সোমবার (১৩ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) মিলনায়তনে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ দাবি করা হয়।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য উপস্থাপন করেন- বিএমএ রাজশাহী শাখার সাধারণ সম্পাদক ডা. খলিলুর রহমান।
এছাড়া উপস্থিত ছিলেন- বিএমএ কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি ডা. তবিবুর রহমান শেখ, স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদের (স্বাচিপ) কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক ডা. মহিবুল হাসান, বিএমএ রাজশাহীর সভাপতি ডা. এসআর তরফদার, রামেক অধ্যক্ষ ডা. আনোয়ার হাবিব প্রমুখ।
ডা. খলিলুর রহমান বলেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতাল ছাড়া দেশের আর অন্য কোথাও রোগীর কিডনি প্রতিস্থাপন সম্ভব নয়। কিডনি বের করে নিলে অন্য কোথাও তা সংরক্ষণও করা যায় না। আর ইচ্ছে করলেই রোগীর কিডনি বের করে অন্য কারও শরীরে প্রতিস্থাপন সম্ভব নয়। এর জন্য নিবিড় পর্যবেক্ষণ কেন্দ্র (আইসিইউ) সুবিধাসহ দক্ষ নার্স ও মেডিকেল সুযোগ-সুবিধা লাগে। তাই ডা. এমএ হান্নানের বিরুদ্ধে রোগীর কিডনি চুরি করে নেওয়ার অভিযোগ ভিত্তিহীন।
তিনি বলেন, ‘বিষয়টি নিয়ে বিতর্ক ওঠায় ওই রোগীর দু’টি কিডনি আছে কী না আগে তা পরীক্ষা-নিরীক্ষার প্রয়োজন ছিল। কারণ পরীক্ষার পর বিষয়টি নিশ্চিত হওয়া যেত। কিন্তু পরীক্ষা করার জন্য হাসপাতালের পক্ষ থেকে রোগীকে আনার জন্য তার বাড়িতে গাড়ি পাঠানো হলেও তিনি আসেননি। রহস্যজনক কারণে তিনি পরীক্ষা এড়িয়ে গিয়ে চিকিৎসকের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা করেছেন।
পাশাপাশি ঘটনা তদন্তে একটি কমিটিও গঠন করা হয়েছিল। তিনদিনের মধ্যে পুলিশকে প্রতিবেদন দেওয়ার জন্য কমিটিকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু রোগী পরীক্ষায় রাজি না হওয়ায় তদন্ত কমিটি কোনো প্রতিবেদন দিতে পারেননি। এর দায় সংশ্লিষ্ট ওই রোগী। এখানে চিকিৎসক সম্পূর্ণ নির্দোষ। ’
এর আগে বেলা ১১টার দিকে তারা রামেকের প্রধান ফটকের সামনের সড়কে একই দাবিতে মানববন্ধন করেন। এতে রামেকের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা অংশ নেন। প্রায় ঘণ্টাব্যাপী ওই মানববন্ধনে বিএমএ নেতারা বক্তব্য রাখেন। এ সময় ডা. হান্নানের বিরুদ্ধে দায়ের করা মামলা প্রত্যাহারেরও দাবি জানান।
২০১৫ সালের ১২ জুন নাটোর সদরের জনসেবা হাসপাতালে আসমা বেগম নামে এক রোগীর মূত্রনালিতে পাথরের কারণে ডান দিকের কিডনিতে একটি অস্ত্রোপচার হয়। সিংড়া উপজেলার ছোট চৌগ্রামের ফজলু বিশ্বাসের স্ত্রী আসমা বেগমকে অস্ত্রোপচারের ছয়দিন পর ওই হাসপাতাল থেকে ছুটি দিয়ে দেওয়া হয়।
সম্প্রতি শরীরিক সমস্যার কারণে আসমা বেগম তার পেটের আল্ট্রাসনোগ্রাম করেন। এতে তার ডান দিকের কিডনি দৃশ্যমান হয়নি। এ কারণে তার স্বজনরা গত ৩ ফেব্রুয়ারি জনসেবা হাসপাতালে গিয়ে অস্ত্রোপচারকারী চিকিৎসক এমএ হান্নানকে গালিগালাজ করেন। পরে অভিযোগের প্রেক্ষিতে নাটোর সদর থানা পুলিশ ওই দিন রাজশাহী মেডিকেল কলেজের চিকিৎসক ডা. হান্নানকে আটক করে।
পরে বিএমএ নেতৃবৃন্দ ও জেলা সিভিল সার্জনের হস্তক্ষেপে তাকে ছেড়ে দেওয়া হয়। এরপর ডা. হান্নানসহ ক্লিনিক কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে আদালতে কিডনি চুরির মামলা করেন আসমা বেগম।
বাংলাদেশ সময়: ১৮০৮ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১৩, ২০১৭
এসএস/জিপি/আরআই