ঢাকা, শনিবার, ৪ মাঘ ১৪৩১, ১৮ জানুয়ারি ২০২৫, ১৭ রজব ১৪৪৬

জাতীয়

আইনের আশ্রয় নেওয়া উচিত, তবে সিদ্ধান্ত নেইনি: আবুল হাসান

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫১২ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১৮, ২০১৭
আইনের আশ্রয় নেওয়া উচিত, তবে সিদ্ধান্ত নেইনি: আবুল হাসান

ঢাকা: সাবেক পররাষ্ট্রপ্রতিমন্ত্রী আবুল হাসান চৌধুরী বলেছেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মতো তিনিও মনে করেন পদ্মাসেতু ইসুতে বিশ্বব্যাংকের বিরুদ্ধে আইনের আশ্রয় নেওয়া উচিত। তবে ‍তিনি নিজে এখনও এ বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত নেননি। 

‘পদ্মাসেতু প্রকল্পে বিশ্বব্যাংক অর্থায়ন বাতিল এবং কানাডিয়ান আদালতে মামলায় ক্ষতিগ্রস্তরা আদালতে বিশ্বব্যাংকের বিরুদ্ধে মামলা করতে পারেন’ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার এমন মন্তব্যের পর ওই মামলায় অন্যতম ক্ষতিগ্রস্ত এই সাবেক প্রতিমন্ত্রী শনিবার রাতে বাংলানিউজকে দেওয়া প্রতিক্রিয়ায় তার মতামত জানান।  

প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যকে স্বাগত জানিয়ে তিনি বলেন, ‘চাইলে সরকার নিজেও মামলা করতে পারে।

’ 

তবে তিনি এও মনে করেন, বিশ্বব্যাংক যদি এখন তার ভুল বুঝে কৃতকর্মের জন্য দুঃখ প্রকাশ করে পদ্মাসেতুর জন্য অর্থ সহায়তা দিতে আগ্রহ দেখায় তাতেও বাংলাদেশ উপকৃত হবে।  

তার মধ্য দিয়ে প্রাকারান্তরে বিশ্বব্যাংকের পক্ষ থেকে স্বীকার করে নেওয়া হবে, তারা ভুল ছিলো, তাদের অভিযোগ মিথ্যা ছিলো, মত দেন আবুল হাসান চৌধুরী।  

পদ্মাসেতু প্রকল্পের পরামর্শক নিয়োগের ব্যাপারে কানাডীয় কোম্পানি এসএনসি লাভালিনের দুই কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ঘুষ লেনদেনের অভিযোগ ওঠার পর ২৯১ কোটি ডলারের প্রকল্পে ১২০ কোটি ডলারের ঋণচুক্তি বাতিল করে বিশ্বব্যাংক। আর মামলা ঠুকে দেয় কানাডীয় একটি আদালতে।
 
বিশ্বব্যাংকের ওই মামলার পরিপ্রেক্ষিতে সে সময় বাংলাদেশের তৎকালীন যোগাযোগমন্ত্রী সৈয়দ আবুল হাসানকে পদ থেকে সরে যেতে হয়। ছুটিতে যেতে বাধ্য হন প্রধানমন্ত্রীর অর্থবিষয়ক উপদেষ্টা ড. মসিউর রহমান। সাবেক পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী আবুল হাসান চৌধুরী ও সেতু সচিব মোশাররফ হোসেনকে দুর্নীতি দমন কমিশনে হাজির হয়ে জবাবদিহি করতে হয়।  

২০১২ সালের পুরো বছরজুড়ে এমন হাজারো নাটকীয়তার জন্ম দেয় পদ্মাসেতু প্রকল্প।  

দুর্নীতির অনুসন্ধানে মোট ২৯ জনকে জিজ্ঞাসাবাদ করে দুর্নীতি দমন কমিশন।  

সকল অভিযোগই সম্প্রতি পুরোপুরি বানোয়াট ও ফালতু বলেই আখ্যা পায় কানাডীয় আদালতে।  

আবুল হাসান চৌধুরী বলেন, প্রথম দিন থেকে আমি বলে এসেছি এগুলো গুজব, বানোয়াট কথাবার্তা। এটি দিবালকের মত পরিস্কার যা দুর্নীতি দমন কমিশনের প্রতিবেদনেও রয়েছে।  

সাবেক যোগাযোগমন্ত্রী সৈয়দ আবুল হোসেনকে ‘নির্ভেজাল ভদ্রলোক’ উল্লেখ করে আবুল হাসান বলেন, তাকে জড়িয়ে এরকম কথাবার্তা দুঃখজনক।  

যেসব পত্র-পত্রিকা দিনের পর দিন অবিরাম মিথ্যা লিখে গেলো তারা আজ আর কোনও কথা বলছে না, এই মন্তব্য করে তিনি বলেন, আমি সংবাদ মাধ্যমের পূর্ণ স্বাধীনতায় বিশ্বাস করি কিন্তু তারা যদি একটু লিখতেন আমাদের কাছে মতামত জানতে চাইতেন তাহলে ভালো হতো। কিন্তু তা হচ্ছে না। এটি দুঃখজনক।  

আল্লাহ তাদের হেদায়েত করুক, মন্তব্য আবুল হাসানের। আর প্রত্যাশা ব্যক্ত করলেন, এ অভিজ্ঞতা থেকে ভবিষ্যতে তারা এরকমভাবে কাউকে আর এমন মানসিক নির্যাতন করবেন না।  

তবে এতকিছুর পরেও বিশ্বব্যাংককে সুযোগ দেওয়া উচিত বলেই মনে করেন আবুল হাসান চৌধুরী। তিনি বলেন, অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত এ ব্যাপারে উদ্যোগ নিলে ইতিবাচক ফল আসতে পারে।  

‘প্রধানমন্ত্রীকে আবারও ধন্যবাদ জানাতে চাই। তার দৃঢ়তা ও শক্ত অবস্থানের কারণেই আজ এমন বানোয়াট অভিযোগ থেকে, আর আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্র থেকে বাংলাদেশ মুক্ত হতে পেরেছে,’ বলেন আবুল হাসান।  

বাংলাদেশ সময় ২০৫৪ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১৮, ২০১৭
এমএমকে 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।