রোববার (০৫ মার্চ) সকালে শেরে-বাংলা নগরে মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর মিলনায়তনে সেনাবাহিনীর প্রধান জেনারেল আবু বেলাল মোহাম্মদ শফিউল হক’র কাছ থেকে এ মডেল গ্রহণ করেন মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের ট্রাস্টি সংস্কৃতি মন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূর।
মডেল হস্তান্তরের পর সেনাপ্রধান জেনারেল আবু বেলাল মোহাম্মদ শফিউল হক বলেন, বিলোনিয়া যুদ্ধের মডেল তৈরি এবং হস্তান্তরের মাধ্যমে মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের বিশাল কর্মযজ্ঞে ক্ষুদ্র পরিসরে সম্পৃক্ত হতে পেরে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী গর্ববোধ করছে।
তিনি বলেন, মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর কেবল মহান স্বাধীনতা যুদ্ধের ইতিহাস চর্চার ক্ষেত্রেই সীমাবদ্ধ থাকবে না; আমার বিশ্বাস সেনাবাহিনীসহ যে কোনো বাহিনীর প্রশিক্ষণের ক্ষেত্রে এখানকার দলিল-দস্তাবেজ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।
মডেল হস্তান্তর অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে আরও বক্তব্য রাখেন, মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের অন্যতম ট্রাস্টি সংস্কৃতি মন্ত্রী আসাদুজ্জান নূর, মফিদুল হক ও ডা. সারোয়ার আলী।
সমাপণী বক্তব্যে মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের ট্রাস্টি মফিদুল হক বলেন, আমাদের একটি চিঠির পরিপ্রেক্ষিতে সশস্ত্র বাহিনী বিভাগ দ্রুততম সময়ে বিলোনিয়া যুদ্ধের মডেল তৈরি করেছে এবং এ উদ্যোগের সঙ্গে বিলোনিয়া যুদ্ধের মুক্তিযোদ্ধারাও সম্পৃক্ত ছিলেন। তারা আমাদের জানালেন, এটি হস্তান্তরের সময় সেনা প্রধান জেনারেল আবু বেলাল মোহাম্মদ শফিউল হক উপস্থিত থাকতে চান। এ ঘটনাটি আমাদের অভিভূত করেছে।
বিলোনিয়া যুদ্ধের মডেল তৈরির সঙ্গে সম্পৃক্ত সেনাবাহিনীর কর্মকর্তাদের ধন্যবাদ জানিয়ে তিনি বলেন, ১৯৯৬ সালে সেগুনবাগিচার একটি ভাড়া বাসায় যখন মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের যাত্রা শুরু হয়, তখন সামনের পথরেখা আমাদের জানা ছিলো না; যেমন মুক্তিযুদ্ধে যখন বাঙালি ঝাঁপ দিয়েছিলো, তখন কেউ জানতো না সামনে কী ঘটবে। কিন্তু সবার অন্তরে এই আস্থাটা ছিলো যে, সত্য ও ন্যায়ের পক্ষে যে লড়াই, গোটা জাতিকে বঙ্গবন্ধু যেভাবে ঐক্যবদ্ধ করেছেন এবং সেই ঐক্য’র শক্তিতে বাঙালি সব বাধা অতিক্রম করে এগিয়ে যাবে।
মফিদুল হক বলেন, সেগুন বাগিচার সেই সীমিত পরিসরের মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর আজকে যে প্রসারতা লাভ করেছে, তার পেছনে রয়েছে সাধারণ মানুষের ভালোবাসা ও সম্পৃক্ততা। বিশেষ করে বাংলাদেশ সরকারের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের আজকের এই অবস্থানে পৌঁছানোর ক্ষেত্রে অপরিসীম ভূমিকা পালন করেছেন।
শেরে বাংলা নগরের আগারগাঁওয়ে নব নির্মিত মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরকে সমৃদ্ধ করতে গত বছর ২৫ জুলাই মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর কর্তৃপক্ষ বিলোনিয়া যুদ্ধের মডেল তৈরির জন্য সশস্ত্র বাহিনী বিভাগের বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর সহায়তা চায়। ওই চিঠির ভিত্তিতে বিলোনিয়া যুদ্ধের মডেল তৈরির কাজে হাত দেয় বাংলাদেশ সেনাবাহিনী।
এই মডেল তৈরির সময় সঠিক তথ্য সংগ্রহ করতে মুক্তিযুদ্ধ ভিত্তিক বিভিন্ন বই এবং মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের সঙ্গে সমন্বয় করে বিলোনিয়া যুদ্ধের সংক্ষিপ্ত ইতিহাস তৈরি করা হয়। বাংলাদেশ সেনাবাহিনী নিজস্ব জনবল ও সরঞ্জামাদি ব্যবহার করে গত বছর ১০ ডিসেম্বর বিলোনিয়া যুদ্ধের মডেল তৈরির কাজ সম্পন্ন করে।
বাংলাদেশ সময়: ১১৫৮ ঘণ্টা, মার্চ ০৫, ২০১৭
এজেড/এসএইচ