বৃহস্পতিবার (০৯ মার্চ) পুলিশ সদর দফতরে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ কথা জানান পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) এ কে এম শহীদুল হক।
তিনি জানান, রাজধানীর সোনারগাঁও হোটেলে ‘চিফ অব পুলিশ কনফারেন্স অব সাউথ এশিয়া অ্যান্ড নেইবারিং কান্ট্রিস অন রিজিওনাল কো-অপারেশন ইন কার্ভিং ভায়োলেন্ট এক্সট্রিমিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম’ শীর্ষক এ কনফারেন্স ১২ মার্চ শুরু হয়ে চলবে ১৪ মার্চ পর্যন্ত।
কনফারেন্সে ১৪ দেশের প্রতিনিধি ছাড়াও ইন্টারপোল, ফেসবুক, যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থার (এফবিআই) প্রতিনিধিরা উপস্থিত থাকবেন।
তিনি বলেন, কনফারেন্সে বিভিন্ন দেশের পুলিশ প্রধান ও প্রতিনিধিদের সঙ্গে জঙ্গিবাদ দমন, মানবপাচার, অর্থনৈতিক অপরাধ, সন্ত্রাসী অর্থায়ন, মাদকদ্রব্য পাচার রোধ, অবৈধ অস্ত্র চোরাচালান প্রতিরোধ, গোয়েন্দা তথ্য আদান-প্রদান, সাইবার অপরাধ নিয়ন্ত্রণের বিষয়ে আলোচনা হবে।
সম্মেলন শেষে জঙ্গিবাদ ও সন্ত্রাস দমনসহ আন্তঃদেশীয় অপরাধ প্রতিরোধের কর্মপন্থা নির্ধারণ করে ‘যৌথ ঘোষণা’ স্বাক্ষর করা হবে বলেও জানান তিনি।
আইজিপি বলেন, কোনো একক দেশের পক্ষে জঙ্গিবাদ ও সন্ত্রাস দমন করা সম্ভব নয়। জঙ্গি-সন্ত্রাস দমনে প্রয়োজন আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ের সমন্বয়ে একটি কার্যকর কর্মপন্থা কর্মপরিকল্পনা প্রণয়ন এখন সবচেয়ে জরুরি। বাংলাদেশ পুলিশের উদ্যোগে বাংলাদেশে প্রথমবারের মতো এ ধরনের সম্মেলন অনুষ্ঠিত হচ্ছে।
কনফারেন্সে অংশগ্রহণকারী দেশগুলো হচ্ছে- আফগানিস্তান, অষ্ট্রেলিয়া, ভুটান, ব্রুনাই, চীন, ভারত, ইন্দোনেশিয়া, মালদ্বীপ, মালোয়শিয়া, মায়ানমার, নেপাল, দক্ষিণ কোরিয়া, শ্রীলঙ্কা ও ভিয়েতনাম।
এছাড়া, ইন্টারপোল, ফেসবুক, যুক্তরাষ্ট্রের আইজিসিআই, এফবিআই, আসিয়ানপোল ইত্যাদি সংস্থার ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাসহ মোট ৫৮ জন বিদেশি কনফারেন্সে উপস্থিত থাকবেন।
সম্মেলন চলাকালে বাংলাদেশের আইজিপি ইন্টারপোল মহাসচিবসহ বিভিন্ন দেশের পুলিশ প্রধানদের সঙ্গে পৃথক বৈঠকে বসবেন। বৈঠকে তাদের আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতিসহ পারস্পরিক স্বার্থ সংশ্লিষ্ট বিষয় নিয়ে আলোচনা করা হবে বলেও জানান তিনি।
কনফারেন্সে সাউথ এশিয়ার বিভিন্ন দেশের পুলিশ প্রধানরা অংশগ্রহণ করলেও পাকিস্তান নেই কেন? এমন প্রশ্নের জবাবে পুলিশ প্রধান বলেন, আমরা তাদের চিঠি দিয়েছি। তবে পাকিস্তানের কাছ থেকে কোনো সাড়া পাওয়া যায়নি।
কনফারেন্সে অংশগ্রহণকারী দেশগুলোর সঙ্গে বন্দী বিনিময় চুক্তি করা হবে কিনা সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে আইজিপি বলেন, কনফারেন্সে আগত কয়েকটি দেশের সঙ্গে আমাদের দ্বিপাক্ষিক বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে। সেখানে বন্দী বিনিময় চুক্তির বিষয়ে আলোচনা করা হবে। এছাড়াও বন্দী ফেরত পাঠাতে সমঝোতার বিষয়টি উঠে আসবে। তাদের সঙ্গে বিভিন্ন বিষয়ে এমওইউ (চুক্তি) স্বাক্ষর করা হবে।
জঙ্গি নিয়ন্ত্রণে পুলিশের ভূমিকা থাকলেও কারাগার থেকে জঙ্গিরা
বাইরে যোগাযোগ করছে, নানা ধরনের নির্দেশনা দিচ্ছে- সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে আইজিপি বলেন, জঙ্গিদের বাইরে যোগাযোগের বিষয়ে কারাগারের কিছুটা যোগসাজোশ থাকতে পারে। পুলিশ এতে কিছু করতে পারে না। তবে সরকার ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রণালয় এবিষয়ে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।
বাংলাদেশ সময়: ১৭৪৪ ঘণ্টা, মার্চ ০৯, ২০১৭
পিএম/এসএইচ