ঢাকা, শুক্রবার, ৩ মাঘ ১৪৩১, ১৭ জানুয়ারি ২০২৫, ১৬ রজব ১৪৪৬

জাতীয়

বিএসসি’র বহরে আসছে এলএনজি ক্যারিয়ার ভেসেল

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১০২০ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১৪, ২০১৭
বিএসসি’র বহরে আসছে এলএনজি ক্যারিয়ার ভেসেল

ঢাকা: বাংলাদেশ শিপিং করপোরেশনের (বিএসসি) বহরে যুক্ত হচ্ছে দু’টি লিকুইড ন্যাচারাল গ্যাস (এলএনজি) ক্যারিয়ার ভেসেল। ৪০ হাজার কিউবিক মিটার ধারণ ক্ষমতার ক্যারিয়ার ভেসেলগুলো চট্টগ্রামের মহেশখালী দ্বীপে দেশের প্রথম এলএনজি ইমপোর্ট টার্মিনালে ব্যবহার করা হবে। টার্মিনালটি স্থাপন করতে যাচ্ছে পেট্রোবাংলা।

মঙ্গলবার (১৪ ফেব্রুয়ারি) সচিবালয়ে নৌ-পরিবহন মন্ত্রণালয়ের সভা কক্ষে দু’টি এলএনজি ক্যারিয়ার ভেসেল সংগ্রহ সংক্রান্ত নন-বাইন্ডিং সমঝোতা স্মারক (এমওইউ) স্বাক্ষরিত হয়েছে।

নৌ-পরিবহনমন্ত্রী শাজাহান খানের উপস্থিতিতে এমওইউতে স্বাক্ষর করেন বিএসসি’র ব্যবস্থাপনা পরিচালক কমোডর এম হাবিবুর রহমান ভূঁইয়া এবং  চায়নিজ ইনস্টিটিউট অব মেরিন অ্যান্ড অফসোর ইঞ্জিনিয়ারিং এইচবি কোম্পানি লিমিটেডের জেনারেল ম্যানেজার ইয়ান জুন।

নৌ-মন্ত্রী জানান, এলএনজি ক্যারিয়ার ভেসেল দু’টির কাজ মূল চুক্তি সম্পাদনের ১৮ মাসের মধ্যে সম্পন্ন হবে। তবে ভেসেল দু’টির মূল্য নির্ধারণ করা হবে পরবর্তীতে সমঝোতার মাধ্যমে।

এ সময় জানানো হয়, বিএসসি’র জন্য প্রতিটি এক লাখ থেকে এক লাখ ২৫ হাজার মেট্রিক টন ধারণ ক্ষমতার দু’টি মাদার ট্যাংকার নির্মাণে চীনের একটি কোম্পানির সঙ্গে গত বছরের এপ্রিলে এমওইউ স্বাক্ষর করে বিএসসি। মাদার ট্যাংকার দু’টি পাওয়া গেলে বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশনের (বিপিসি) আমদানি করা ক্রুড অয়েল (অপরিশোধিত তেল) চট্টগ্রাম বহির্নোঙ্গর পর্যন্ত পরিবহন করা যাবে।

জাহাজ দু’টি কেনা হলে বিদেশি জাহাজের ওপর নির্ভরতা হ্রাস পাওয়ার পাশাপাশি দেশে বৈদেশিক মুদ্রার সাশ্রয় হবে বলেও জানান মন্ত্রী।

এছাড়া ক্রুড অয়েলের মতো একটি সংবেদনশীল ও গুরুত্বপূর্ণ পণ্য পরিবহনে অধিকতর নিরাপত্তা নিশ্চিত, জাহাজ ভাড়ায় দীর্ঘ সময়ের জন্য স্থিতিশীলতা বজায় থাকাসহ আর্ন্তজাতিক যেকোনো প্রতিকূল পরিস্থিতিতে তেল পরিবহন নিশ্চিত করা সম্ভব হবে। পাশাপাশি মেরিন একাডেমি থেকে উত্তীর্ণ ক্যাডেটদের যথাযথ প্রশিক্ষণসহ শিপিং সেক্টরে নতুন নতুন কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি এবং ‘ব্লু-ইকোনমির’ সুফল অর্জনে দেশ একধাপ এগিয়ে যাবে।

