সোমবার (১৩ ফেব্রুয়ারি) সচিবালয়ে অনুষ্ঠিত মন্ত্রিসভার নিয়মিত বৈঠকে পদ্মাসেতু প্রকল্প নিয়ে আলোচনায় প্রধানমন্ত্রী এ কথা বলেন।
বৈঠক শেষে মন্ত্রিপরিষদ সচিব মোহাম্মদ শফিউল আলম সাংবাদিকদের বলেন, বৈঠকে অনির্ধারিত আলোচনায় পদ্মাসেতু নির্মাণে বাংলাদেশের অবস্থান নিয়েও কথা হয়।
মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, যদি পদ্মাসেতু আরও আগে হতো তাহলে ১-২ শতাংশ ডিজিপি বৃদ্ধি পেতো। অনেক আগে সেতুটি নির্মাণ হয়ে যেতো। ২০১৪ সালে পদ্মাসেতুর একটা বড় অবয়ব দেখতে পেতাম। এই অভিযোগের কারণে সেতুটির কাজ পিছিয়ে গেছে।
‘প্রধানমন্ত্রীর চ্যালেঞ্জ ছিল, আমরা প্রমাণ করেছি, কোনো দুর্নীতি করিনি, এটা মূল কথা’।
শফিউল আলম বলেন, বর্তমান সরকারের অবস্থান ছিল পদ্মসেতুতে কোনো দুর্নীতি হয়নি এবং ওয়ার্ল্ড ব্যাংককে চ্যালেঞ্জ করা হয়েছিল, যদি তারা দুর্নীতির কথা বলে তবে তাদেরই তা প্রমাণ করতে হবে এবং তারা প্রমাণ করতে ব্যর্থ হয়েছে। বাংলাদেশ সরকারের ভাবমূর্তি আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে অনেক উজ্জ্বল হয়েছে, সেজন্য মন্ত্রিসভা প্রধানমন্ত্রীকে আনুষ্ঠানিকভাবে অভিনন্দন জ্ঞাপন করেছে।
গত ১০ ফেব্রুয়ারি (শুক্রবার) কানাডার একটি আদালত পদ্মাসেতু প্রকল্পের দুর্নীতির অভিযোগটি খারিজ করে দেন। দুর্নীতির অভিযোগে বিশ্বব্যাংক অর্থসহায়তা থেকে পিছুটান দেয়। কানাডার আদালতের রায়ের পরিপ্রেক্ষিতে মন্ত্রিসভায় সবাই ‘স্বতঃস্ফূর্তভাবে’ আলোচনায় অংশ নিয়েছেন।
তিনি বলেন, এডিবির একটা স্ট্যাডি হচ্ছে- পদ্মাসেতু হলে বাংলাদেশের জিডিপি ১ দশমিক ২ শতাংশ বেড়ে যাবে। এখন (জিডিপি) ৭ দশমিক ১ শতাংশের আশেপাশেই থাকে। যদি পদ্মাসেতু আরও আগে হতো তাহলে প্রতি বছর ১ দশমিক ২ শতাংশ করে ৮-৯ শতাংশ গ্রোথ হতো, এটা থেমে গেছে।
বিশ্বব্যাংক পদ্মাসেতু প্রকল্প থেকে সরে না গেলে ২০১৪ নাগাদ হয়ত পদ্মাসেতুর বড় অবয়ব দেখতে পেতাম জানিয়ে তিনি বলেন, এতোদিনে ব্রিজটি বাস্তবে পেয়ে যেতাম। কিন্তু ওই ঘটনার কারণে উন্নয়নটা অনেক পিছিয়ে গেছে। ২০১৬ সালে আমরা পদ্মাসেতুর ওপর দিয়ে যেতে পারতাম, সেটা পিছিয়ে গেছে; সরকারের ভাবমূর্তিও নষ্ট হয়েছে।
পদ্মাসেতু প্রকল্প নিয়ে প্রধানমন্ত্রী কী বলেছেন জানতে চাইলে তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রীর পুরনো অবস্থান। উনার চ্যালেঞ্জ ছিল বিশ্বব্যাংক যেহেতু অভিযোগ তুলেছে, তাদেরই প্রমাণ করতে হবে যে আমরা দুর্নীতি করেছি। আমরা প্রমাণ করেছি যে আমরা কোনো দুর্নীতি করিনি। বিশ্ব ব্যাংক প্রমাণ দিতে পারেনি। কানাডার আদালতের রায়েই প্রমাণ হয়েছে এখানে কোনো দুর্নীতি হয়নি।
বিশ্ব ব্যাংকের কাছে ক্ষতিপূরণ চাওয়া হবে কিনা, এমন প্রশ্নে মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, সেটা সরকারের সিদ্ধান্ত।
তৎকালীন মন্ত্রী মামলা করতে চেয়েছেন, এ বিষয়ে আলোচনা হয়েছে কিনা- জানতে চাইলে তিনি বলেন, ক্ষতিগ্রস্তরা মামলা করলে করতে পারেন, সেটা উনাদের বিষয়।
বাংলাদেশ সময়: ১৪০৫ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১৩, ২০১৭/আপডেট ১৬৩০ ঘণ্টা
এমআইএইচ/জিপি/বিএস/আইএ