ঢাকা, শুক্রবার, ৩ মাঘ ১৪৩১, ১৭ জানুয়ারি ২০২৫, ১৬ রজব ১৪৪৬

জাতীয়

‘ফুলের রাজ্যে ভালবাসা দিবস উদযাপন’

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭৫৫ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১৪, ২০১৭
‘ফুলের রাজ্যে ভালবাসা দিবস উদযাপন’ গদখালির হাড়‍ুয়া মোড় ফুল বাগান

গদখালি (যশোর) থেকে ফিরে : ফুলের রাজ্য যশোরের গদখালিতে ভালোবাসা দিবস উদযাপন করল হাজারো প্রেমিক যুগল।  

মঙ্গলবার (১৪ ফেব্রুয়ারি) সকাল থেকেই গদখালির হাড়‍ুয়া মোড় এলাকার প্রতিটি ফুল বাগানে তরুণ-তরুণীদের জমায়েত শুরু হয়। এ জমায়েত থাকে সন্ধ্যা পর্যন্ত।

এলাকা ঘুরে দেখা যায়,  গদখালির হাঁড়‍ুয়া মোড় ও আশপাশের এলাকায় অসংখ্য তরুণ-তরুণীর ভিড়। বাগানে গিয়ে সবাই সময় পার করছেন সেলফি তোলার কাজে। আবার দিবসটি উপলক্ষে আশপাশের এলাকার স্কুল-কলেজ পড়‍ুয়া ছাত্র-ছাত্রীরাও দল বেধে ঘুরছেন ওই বাগানে।
 
এদিকে, দূর-দূরান্তের পর্যটকদের ফুলের চাহিদা মেটাতে হাঁড়ুয়া মোড়ে পাঁচটি ফুলের দোকান করা হয়েছে। এছাড়াও স্থানীয় শিশুরা রাস্তার পাশে বসে বালতিতে করে গোলাপ ফুল বিক্রি করছেন।
গদখালির হাড়‍ুয়া মোড় ফুল বাগান

স্থানীয় ফুল বিক্রেতারা বাংলানিউজকে বলেন, এলাকার সুনামের বিষয় বিবেচনা করে পর্যটকদের ফুল বাগানে প্রবেশে বাধা দেননা চাষীরা। তবে অনুরোধ থাকে, কেউ বাগানে গিয়ে ফুল কিংবা কড়ি ছিঁড়বে না। ফলে বাইরের পর্যটকদের ফুলের চাহিদা মেটাতে চারটি খুচরা ফুলের দোকান গড়ে উঠেছে হাড়‍ুয়া মোড়ে। এসব দোকানে ভালোবাসা দিবসে ভালো বেচাকেনা হয়েছে।
 
শার্শার আরিফ  ভালোবাসা দিবস উদযাপন করতে তানিয়াকে নিয়ে বেড়াতে এসেছেন ফুলের রাজ্যে। তিনি বাংলানিউজকে বলেন, সারাদেশের মানুষ গদখালিতে উৎপাদিত ফুল দিয়েই প্রিয় মানুষকে শুভেচ্ছা জানাচ্ছে। অথচ, সেই ফুলের রাজ্যে দিবসটি ঘুরে দেখলাম। শহরের নামী-দামী পার্কের চেয়ে এটা কম কিসের বলেও প্রশ্ন রাখেন তিনি।

রাজশাহীর একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের অনার্স পড়ুয়া সাব্বির হোসেন প্রিয় মানুষটিকে নিয়ে ঘুরতে এসেছেন গদখালি এলাকায়। তিনি বাংলানিউজকে বলেন, মিডিয়ার মাধ্যমে ফুলের রাজ্য গদখালির খবর জেনেছি। তবে ব্যক্তিগত কাজে কয়েকদিন যশোর থাকার কারণে ১৪ ফেব্রুয়ারি গদখালিতে ঘুরার সুযোগ পেলাম।
গদখালির হাড়‍ুয়া মোড় ফুল বাগান

গদখালিকে অপরূপ সৌন্দর্যের আখ্যা দিয়ে তিনি বলেন, সরকারিভাবে কিছু অবকাঠামোগত কাজ করলে দেশি-বিদেশি পর্যটকরা অবশ্যই গদখালি আসবে বলে মনে করেন তিনি।

মণিরামপুর থেকে ঘুরতে আসা কবির হোসেন বাংলানিউজকে বলেন, সারাদেশের বিভিন্ন পর্যটন স্পটে ঘুরেও গদখালির মতো ভালোলাগার স্বাদ পাইনি। তিনি বলেন, এ অঞ্চলের মাঠে মাঠে লাল, নীল, বেগুনি, সাদা, আসমানী, আকাশী ফুলের অপরূপ সৌন্দর্যে হাতছানি দিচ্ছে। যা বাংলাদেশ কেন এশিয়া মহাদেশে এমনটা আছে বলে জানা নেই।
গদখালির হাড়‍ুয়া মোড় ফুল বাগান

গদখালী ফুল চাষী ও ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি আব্দুর রহিম বাংলানিউজকে বলেন, ‘আগে গদখালিতে শুধু ফুল উৎপাদন হতো, সারাদেশের মানুষ এ ফুল কিনতো। তবে সম্প্রতি বছরগুলোতে সারাদেশের বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান দেশ-বিদেশের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের পাশাপাশি সাধারণ মানুষ সৌন্দর্য উপভোগের জন্য গদখালি আসছেন। যা আমাদেরও খুব ভালো লাগে। তবে গ্রাম্য ছোট সড়ক, পর্যটকদের ঘুরার স্থান ও পিকনিক স্পটসহ বেশ কিছু অবকাঠামোগত উন্নয়নের অভাবে পর্যটকদের চাহিদা মেটানো সম্ভব হয়না। সরকার এসব বিষয় গুরুত্ব দিলে পর্যটকখাতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখবে গদখালি।

তিনি আরও জানান, সারাদেশে চাহিদার শতকরা ৭০ ভাগ ফুল গদখালি থেকে সরবরাহ করা হয়। এ বছর ভালোবাসা দিবসেও অন্তত ১৫ কোটি টাকার ফুল বেচাকেনা করেছে স্থানীয় চাষীরা।
    
বাংলাদেশ সময়: ২৩৪৩ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১৪, ২০১৭
বিএস

 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।