তিনি বলেছেন, সেনা প্রস্তুত থাকবে, পরিস্থিতি সৃষ্টি হলে তাৎক্ষণিকভাবে মোতায়েন করা হবে। তবে ভোটকেন্দ্রে মোতায়েনের কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি।
বৃহস্পতিবার (০৯ মার্চ) রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন কমিশন (ইসি) কার্যালয়ে কুমিল্লা সিটি করপোরেশন, গাইবান্ধা-১ ও সুনামগঞ্জ-২ শূন্য আসনের উপ-নির্বাচন নিয়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে বৈঠক শেষে সিইসি সাংবাদিকদের এ কথা জানিয়েছেন।
ইসির সম্মেলন কক্ষে কে এম নুরুল হুদার সভাপতিত্বে বৈঠকটি অনুষ্ঠিত হয়।
সিইসি বলেন, সম্প্রতি কুমিল্লায় জঙ্গি গ্রেফতার হয়েছে। তবে এ কার্যক্রমে জড়িত ছাড়া অন্য কোনো সাধারণ মানুষকে যেন হয়রানি না করা হয়। এছাড়া গাইবান্ধা-১ উপ-নির্বাচনেও বিশেষ সতর্কতা অবলম্বনের জন্য আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
তিনি বলেন, নির্বাচনের সময় ইসির অধীনেই সব বাহিনী থাকে। তাই সব বাহিনী সহযোগিতা করবে বলেই আলোচনা হয়েছে। বৈঠকে জঙ্গি তৎপরতা নিয়েও আলোচনা হয়েছে। আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী সুন্দরগঞ্জ নিয়ে বেশি তৎপর থাকবে। সেখানে ভোটকেন্দ্রগুলো বিচ্ছিন্ন এলাকায়। অনেক সময় ভোট বিনষ্ট করার পাঁয়তারা হয়। যারা এমন করে তাদের মোকাবেলা করার ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
কেএম নুরুল হুদা বলেন, নির্বাচন প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ হলে নির্বাচন সুষ্ঠু হয়। কেননা, তখন প্রার্থীরা নিজেরাই সজাগ থাকে। এজন্য নির্বাচনে কারো প্রভাব বিস্তারেও সুযোগ থাকে না।
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে সিইসি বলেন, আজকের বৈঠকে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী থেকে আমাদের সম্পূর্ণ সহযোগিতা করবে বলে জানিয়েছেন। তারা আরো বলেছেন, এ নির্বাচনের মধ্য দিয়ে আস্থার ক্ষেত্র তৈরি হবে।
তিনি বলেন, যদি কারো নামে আগে থেকে কোনো মামলা না থাকে, তাহলে নতুন করে কাউকে হয়রানি করা হবে না। তবে কারো বিরুদ্ধে যদি মামলা থাকে, সে বিষয়ে আমাদের কিছু করার থাকবে না।
সিইসি বলেন, আমাদের দেশে একসঙ্গে তিনশ’ আসনের নির্বাচনও সুষ্ঠু হওয়ার নজির রয়েছে। তাই মাত্র দুই তিনটি নির্বাচন নিয়ে আশংকার কিছু নেই। ভোটাররা যাতে নির্বঘ্নে ভোটকেন্দ্রে গিয়ে ভোট দিতে পারে, ভোট দিয়ে নিরাপদে বাড়ি যেতে পারে এবং বাড়িতে গিয়ে নিরাপদে থাকতে পারেন সে বিষয়টির ওপর জোর দেওয়া হবে।
বৈঠকে চার নির্বাচন কমিশনার, ইসি সচিব, সশস্ত্র বাহিনীর বিভাগের প্রিন্সিপাল স্টাফ অফিসারের প্রতিনিধি, বাংলাদেশ মহাপুলিশ পরিদর্শক, স্থানীয় সরকার বিভাগ, স্থানীয় সরকার, পল্লি উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়/জননিরাপত্তা বিভাগ, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ/ৠাব/কোস্ট গার্ড/আনসার ও ভিডিপি/ডিজিএফআই/এনএসআই ও পুলিশের স্পেশাল ব্রাঞ্চের (এসবি) প্রতিনিধিসহ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
তফসিল অনুযায়ী, গাইবান্ধা-১ আসনে ২২ মার্চ এবং ৩০ মার্চ সুনামগঞ্জ-২ শূন্য আসন ও কুমিল্লা সিটিতে ভোটগ্রহণ হবে।
নির্বাচনী মাঠে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী
বৈঠকে গাইবান্ধা-১ আসনের উপ-নির্বাচনে সাধারণ ভোটকেন্দ্রে বিভিন্ন বাহিনীর ২২ সদস্য আর ঝুঁকিপূর্ণ কেন্দ্রে ২৪ সদস্য করে নিয়োজিত থাকবে। এছাড়া পুলিশ, এপিবিএন ও ব্যাটালিয়ন আনসারের সমন্বয়ে ৫০টি টিম মোবাইল ফোর্স হিসেবে, স্ট্রাইকিং ফোর্স থাকবে ১৭টি। এছাড়া র্যাবের ১৭টি টিম কাজ কররে। আর বর্ডার গার্ড অব বাংলাদেশ নিয়োজিত থাকবে ৫ প্লাটুন।
সুনামগঞ্জ-২ আসনের উপ-নির্বাচনের সাধারণ ভোটকেন্দ্রে বিভিন্ন বাহিনীর ২২ সদস্য এবং ঝুঁকিপূর্ণ ভোটকেন্দ্রে ২৪ সদস্য নিয়োজিত থাকবে। আর পুলিশ, এপিবিএন ও ব্যাটালিয়ন আনসারের সমন্বয়ে মোবাইল টিম ৪৪টি, স্ট্রাইকিং টিম ১৫টি, র্যাবের ১৫টি টিম ও ৪ প্লাটুন বিজিবি নিয়োজিত থাকবে।
এদিকে কুমিল্লা সিটি করপোরেশন নির্বাচনের ভোটকেন্দ্রেও উপ-নির্বাচন দু’টির মতো ফোর্স মোতায়েন করা হবে। আর পুলিশ, এপিবিএন ও ব্যাটালিয়ন আনসারের সমন্বয়ে মোবাইল টিম ২৭টি, স্ট্রাইকিং ৯টি নিয়োজিত থাকবে। এছাড়া র্যাবের ২৭টি টিম ও ১৭ প্লাটুন বিজিবিও নির্বাচনী দায়িত্ব পালন করবে।
২০১২ সালের ৫ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত সর্বশেষ কুমিল্লা সিটি নির্বাচনে সম্পূর্ণ ভোটগ্রহণ ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনে সম্পন্ন হয়েছিল। এবার ইভিএম ব্যবহার করছে না নির্বাচন কমিশন।
বাংলাদেশ সময়: ১৩২৬ ঘণ্টা, মার্চ ০৯, ২০১৭/আপডেট: ১৬০৭ ঘণ্টা
ইইউডি/আইএ/জেডএস