সংসদ ভবনের সামনে মানিক মিয়া অ্যাভিনিউয়ে পাট ও বস্ত্র মন্ত্রণালয়ের 'চিত্রাঙ্কণে ক্যানভাস' অনুষ্ঠানে পাটের ক্যানভাসে রঙ-তুলির আঁচড় দিতে দিতে কথাগুলো বলছিলেন চিত্রশিল্পী ও জনপ্রিয় অভিনেত্রী বিপাশা হায়াত।
সোনালী আঁশ পাটের সোনালী দিন ফিরিয়ে আনতে চিত্রশিল্পীদের পাটের তৈরি ক্যানভাস ব্যবহার করাতে ব্যতিক্রমী এ আয়োজন।
দেশের প্রথিতযশা চিত্রশিল্পীরা রঙ তুলি নিয়ে তিন ফুট বাই তিন ফুট ক্যানভাসে ছবি আঁকছেন অফুরান কল্পনার ঐশ্বর্যে, মনের মাধুরি মিশিয়ে। বিপাশা হায়াত বাংলানিউজকে বলেন, ‘কাগজের থেকে এর পার্থক্য হলো এটি একটু খসখসে। তবে ব্যবহারযোগ্য। একটা ন্যাচরাল জিনিসের উপর আর্ট করছি ভাবতেই ভালো লাগছে। পাটের ব্যবহারকে আবারও জনপ্রিয় করতে এ ধরনের উদ্যোগ প্রশংসনীয়। ’
একটি মেয়ে পাটগাছ বুকে চেপে গ্রামের পথ ধরে যাচ্ছে। সোনালি অতীতে ফেরার ইঙ্গিতপূর্ণ ছবি আঁকছেন চিত্রশিল্পী রনজিৎ দাস।
তিনি বলেন, ‘পাটের সুদিন ফেরানোর এমন উদ্যোগ ভালো। এসএম সুলতানই প্রথম পাটের তৈরি ক্যানভাসে ছবি এঁকেছিলেন। তবে আজকে যে ক্যানভাসে আঁকছি এটা আরো ফাইন অর্থাৎ মিহি বুননের হতে হবে। তবে পাটের একটা রঙ থাকায় আমাদের কাজটা সহজ করে দিয়েছে। ’
চিত্রশিল্পী সোহানা শাহরীন বলেন, ‘আমরা সাধারণত বাইরে থেকে আর্ট-পেপার নিয়ে এসে আর্ট করি। এতে খরচ বেশি পড়ে যায়। পাট মন্ত্রণালয় যদি আমাদের জন্য আর্ট করার উপযোগী পেপার তৈরি করে তাহলে ভালো হয়। ’
দেশের খ্যাতনামা শিল্পীদের সঙ্গে যোগ দিয়েছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থীরাও। তারাও পাটের ক্যানভাসে রঙ-তুলির আঁচড়ে ফুটিয়ে তুলছেন প্রকৃতি ও মানুষের অববয়।
খাদিজাতুন নোমানি নামের এক শিক্ষার্থী বলেন, ‘নতুনত্ব ও ভিন্নতা থাকায় মজা লাগছে। পাটের সুদিন ফেরানোর এই উদ্যোগে অংশ নিতে পেরে আমি আনন্দিত। ’
এদিকে, পাটের ব্যবহারকে উৎসাহিত করতে ২০০ ফুট ক্যানভাসে ছবি আঁকার উদ্যোগ নিয়েছে পাট মন্ত্রণালয়। সংসদ ভবনের সামনে পাটের ক্যানভাস মাটিতে বিছিয়ে তাতে রঙ-তুলির আঁচড় খ্যাতিমান চিত্রশিল্পী ও চারুকলার শিক্ষার্থীরা।
এতে কেউ বাংলাদেশের মানচিত্র, নারী নির্যাতনের চিত্র, পাটখেত, কৃষাণ-কৃষাণীর ছবি ফুটয়ে তুলছেন। রেকর্ড করে গিনেস বুক অব রেকর্ড-এ নাম ওঠানোর উদ্দেশ্য নিয়েই ২০০ ফুট ক্যানভাসে ছবি আঁকার পরিকল্পনা করা হয়েছে বলে জানান আয়োজকরা।
বাংলাদেশ সময়: ২০০৪ ঘণ্টা, মার্চ ০৫, ২০১৭
এমসি/জেএম