ঢাকা, শুক্রবার, ২ মাঘ ১৪৩১, ১৭ জানুয়ারি ২০২৫, ১৬ রজব ১৪৪৬

জাতীয়

নবজাতককে দাফনে মদ্যপের হাতে তুলে দেন বাবা!

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫১২ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১৩, ২০১৭
নবজাতককে দাফনে মদ্যপের হাতে তুলে দেন বাবা!

নেত্রকোনা: সময় ও অর্থের অভাবে মৃত নবজাতক সন্তানকে দাফন করতে না পেরে ৩০০ টাকায় মদ্যপ ব্যক্তির হাতে তুলে দেন বাবা। পরে মদ্যপ সেই ব্যক্তি নবজাতকটিকে দাফন না করে বাক্সবন্দি করে রাতের আঁধারে মগড়া নদীর পানিতে ছুঁড়ে ফেলেন।

সোমবার (১৩ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে বাংলানিউজকে এক হতভাগ্য দরিদ্র বাবার দুঃখের এ কাহিনী বর্ণনা করেন নেত্রকোনার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (এএসপি) মো. ছানোয়ার হোসেন।

রোববার (১২ ফেব্রুয়ারি) বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে শহরের নাগড়া এলাকার মগড়া নদীর বেইলি সেতুর নিচ থেকে বাক্সবন্দি ওই ছেলে নবজাতকের গলিত মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।

পরে মরদেহ ডাক্তারি পরীক্ষার জন্য নেত্রকোনা আধুনিক সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়।

এ ঘটনায় থানায় একটি অপমৃত্যুর মামলা দায়ের করা হয়।

মামলার পর নবজাতকটির পরিচয় শনাক্ত ও ঘটনার রহস্য উদ্‌ঘাটনে তাৎক্ষণিক তদন্তে নামেন এএসপি ছানোয়ার। শহরের প্রতিটি হাসপাতাল ও ক্লিনিকে ছুটে যান তিনি। অবশেষে মধ্যরাতে মোক্তারপাড়ার এক প্রাইভেট হাসপাতালের ভর্তি রেজিস্টার দেখে পরিচয় মেলে ওই নবজাতকের।

জানা যায়, ওই নবজাতক কলমাকান্দা উপজেলার আবু বকর ও রেহেনা আক্তার দম্পতির সন্তান। গর্ভবতী স্ত্রীকে হাসপাতালে ভর্তি করিয়েছিলেন আবু বকর। পরে হাসপাতালে তার স্ত্রী মৃত ছেলে শিশু প্রসব করেন। আবু বকর মৃত শিশু ও স্ত্রীকে নিয়ে বাড়িতে ফিরতে চান। কোনোমতে হাসপাতালের বিল মিটিয়ে বাসস্ট্যান্ডে গেলেও রাত গভীর হওয়ায় কোনো বাস পাননি তিনি।

এ সময় স্ট্যান্ডে দেখা মেলে এক মদ্যপ ব্যক্তির।

সেই মদ্যপকে আবু বকর অনুনয় করেন, সন্তানকে দাফনে সাহায্য করতে। মদ্যপ সে প্রস্তাবে রাজি হয়ে বিনিময়ে দাবি করেন ৫০০ টাকা! কিন্তু আবু বকরের কাছে এতো টাকা না থাকায় ৩০০ টাকা দিতে রাজি হন।

এরপর মদ্যপ ব্যক্তিটি মৃত নবজাতককে দাফন না করে বাক্সবন্দি করে মগড়া নদীর বেইলি সেতুর নিচে ফেলে দেন।

*মগড়া নদী থেকে বাক্সবন্দি নবজাতকের মরদেহ উদ্ধার

বাংলাদেশ সময়: ২০০০ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১৩, ২০১৭
এনটি/এএসআর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।