আদালতের তলবে হাজিরের পর সোমবার (২৭ ফেব্রুয়ারি) বিচারপতি কাজী রেজা-উল হক ও বিচারপতি মোহাম্মদ উল্লাহ’র হাইকোর্ট বেঞ্চ এই আদেশ দেন।
একইসঙ্গে নির্যাতনের শিকার হাফিজুর রহমান বিজয়ের পরিবারকে নিরাপত্তা নিশ্চিত করারও নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।
গত ১৪ ফেব্রুয়ারি দৈনিক জনকণ্ঠে ‘বাউফলে ওসির রুমে নির্যাতন’ শীর্ষক একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়।
প্রতিবেদনে বলা হয়, থানা হাজত থেকে এক আসামিকে ওসির রুমে নিয়ে নির্যাতন করা হয়েছে। তার নাম হাফিজুর রহমান বিজয়। বাবার নাম শামসুল হক খান। কনকদিয়া ইউনিয়নের কলতা গ্রামে তার বাড়ি।
বিজয়ের মা জোসনা বেগম অভিযোগ করেন, রোববার সন্ধ্যার দিকে এক মামলায় তার ছেলে হাফিজুর রহমান বিজয়কে বাউফল থানার এসআই ফেরদৌস গ্রেফতার করে থানায় নিয়ে আসেন এবং ওইদিন রাত ১২টার পর তাকে থানা হাজত থেকে বের করে ওসির রুমে এনে শারীরিক নির্যাতন করেন। রাত দেড়টা পর্যন্ত কয়েক দফা তার ছেলের ওপর নির্যাতন চালানো হয়। লাঠি দিয়ে তার ছেলেকে পেটানো হয়েছে।
বাউফল উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও বগা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আবদুল মোতালেব হাওলাদার জানান, গ্রেফতার বিজয় তার ছেলের বন্ধু। তিনি সোমবার বেলা দেড়টার দিকে বাউফল থানার ওসি আযম খান ফারুকীর মোবাইল ফোনে কল দিয়ে নির্যাতনের বিষয়টি জানার চেষ্টা করেন। ওসি তাকে বলেন, ঘটনার সময় তিনি থানায় ছিলেন না। পরে এসে ঘটনাটি শুনেছেন। সার্কেল এসপি নাকি তাকে মারপিট করেছেন।
এ ব্যাপারে বাউফল থানার ওসি আযম খান ফারুকীর সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, বাউফল সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার সাইফুল ইসলাম আসামিকে থানা হাজত থেকে আমার রুমে এনে জিজ্ঞাসাবাদ করেছেন, তাকে নির্যাতন করেননি। তবে এ সময় আমি থানায় ছিলাম না।
পরে এ প্রতিবেদন যুক্ত করে রিট আবেদন দায়ের করেন জোসনা বেগম।
এ রিটের শুনানি নিয়ে ২০ ফেব্রুয়ারি সার্কেল এএসপি সাইফুল ইসলাম ও ওসি আযম খান ফারুকীকে তলব করেন হাইকোর্ট। ২৭ ফেব্রুয়ারি আদালতে হাজির হয়ে এ বিষয়ে তাদের অবস্থা ব্যাখ্যা করতে নির্দেশ দেওয়া হয়।
পাশাপাশি রুলও জারি করেন।
এ আদেশ অনুসারে সোমবার হাইকোর্টে হাজির হয়ে পটুয়াখালীর সার্কেল এএসপি সাইফুল ইসলাম ও বাউফল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আজম খান ফারুকী ব্যাখ্যা দাখিল করেন।
আদালতে ওসির পক্ষে অ্যাডভোকেট ইউসুফ হোসেন হুমায়ন, এএসপির পক্ষে অ্যাডভোকেট শ ম রেজাউল করিম শুনানি করেন। সঙ্গে ছিলেন ব্যারিস্টার তাহসিনা তাসনিম মৃদু।
আবেদনের পক্ষে ছিলেন ব্যারিস্টার জ্যের্তিময় বড়ুয়া ও অ্যাডভোকেট ফারুক হোসেন।
আদালত নির্যাতনের ঘটনা তদন্ত করে ১৯ মার্চের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন দিতে পুলিশের আইজিপিকে নির্দেশ দিযেছেন। পাশাপাশি এ বিষয়ে আদেশের জন্য ১৯ মার্চ দিনও ধার্য রেখেছেন।
তবে সাইফুল ইসলাম ও আজম খান ফারুকীকে আদালতে ব্যক্তিগত হাজিরা থেকে অব্যাহতি দিয়েছেন আদালত।
বাংলাদেশ সময়: ১৫৩৬ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২৭,২০১৭
ইএস/বিএস