অনুষ্ঠানে নৌ-পরিবহনমন্ত্রী শাজাহান খান জানান, বিএসসি চীন থেকে ১৬টি জাহাজ সংগ্রহের লক্ষ্যে চীনের একটি কোম্পানির সঙ্গেও গত বছরের সেপ্টেম্বরে একটি এমওইউ স্বাক্ষর করে। এগুলোর মধ্যে রয়েছে ছয়টি মাদার বাল্ক ক্যারিয়ার ও ১০টি লাইটার বাল্ক ক্যারিয়ার।

কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ প্লান্টে কয়লা পরিবহনের ক্ষেত্রে বাল্ক ক্যারিয়ার ব্যবহৃত হবে। নির্মাণ চুক্তির দু’বছরের মধ্যে এগুলো দেশে এসে পৌঁছাবে। প্রতিটি মাদার বাল্ক ক্যারিয়ার ৮০ হাজার ডেড ওয়েট টন (ডিডব্লিউটি) ও প্রতিটি লাইটার বাল্ক ক্যারিয়ার ৮ থেকে ১০ হাজার ডিডব্লিউটি সম্পন্ন হবে।

চায়না হারবার ইঞ্জিনিয়ারিং কোম্পানি লিমিটেডের (সিএইচইসি) মাধ্যমে চীনা ব্যাংক থেকে কমার্শিয়াল লোন বা অন্য কোনো ঋণ সহায়তার অধীনে ওই ১৬টি জাহাজ সংগ্রহ করবে বিএসসি।

মন্ত্রী আরও জানান, বিএসসি’র জন্য বড় ধরনের ছয়টি জাহাজ সংগ্রহের প্রক্রিয়াও চলমান রয়েছে। ছয়টি নতুন জাহাজ চীন থেকে ২০১৮ সালের মাঝামাঝি দেশে আসবে। এগুলোর মধ্যে তিনটি বাল্ক ক্যারিয়ার ও তিনটি অয়েল ট্যাংকার। প্রতিটি জাহাজের পণ্য ধারণক্ষমতা ৩৯ হাজার টন। জাহাজগুলো সংগ্রহে ব্যয় হবে প্রায় এক হাজার ৮৪৩ কোটি টাকা। এর মধ্যে চীনের এক্সিম ব্যাংক দেবে এক হাজার ৪৪৮ কোটি টাকা, বাকি ৩৯৫ কোটি টাকা দেবে বিএসসি।

অয়েল ট্যাংকার দিয়ে বিপিসি’র আমদানি করা পরিশোধিত তেল পরিবহন করা হবে। বাল্ক ক্যারিয়ারে খোলা পণ্য, সারসহ বিদ্যুৎকেন্দ্রের জন্য কয়লা পরিবহন করা হবে। ছয়টি জাহাজ যুক্ত হলে বিএসসি’র আর্থিক অবস্থা চাঙ্গা হবে, আগের মতো ঘুরে দাড়াবে।

১৯৭২ সালে যাত্রা শুরু করা বিএসসি প্রতিষ্ঠার পর থেকে এ পর্যন্ত মোট ৩৮টি জাহাজ সংগ্রহ করেছে। বর্তমান বিএসসি’র বহরে তিনটি জাহাজ রয়েছে। এর মধ্যে একটি কন্টেইনার এবং দু’টি লাইটার ট্যাংকার।

বাংলাদেশ সময়: ১৬১৭ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১৪, ২০১৭
এমআইএইচ/ওএইচ/এএসআর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।