোনো ছবি।

ফুলে সুশোভিত ক্যাম্পাস দেখতে আসছেন প্রতিদিন প্রচুর দর্শনার্থী। তারা ফুলের বাগানে ঘুরছেন। ছবি তুলতেই যেন তারা বেশি ব্যস্ত। তবে সেলফি তুলতেও ভুলছেন না। বেশির ভাগই আসছেন সপরিবারে। আবার দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে খুলনায় শিক্ষা সফরে বা পিকনিকে আসা শিক্ষার্থীর এমন ফুলময় পরিবেশ বেশ মুগ্ধ।

এবার সবচেয়ে বেশি ফুল ফুটেছে উপাচার্যের বাসভবনের ভেতরে ও বাইরে।

এরপর শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ প্রশাসন ভবনের সামনে। আবাসিক হলগুলোতেও ফুটেছে নানা বর্ণের ফুল। তবে খানবাহাদুর আহসানউল্লা হল এবং অপরাজিতা হলে ফুলের সংখ্যা বেশি। আচার্য জগদীশ চন্দ্র বসু একাডেমিক ভবনের সামনেও এবার নতুন জাতের ফুল ফুটেছে।

খুবির জনসংযোগ ও প্রকাশনা বিভাগের পরিচালক (ভারপ্রাপ্ত) এস এম আতিয়ার রহমান বাংলানিউজকে বলেন, খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. মোহাম্মদ ফায়েক উজ্জামান ক্যাম্পাসে ফুল চাষে বিশেষভাবে আগ্রহী। গত কয়েক বছর ধরেই তিনি ফুলের বাগান সৃজনে এবং নতুন নতুন ফুল চাষে উদ্যোগ নিয়েছেন। তার তত্ত্বাবধানেই বিশেষ করে তার বাসভবনের বাইরে, ভেতরে এবং প্রশাসনিক ভবনের সামনে পরিকল্পিতভাবে শীতকালীন ফুল চাষ হয়েছে। প্রতিদিন সকাল-বিকেল ঘুরে-ঘুরে তিনি দেখেন কোথায় কী সমস্যা? প্রয়োজনীয় নির্দেশনাও দেন।

এ ব্যাপারে উপাচার্য প্রফেসর ড. মোহাম্মদ ফায়েক উজ্জামান বলেন, ফুলের প্রতি প্রতিটি মানুষের আকর্ষণ আছে। ফুল সবাই ভালোবাসেন। যে কারণে ক্যাম্পাসকে ফুলে ফুলে জানানো হয়েছে।

তিনি জানান, আগামীতে ক্য‍াম্পাসের যেসব জায়গায় ফুল গাছ লাগানো হয়নি। সেখানেও লাগানো হবে।

খুবি উপচার্যের বাসভবনের সামনে নানা প্রজাতির ফুল, ছবি: বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কমবিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাস্টেট (সম্পত্তি) শাখার উপ-রেজিস্ট্রার কৃষ্ণপদ দাশ জানান, এ বছর নানা জাতের ফুলের চারা লাগানো হয়েছে। এর মধ্যে কেবল গাঁদা ফুলই আছে ৪-৫ জাতের। অন্যান্য ফুলের নতুন-নতুন কয়েকটি জাতও এবার লাগানো হয়েছে। বৈরী আবহাওয়া সত্ত্বেও এবার ভালোভাবে ফুল ফোটায় আমরা খুশি।

তিনি বলেন, উপাচার্যের ব্যক্তিগত আগ্রহ ও তত্ত্বাবধানের কারণে সময় মতো ফুল চাষ সম্ভব হয়েছে। তবে এবার আবহাওয়ার যে অবস্থা তাতে আশঙ্কায় আছি। কুয়াশা তুলনামূলক কম হলেও ভয় বৃষ্টি নিয়ে। বৃষ্টি হলেই সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হবে। প্রতিদিন প্রচুর দর্শক আসছেন। আমরা তাদের ফুলের সৌন্দর্য উপভোগ করাতে এবং ছবি তুলতে বাধা দিই না। তবে ফুল যাতে কেউ না ছিঁড়ে সে অনুরোধ জানাই। কারণ ফুল গাছে থাকতেই শোভা বৃদ্ধি পায়।

উপাচার্যের ভবনের সামনে এবার যে দু’টি স্থানে নতুন বাগানে সবচেয়ে প্রজাতির ফুল ফুটেছে। সে বাগানের মালি মো. রেজাউল ইসলাম বলেন, এবার প্রথম ফুল লাগানো হয়েছে। মাটির অবস্থা এখনও ততটা উপযোগী না হলেও ভালো ফুল ফুটেছে। উপাচার্য স্যার প্রতিদিন এই বাগান দেখেন। আমাকে নানা নির্দেশনা দেন। আমি সব সময়ই খুব যত্ন নিচ্ছি। আগামী বছর আরও ভালো হবে আমার আশা।  

এদিকে, ঋতুরাজ বসন্তকে স্বাগত জানাতে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা ভাষা ও সাহিত্য ডিসিপ্লিনের উদ্যোগে সোমবার ১ ফাল্গুন দিনব্যাপী বসন্তবরণ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে। প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন উপাচার্য প্রফেসর ড. মোহাম্মদ ফায়েক উজ্জামান এবং বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন ছাত্র বিষয়ক পরিচালক প্রফেসর ড. অনির্বাণ মোস্তফা।

এ উপলক্ষে সকাল ৭টায় ক্যাম্পাসের কবি জীবনানন্দ দাশ একাডেমিক ভবনের সামনে থেকে এক বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা বের করা হবে। এছাড়া সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও নাট্য পরিবেশনা প্রথমপর্বে সকাল ৭টা ৩০ মিনিটে এবং দ্বিতীয় পর্বের অদম্য বাংলা চত্বরে বিকেল ৩টা ৩০ মিনিটে অনুষ্ঠান পরিবেশত হবে।

বাংলাদেশ সময়: ২১৪০ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১২, ২০১৭
এমআরএম/টিআই

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।